শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০২:৪৬ অপরাহ্ন

টেকনাফ-শাহপরীরদ্বীপ সড়ক : ব্যয় ৫৪ কোটি ৮৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা

টেকনাফ-শাহপরীরদ্বীপ সড়ক : ব্যয় ৫৪ কোটি ৮৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা

অনলাইন বিজ্ঞাপন

কক্সবাজার.

শুরু হয়েছে মুজিববর্ষ-২০২০। বর্ষের প্রথমদিনে টেকনাফ-শাহপরীরদ্বীপের ৪০ হাজার মানুষের ভোগান্তি নিরসনে হাত দিয়েছে কক্সবাজার সড়ক ও জনপদ (সওজ) বিভাগ। ২০১১ সাল হতে বিচ্ছিন্ন থাকা কক্সবাজারের টেকনাফের সাবরাং হারিয়াখালী-শাহপরীরদ্বীপ সড়কের সংস্কার কাজ আরম্ভের মধ্যদিয়ে মুজিববর্ষ শুরু করেছে সওজ। ৫৪ কোটি ৮৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ে মুজিববর্ষে-ই সড়কটি পূন:নির্মাণ করে জনগণের জন্য উন্মোক্ত করার প্রত্যয়ে বুধবার (১ জানুয়ারি) চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে কার্যাদেশ হস্তান্তর করা হয়েছে।

সওজ কক্সবাজার কার্যালয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী পিন্টু চাকমার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে কক্সবাজার প্রেসক্লাব সভাপতি মাহবুবুর রহমান, কক্সবাজার ইঞ্জিনিয়ার ইনস্টিটিউট সভাপতি ও কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কউক) সদস্য প্রকৌশলী বদিউল আলম, কার্যাদেশ প্রাপ্ত আল-আমিন কনস্ট্রাকশন ও এম.এ.এইচ কনস্ট্রাকশনের স্বত্বাধিকারিরা উপস্থিত ছিলেন।

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে নির্বাহী প্রকৌশলী পিন্টু চাকমা জানান, টেকনাফ-শাহপরীরদ্বীপ সড়কের দৈর্ঘ্য প্রায় ১৪ কিলোমিটার। এরমাঝে সাবরাং হারিয়াখালী-শাহপরীরদ্বীপ উত্তরপাড়া পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার সড়ক ২০১১ সালের শেষের দিকে জোয়ারের তোড়ে বিভিন্ন স্থানে ক্ষতবিক্ষত হয়। কাপেটিং উঠে গিয়ে অস্তিত্বহীন হয়ে যাওয়া সড়কের কারণে সরাসরি যোগাযোগ বন্ধ হয়ে পড়ে। ২০১৮ সালে সড়কটি সংস্কারের জন্য জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)’র সভায় ৬৭ কোটি ৭৮ লাখ টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদন হয়। পরবর্তীতে ৫৪ কোটি ৮৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা প্রকল্প ব্যয় ধরে চুড়ান্ত অনুমোদন এসেছে। এরই অনুকূলে মুজিববর্ষের যাত্রায় দ্বীপবাসীর ভোগান্তি রোধে সড়ক নির্মাণ কাজও শুরু হয়েছে বুধবার (১ জানুয়ারি ২০২০)।

তিনি আরো বলেন, টেকনাফ-শাহপরীরদ্বীপ সড়কটি পর্যটন ও সীমান্ত বাণিজ্য বিকাশের সাথে জড়িত। সড়কটি মেরামত সম্পন্ন হলে স্থলপথ থেকে প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিন পৌছাতে সময় লাগবে মাত্র আধাঘন্টা। সড়ক চালু হয়ে গেলে শাহপরীদ্বীপ জেটি হতেই পর্যটনবাহী জাহাজগুলো ছাড়া হবে। এ জেটি দিয়েই সহজে পৌছাবে মিয়ানমার থেকে আমদানি-রপ্তানি পণ্য। কিন্তু সড়কটির স্থায়িত্ব উজানে অবস্থিত পাউবোর বেড়িবাঁধের উপর নির্ভরশীল। নানা দূর্যোগে বিলীন হওয়া বেড়িবাঁধ সংস্কার কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে।

প্রকৌশলী পিন্টু চাকমার মতে, কক্সবাজারের উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সড়ক এবং সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের বাড়তি দূর্বলতা রয়েছে। এরই ফল শাহপরীরদ্বীপ সড়ক নির্মাণ কাজ। এ প্রকল্পে সড়কে বিদ্যমান পেভমেন্ট প্রশস্থ করণের আওতায় আসবে ২ দশমিক ৮১ কিলোমিটার। আর ২ দশমিক ৩৪ কিলোমিটারে নতুন পেভমেন্ট নির্মাণ করা হবে। ৫ দশমিক ১৫ কিলোমিটার সড়কে সাফেসিং ডিবিএস ওয়েরিংকোর্সের পাশাপাশি নির্মাণাধীন সড়কে ১২টি আরসিসি বক্স কালভার্ট, একটি পিসি গার্ডার সেতু, ২ হাজার ৪৫০ মিটার ‘ইউ’ ড্রেইন, ৫ হাজার ৪০০ মিটার টো-ওয়াল, ২০ হাজার বর্গমিটার আরসিসি ব্লক ও জিওটেক্সটাইল এবং সীমান্তে ৩ হাজার বর্গফুটের একটি পরিদর্শন বাংলো করা হবে।

সাবরাং ইউপির চেয়ারম্যান নুর হোসেন বলেন, শাহপরীরদ্বীপে ৪০হাজার মানুষের বাস। র্দীঘ ৮বছর ধরে বর্ষা মৌসুমে নৌকায় কোনো রকমে পাঁচ কিলোমিটার পার হয়ে মূল অংশে উঠতে হয়েছে। কিন্তু শুকনো মৌসুমে সেই সুযোগও থাকত না। দীর্ঘ ভোগান্তির এ সময়ে নৌকা ডুবির ঘটনায় এ অংশে ১৩ শিশু মারা গেছে। এখন কাজ শুরু হয়েছে জেনে সবার মাঝে স্বস্তির নি:শ্বাস পড়ছে।

শাহপরীরদ্বীপ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও স্থানীয় বাসিন্দা সোনা আলী বলেন, ভাঙ্গা এ সড়কে দ্বীপের মানুষ ৮বছর কষ্ট পেয়েছে। অবশেষে সড়কটি নির্মাণ শুরু হওয়ায় দ্বীপবাসী খুবই আনন্দিত।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এম.এ.এইচ কনস্ট্রাকশনের স্বত্বাধিকারী মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, টেকনাফ-শাহপরীরদ্বীপ সড়কের ৫ কিলোমিটার ভাঙ্গা অংশ সংস্কার দাবিতে মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচী পালন করেছে ভূক্তভোগী শিক্ষার্থীসহ দ্বীপবাসী। এটা গণমাধ্যমে আমরা দেখেছি। তাই সবদিক বিবেচনা করে অর্ধলাখ মানুষের ভোগান্তির কথা মাথায় রেখে সড়কটির নির্মাণ দ্রুত শেষ করার প্রচেষ্টা থাকবে। সবার সহযোগিতা পেলে এটা সম্ভব।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

নিবন্ধনের জন্য আবেদিত
Desing & Developed BY MONTAKIM