বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৩৩ পূর্বাহ্ন

রামুতে বাবা-ছেলেকে গুলি ও কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ

রামুতে বাবা-ছেলেকে গুলি ও কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ

অনলাইন বিজ্ঞাপন

ছবি- নিহত জাফর আলম ও তার ছেলে মোহাম্মদ সেলিম।

বিশেষ প্রতিবেদক:

কক্সবাজারের রামুর গর্জনিয়াতে সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের গুলি ও এলোপাতাড়ি দায়ের কোপে বাবা-ছেলে নিহত হয়েছেন। সোমবার (২২ এপ্রিল) ভোরে রামুর গর্জনিয়া ইউনিয়নের থোয়াইংগাকাটা এলাকার ঘোনারপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। সোমবার মাগরিব নামাজের পর জানাজা শেষে তাদের দাফন করা হয়েছে।

নিহতরা হলেন, গর্জনিয়া ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের থোয়াইংগাকাটা এলাকার মৃত নুরুল ইসলামের ছেলে জাফর আলম (৫৫) ও তার ছেলে মোহাম্মদ সেলিম (৩৩)।

স্থানীয় সূত্র জানায়, গত কয়েক বছর ধরে মিয়ানমার থেকে চোরাই পথে গরু পাচার হয়ে আসছে। অধিকাংশ গরু আসে পার্বত্য বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত হয়ে। পরে তা রামুর গর্জনিয়া, কচ্ছপিয়া, ঈদগড় হয়ে জেলার ঈদগাঁওসহ বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ হয়। এসব অবৈধ বার্মিজ গরু পাচারকে কেন্দ্র করে কয়েক গ্রুপ এসব এলাকায় মুখোমুখি হয়। এমনই কোনো ঘটনায় বাবা-ছেলে খুন হয়ে থাকতে পারেন।

প্রচার পাচ্ছে, কচ্ছপিয়ার জেল ফেরত রাসেল, গর্জনিয়ার থিমছড়ির রোহিঙ্গা আবছার ও মাঝিরকাটার রহিমরা ৮-১০ জনের একটি গ্রুপ করে এলাকার যেকোন কিছু নিয়ন্ত্রণ করতে চান। চোরাই এসব গরু শীর্ষ ডাকাত ডজন মামলার পালাতক আসামী শাহীন নামে আরেক সন্ত্রাসী গ্রুপ মিয়ানমার থেকে গ্রহণ করে পাহাড়ি লাইন পার করিয়ে সমতলে পৌঁছে দেন। এতে লেবার হিসেবে ব্যবহার হন নিহত জাফর-সেলিমদের মতো অসংখ্য শ্রমজীবি। প্রতি গরু হতে নির্দিষ্ট পরিমাণ চাঁদা না পেলে এসব এলাকা দিয়ে গরু না নিতে হুশিয়ারি দিয়েছিল রাসেল-আবছার-রহিমরা। কিন্তু তাদের কথা কর্ণপাত করেনি আরেক সন্ত্রাসী শাহীন গ্রুপ। ফলে, নিজেদের আধিপত্য বিস্তার করতেই রাসেলরা রাতে এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়েছে। পাশাপাশি সামনে যাকে পেয়েছে কুপিয়েছে। এতেই মারা গেছেন বাবা-ছেলে।

ঘটনার পরপরই গর্জনিয়া ফাঁড়ি পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থল গিয়ে মরদেহ দুটি উদ্ধার করে প্রথমে নাইক্ষ্যংছড়ি হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখান থেকে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে বিকেলে এলাকায় নেয়া হয় নিহত বাবা-ছেলের মরদেহ। মাগরিব নামাজের পর স্থানীয় মসজিদ মাঠে তাদের জানাজা সম্পন্ন হয়। জাতীয় সংসদের হুইপ সাইমুম সরোয়ার কমল এমপিসহ রাজনৈতিক ও পেশাজীবিরা জানাযায় অংশ নেন।

রামু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু তাহের দেওয়ান ঘটনার সততা নিশ্চিত করে বলেন, কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে, এখনো নিশ্চিত নয়। লিখিত অভিযোগও পাওয়া যায়নি। তবুও, জড়িতদের সনাক্ত ও গ্রেফতারে অভিযান চলমান রয়েছে।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি গরু পাচার নিয়ে গর্জনিয়া ও কচ্ছপিয়ায় আরও দুটি হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়। তবে গত রাতের বাবা-ছেলের জোড়া খুনের ঘটনায় পুরো এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

নিবন্ধনের জন্য আবেদিত
Desing & Developed BY MONTAKIM