
কক্সবাজারের উখিয়ায় কোরবান উপলক্ষ্যে পশুর হাট গুলো জমজমাট হয়ে উঠেছে। স্থানীয় লোকজন সাধ্যমত গবাদি পশু কেনার জন্য হাটগুলোতে হুমড়ি খেয়ে পড়ছে। ক্রেতা বিক্রেতাদের পদচারণায় পশুর হাট গুলো লোকে লোকারণ্য হয়ে উঠেছে। শেষ মূহুর্তে কোরবানী দিতে ইচ্ছুক নিু-মধ্যবিত্ত লোকজন মাজারি ও ছোট সাইজের গরু অধিক হারে কিনতে দেখা গেছে।
গতকাল উখিয়া সদর পশুর হাটে সরজমিনে গিয়ে বিপুল পরিমানের গবাদি পশুর মজুদ দেখা গেছে। গরু,মহিষ, ছাগল, বিক্রেতাদের প্রতিকূলে কয়েকগুণ বেশি ক্রেতা ও উৎসুক লোকজনের ভিড়ে পশুর হাট উৎসবে রূপ নিয়েছে। উখিয়া সদর, মরিচ্যা, রুমখা হচ্ছে উখিয়ার নিয়মিত গবাদি পশুর হাট। কোরবান উপলক্ষ্যে এসব হাটের পাশাপাশি কুতুপালং, কাস্টমস-বেতবুনিয়া, পালংখালী, সোনাপাড়া সহ আরো একাধিক স্থানে মৌসুমী পশুর হাট বসেছে। এসব পশুর হাটে গত এক সপ্তাহ ধরে নিয়মিত গবাদি পশু বেচা কেনা হচ্ছে। পশুর হাট ও ক্রেতা বিক্রেতাদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তার জন্য প্রশাসনের ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। পুলিশ, আনসার সদস্যদের পাশাপাশি স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম পুলিশ ও ইজারাদারদের নিয়োজিত নিরাপত্তা রক্ষীরা সর্বক্ষনিক হাটের নিরাপত্তায় নিয়োজিত রয়েছে।
পশুর হাট গুলোতে ভেজাল টাকা সনাক্ত করনের জন্য সোনালী ব্যাংক, রুপালি ব্যাংক সহ একাধিক ব্যাংকের লোকজন অস্থায়ী ক্যাম্প বসিয়েছে। টাকা লেনদেনের সুবিধার্থে বিকাশের এজেন্ট গুলো নিজস্ব উদ্যেগে টাকা লেনদেনের এজেন্ট বসিয়েছে। উখিয়ার পশুর হাট গুলো ঘুরে দেখা গেছে স্থানীয় কৃষক গৃহস্থদের পালিত গবাদি পশু হাট গুলোতে উপচে পড়ার অবস্থা হয়েছে। স্থানীয় গরু, মহিষ ও ছাগলের পাশাপাশি মিয়ানমার থেকে আমদানি করা গবাদি পশুর সরবরাহ ও প্রচুর পরিমাণের লক্ষ করা গেছে। এসব পশুর হাটে অধিকাংশ ক্রেতারা স্থানীয় ভাবে গৃহস্থদের আনা গবাদি পশু কিনতে অধিক আগ্রহি। গত সপ্তাহের চেয়ে চলতি সপ্তাহে গবাদি পশু অধিক সরবরাহ থাকায় দামও অনেকটা নাগালের মধ্যে চলে এসেছে।
স্থানীয় গরু বেপারি ফরিদ সওদাগর, মুসলিম উদ্দিন, জাফর সওদাগর সহ অনেকে বলেন, এতদিন স্থানীয় গৃহস্থ ও কৃষকরা তাদের গবাদি পশু দাম হাঁকিয়ে অপেক্ষা করছিল যাতে তাদের গবাদি পশুর ভাল মূল্য পায়। কিন্তু হাট গুলোতে চাহিদার তুলনায় অধিক সংখ্যক গবাদি পশুর সরবরাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় গৃহস্থ কৃষকরা দাম ছাড়তে শুরু করেছে। স্থানীয় নিু ও মধ্যবিত্ত পরিবারের লোকজন কয়েকজন মিলে ভাগে কোরবান দেওয়ার জন্য ছোট ও মাজারি ধরনের গরু অধিকহারে কিনছে। এসব গরু তুলনামূলক ভাবে ৩০ থেকে ৪৫ হাজার টাকার মধ্যে ক্রয় বিক্রয় হচ্ছে। এ সাইজের গরু স্বভাতই বেশি বেচা কিনা হচ্ছে। তবে আরো ভাল দামের মোটামুটি চুখে লাগার মত গরু ও মহিষ ৭০-৮০ হাজার টাকার মধ্যে বেচা কিনা হচ্ছে।
আবার গ্রামাঞ্চলের অনেক কোরবানী ইচ্ছুক লোকজন পাড়া মহল্লা থেকে নিজেরা দেখে শুনে দরদাম করে গরু কিনতে দেখা গেছে। ইজারাদাররা বলেছে গত সপ্তাহের চেয়ে চলতি সপ্তাহে গবাদি পশুর বেচা কেনা তুলনামূলক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। দামও মোটামুটি সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে। তবে শেষ মহুর্থে গবাদি পশুর দাম কিছুটা বাড়তে পারে বলে তাদের ধারনা। উখিয়া থানার ওসি জহিরুল ইসলাম খান বলেছেন, কোরবানী পশুর হাটগুলোতে যাতে কোন ধরনের অনাকাংখিত কোন ধরনের বিশৃঙ্খল ঘটনা না ঘটে সে দিখে কঠোর নজরদারি ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর টহল বৃদ্ধি করা হয়েছে। কোরবানী পশুর হাট গুলোতে কোন ধরনের অনৈতিক প্রভাব কাউকে বিস্তার করতে দেওয়া হবে না।
মন্তব্য করুন