বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৫, ০২:৫০ অপরাহ্ন
আলোকিত কক্সবাজার ডেক্স॥
বাঘ পাচারের গোপন তথ্য উদঘাটন করলেই ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার দেবে সরকার। এছাড়া কুমির ও হাতির জন্য দেওয়া হবে ৩০ হাজার টাকা। অন্য প্রাণীর ক্ষেত্রে বিভিন্ন হারে এ অর্থপুরস্কার দেওয়া হবে। তথ্য প্রদানকারীর দেওয়া তথ্যে অপরাধ প্রতিরোধ সম্ভব হলে দেওয়া হবে সম্মানসূচক পদকও।
আর অপরাধীর তথ্য দিলে গোপন রাখা হবে তথ্য প্রদানকারীর নাম-ঠিকানা। এমন ব্যবস্থা রেখে বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয় ‘বন্যপ্রাণি সংক্রান্ত অপরাধ উদঘাটনে তথ্য প্রদানকারীকে পুরস্কার প্রদান বিধিমালা-২০১৫’ এর খসড়া প্রস্তুত করেছে। বিধিমালাটি মন্ত্রিসভায় অনুমোদন হলে বিষয়টি কার্যকর হবে।
খসড়া বিধিমালায় বলা হয়, পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং উন্নয়নের স্বার্থে বন্যপ্রাণি (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন- ২০১২ প্রণয়ন করা হয়েছে। তাই বন্যপ্রাণি সংক্রান্ত অপরাধ উদঘাটনে গণসচেতনতা বাড়ানো প্রয়োজন। এ কারণে জনসধারণকে বন্যপ্রাণি সংরক্ষণ ও রক্ষার জন্য উৎসাহিত করতে বিধিমালা করা হচ্ছে।
বন্যপ্রাণি (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন-২০১২ এর ৫২ ধারার ক্ষমতাবলে বিধিমালাটি করছে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়।
বাঘ অপরাধ তথ্যে ৫০ হাজার টাকা
আসামি ও বাঘসহ বনাঞ্চলের অভ্যন্তরের তথ্যের জন্য আর্থিক পুরস্কার দেওয়া হবে ৫০ হাজার টাকা। আর আসামি ও বাঘসহ বনাঞ্চলের বাইরের তথ্যের জন্য দেওয়া হবে ২৫ হাজার। এছাড়া আসামিবিহীন অপরাধ উদঘাটনের তথ্যের জন্য দেওয়া হবে ১০ হাজার টাকা।
কুমির-হাতি ৩০ হাজার
একইভাবে আসামি ও কুমির বা হাতিসহ বনাঞ্চলের অভ্যন্তরের তথ্যের জন্য ৩০ হাজার, বাইরের তথ্যের জন্য ১৫ হাজার ও আসামিবিহীন অপরাধ উদঘাটনের তথ্য দিলে ১০ হাজার টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে।
একইভাবে হরিণের জন্য পর্যায়ক্রমে ২০ হাজার, ১৫ হাজার এবং ৫ হাজার টাকা দেওয়া হবে। কচ্ছপ ও সাপের জন্য ১৫ হাজার, ১০ হাজার ও ৫ হাজার টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে।
পাখি ও অন্য বন্যপ্রাণির ক্ষেত্রে প্রাণী ও আসামিসহ বনের অভ্যন্তরীণ তথ্যের জন্য ১০ হাজার, বাইরের তথ্যের জন্য ৮ হাজার ও আসামিবিহীন অপরাধ উদঘাটনের তথ্যের জন্য ৪ হাজার টাকা দেওয়া হবে।
তথ্য প্রদানকারীর নাম গোপন রাখা হবে
খসড়া বিধিমালায় বলা হয়, তথ্য অনুসন্ধান চলাকালে তদন্ত কর্মকর্তা সব বিষয়ের গোপনীয়তা বজায় রাখবে। বাইরে প্রকাশ করবে না, যাতে তথ্য প্রদানকারীকে কোনো হুমকির সম্মুখীন হতে না হয়।
পুরস্কার প্রদানে কমিটি
তথ্য প্রদানকারীকে পুরস্কার দেওয়ার জন্য সাত সদস্যের একটি কমিটি থাকবে। প্রধান বন সংরক্ষক এর সভাপতি হবেন। সদস্যসচিব থাকবেন পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব পর্যায়ের একজন কর্মকর্তা।
অন্য সদস্যদের মধ্যে মন্ত্রণালয়ের একজন প্রতিনিধি ও বন অধিদপ্তরের চারজন কর্মকর্তা থাকবেন।
অপরাধ প্রতিরোধে পদক
কোনো তথ্য প্রদানকারীর পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে কোনো বন্যপ্রাণি সংক্রান্ত অপরাধ প্রতিরোধ করা সম্ভব হলে ওই তথ্য প্রদানকারীকে পদকের জন্য বিবেচনা করা যাবে। অপরাধ সংগঠিত হওয়ার পরেও আলামতসহ অপরাধ উদঘাটন বা অপরাধ শনাক্ত সম্ভব হলে সেক্ষেত্রে তথ্য প্রদানকারীকে পদকের জন্য বিবেচনায় আনা যাবে।
অপরাধ সংঘটনকারীকে শনাক্ত করা না গেলেও, তথ্য প্রদানকারীর তথ্যমতে বন্যপ্রাণি বা তার অংশ জব্দ করা সম্ভব হলে আর্থিক ও গুরুত্ব বিবেচনায় তথ্য প্রদানকারীকে পদকের জন্য পর্যালোচনা করে বিবেচনায় আনা যাবে।
যে সব ক্ষেত্রে তথ্যপ্রদানকারী আর্থিক পুরস্কার পাবে না
প্রাথমিক পর্যালোচনায় যে তথ্যে মেধার অভাব আছে, যে তথ্য সুনির্দিষ্ট নয়, যে তথ্য অবিশ্বাসযোগ্য, যখন কোনো তথ্য বেনামে জমা দেওয়া হয়, যে তথ্য আগে প্রকাশিত হয়েছে, তথ্য প্রদানকারী নিজেই অপরাধে জড়িত থাকলে অথবা অন্য কোনো বৈধকারণে তথ্য প্রদানকারী আর্থিক পুরস্কার নাও পেতে পারেন।
মন্তব্য করুন