বুধবার সকাল ১০টায় শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বাংলাদেশ বিমানের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইটে প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীরা রওনা হন।
লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দরে তিন ঘণ্টার যাত্রাবিরতি করে ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের ফ্লাইটে নিউ উইয়র্ক পৌঁছাবেন প্রধানমন্ত্রী। কোরবানির ঈদের দিনটি তার সেখানেই কাটবে।
এ সফরে ৬০ সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন শেখ হাসিনা। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী, প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচটি ইমাম, গওহর রিজভী, মশিউর রহমান এবং প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম ও মেহের আফরোজ চুমকি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে রয়েছেন।
শিল্পমন্ত্রী আমির আমির হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে বিদায় জানান।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, তিন বাহিনীর প্রধান, যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত ও ব্রিটিশ হাই কমিশনার এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
নিউ ইয়র্কে শেখ হাসিনা অবস্থান করবেন হোটেল ওয়ালডর্ফ অ্যাসটোরিয়াতে। ১১ দিনের সফরে গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও সম্মেলনে ব্যস্ত সময় কাটবে তার।
সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যের (এমডিজি) মেয়াদ শেষ হচ্ছে চলতি বছর। ২৫ থেকে ২৭ সেপ্টেম্বর নিউ ইয়র্কে এক সম্মেলনে বিশ্বনেতারা আগামী ১৫ বছরের জন্য নতুন পরিকল্পনা ঠিক করবেন, যাকে বলা হচ্ছে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য বা এসডিজি।
পৃথিবীর ১৫০টি দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানদের উপস্থিতিতে এসডিজি সম্মেলনের শেষ দিন বক্তব্য দেওয়ার কথা রয়েছে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর।
জাতিসংঘের ৭০তম সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে ঢাকা ছাড়ার আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
তার উপ-প্রেস সচিব মামুন-অর-রশিদ মঙ্গলবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন, ২০০০ সালে এমডিজি প্রণয়নের সময়ও শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন। সে সময় বাংলাদেশের মতামত ‘গুরুত্বের সঙ্গে’ নেওয়া হয়েছিল।জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনের ফাঁকে ২৮ সেপ্টেম্বর নিউ ইয়র্কে ‘শান্তিরক্ষা’ বিষয়ক উচ্চ পর্যায়ের একটি বৈঠকে অংশ নেবেন শেখ হাসিনা। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সঙ্গে ওই অধিবেশনের কো-চেয়ার থাকবেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।
বিশ্ব শান্তিরক্ষা কার্যক্রমকে আরও জোরদার করতে ওই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ‘কিছু প্রতিশ্রুতি’ দেবেন বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী।
নিউ ইয়র্কে অবস্থানকালে জাতিসংঘের পরিবেশ বিষয়ক সর্বোচ্চ পুরস্কার ‘চ্যাম্পিয়ন্স অফ দি আর্থ’ এবং তথ্য-প্রযুক্তিতে অগ্রগতির স্বীকৃতি হিসেবে আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ সংস্থার (আইটিইউ) পদক তুলে দেওয়া হবে শেখ হাসিনার হাতে।
শেখ হাসিনা এবার জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক অভিবাসী ও উন্নয়ন কমিটির চেয়ারম্যান হতে যাচ্ছেন। ৩০ সেপ্টেম্বর তিনি জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে বাংলায় ভাষণ দেবেন। এছাড়া চীনের প্রেসিডেন্টের আমন্ত্রণে ২৭ সেপ্টেম্বর লিঙ্গ সমতা ও নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে বিশ্ব নেতাদের এক বৈঠকে অংশ নেবেন।
আইএস জঙ্গিদের সহিংসতা-উগ্রপন্থা দমন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের আয়োজনে আরেকটি সম্মেলনে শেখ হাসিনার বক্তব্য দেওয়ার কথা রয়েছে।
২৯ সেপ্টেম্বর ‘এমডিজি থেকে এসডিজিতে যাওয়া: বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা ও প্রত্যাশা’ শীর্ষক একটি অনুষ্ঠানে তিনি প্রধান অতিথি থাকবেন। বাংলাদেশের আয়োজনে ওই বৈঠকে বিভিন্ন দেশের নেতারা অংশ নেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
এছাড়া কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৫ সেপ্টেম্বর ‘গার্লস লিড দ্য ওয়ে’ শীর্ষক একটি ফোরামেও শেখ হাসিনা বক্তব্য দেবেন।
শেখ হাসিনার নিউ ইয়র্কে অবস্থানকালের যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের প্রেসিডেন্ট এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকও হতে পারে বলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন।
আগামী ১ অক্টোবর নিউ ইয়র্ক থেকে রওনা হয়ে লন্ডনে একদিন অবস্থান করে ৩ অক্টোবর দেশে ফেরার কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। সিলেটের ওসমানী বিমানবন্দর হয়ে তিনি ঢাকা পৌঁছাবেন।
মন্তব্য করুন