ট্যানারি ব্যবসায়ীরা এবার ঢাকায় প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত গরুর চামড়া কিনবেন ৫০ টাকা থেকে ৫৫ টাকায়। ঢাকার বাইরে এর দাম হবে ৪০ টাকা থেকে ৪৫ টাকা।
এছাড়া প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত মহিষের চামড়ার দাম ধরা হয়েছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। সারা দেশে খাসির লবণযুক্ত চামড়া ২০ থেকে ২২ টাকা এবং বকরির চামড়া ১৫ থেকে ১৭ টাকায় সংগ্রহ করা হবে।
বুধবার রাজধানীর একটি রেস্তোরাঁয় সংবাদ সম্মেলন করে এই দাম ঘোষণা করেন বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শাহীন আহমেদ।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে এ দাম নির্ধারণ করা হয়েছে”।
চামড়াজাত পণ্য উৎপাদনকারীদের নেতা আফতাব খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বলেন, “গত বছরের অনেক চামড়া এখনও রয়ে গেছে। আন্তর্জাতিক বাজারেও পশুর চামড়ার দাম অপেক্ষাকৃত কমেছে। সার্বিক বিষয় বিবেচনা করেই এবার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।”
গতবছর সরকার কোরবানির পশুর চামড়ার দাম নির্ধারণের বিষয়টি ব্যবসায়ীদের ওপর ছেড়ে দেওয়ার পর আগের বছরের তুলনায় কম দাম ঠিক করেন তারা। আর এবার যে মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে, তা গতবারের চেয়েও কম।
গত বছর ট্যানারি ব্যবসায়ীরা রাজধানীতে প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত গরুর চামড়া কেনেন ৭০ থেকে ৭৫ টাকায়। ঢাকার বাইরে এর দাম ছিল ৬০ থেকে ৬৫ টাকা।
প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত মহিষের চামড়ার দাম ৩৫ থেকে ৪০ টাকা; খাসির লবণযুক্ত চামড়া ৩০ থেকে ৩৫ টাকা এবং বকরির চামড়া ২৫ থেকে ৩০ টাকায় সংগ্রহ করা হয়।
২০১৩ সালে সরকার নির্ধারিত দামে ব্যবসায়ীরা ঢাকায় প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত গরুর চামড়া কেনেন ৮৫-৯০ টাকায়। আর ঢাকার বাইরে তা কেনা হয় ৭৫-৮০ টাকায়।
ওই সময় প্রতি বর্গফুট খাসির চামড়ার দাম ছিল ৫০-৫৫ টাকা। বকরির চামড়া ৪০-৪৫ টাকা এবং মহিষের চামড়া ৪০-৪৫ টাকায় বেঁধে দেওয়া হয়েছিল।
পশুর চামড়া ‘পচনশীল’ হওয়ায় এর দাম নির্ধারণ নিয়ে ‘সিন্ডিকেট’ করার কোনো ‘উপায়’ নেই বলে মন্তব্য করেন চামড়াজাত পণ্য উৎপাদনকারীদের সংগঠন বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি আফতাব।
প্রতিবছর দাম কমতে থাকায় পাশের দেশে পশুর চামড়া পাচারের শঙ্কাও দেখছেন না এ ট্যানারি ব্যবসায়ী।
“সরকারি নির্দেশনা মেনে দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। পাশের দেশেও চামড়া যায় না। ঢাকা থেকে সীমান্তের দূরত্ব অনেক; পচনশীল এ জিনিস সেখানে নেওয়া যায় না।”
ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য অনুযায়ী, বছরে বাংলাদেশ থেকে ২২ কোটি বর্গফুট চামড়া পাওয়া যায়। এর মধ্যে ৬৪ দশমিক ৮৩ শতাংশ গরুর চামড়া, ৩১ দশমিক ৮২ শতাংশ ছাগলের, ২ দশমিক ২৫ শতাংশ মহিষের এবং ১ দশমিক ২ শতাংশ ভেড়ার চামড়া। এর অর্ধেকের বেশি আসে কোরবানির ঈদের সময়।
মন্তব্য করুন