নিউজ ডেস্ক:
‘লাব্বাইক আল্লাহুমা লাব্বাইক- হে আল্লাহ, তোমার ডাকে আমি হাজির’ ধ্বনিতে বুধবার মুখরিত হবে সৌদি আরবের আরাফাতের ময়দান।
সৌদি আরবের সংবাদ মাধ্যমের হিসাব অনুযায়ী বিশ্বের ১৫০টি দেশের প্রায় ২০ লাখের বেশি ধর্মপ্রাণ মুসলমান এবার হজ করছেন, যাদের মধ্যে বাংলাদেশির সংখ্যা এক লাখের বেশি।
মঙ্গলবার হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরুর পর মক্কার কাবা শরিফ থেকে রওনা হয়ে পাঁচ কিলোমিটার দূরে মিনায় জড়ো হন হজ করতে আসা মুসলমানরা। ইবাদত-বন্দেগিতে মিনায় রাত কাটানোর পর আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশায় তারা জিকির করেন, নামাজ পড়েন জামায়াতের সঙ্গে।
হজের মূল আনুষ্ঠানিকতার জন্য বুধবার ভোরে তারা মিনা থেকে যাত্রা শুরু করেন ১০ কিলোমিটার দূরে আরাফাতের ময়দানের উদ্দেশে। শুভ্র সেলাইবিহীন এক কাপড়ে সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত তারা আরাফাতের ময়দানে থাকবেন।
চার বর্গমাইল আয়তনের এই বিশাল সমতল মাঠের দক্ষিণ দিকে মক্কা হাদা তায়েফ রিং রোড, উত্তরে সাদ পাহাড়। সেখান থেকে আরাফাত সীমান্ত পশ্চিমে আরও প্রায় পৌনে ১ মাইল বিস্তৃত।
মুসলমানদের অতি পবিত্র এই ভূমিতে যার যার মতো সুবিধাজনক জায়গা বেছে নিয়ে তারা ইবাদত করবেন; হজের খুতবা শুনবেন এবং জোহর ও আসরের নামাজ পড়বেন।
আরাফাতের মসজিদে নামিরাহ থেকে এবার হজের খুতবা দেবেন সৌদি আরবের গ্র্যান্ড মুফতি আবদুল আজিজ আল শাইখ। এ খুতবা রেডিও ও টেলিভিশনে সম্প্রচার করা হবে বিশ্বময়।
মুসলমানদের বিশ্বাস অনুযায়ী, আদি পিতা আদম ও আদি মাতা হাওয়া পৃথিবীতে পুনর্মিলনের পর এই আরাফাতের ময়দানে এসে আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছিলেন। ১৪ শ’ বছরেরও বেশি সময় আগে এখানেই ইসলামের শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ (স.) দিয়েছিলেন তার বিদায় হজের ভাষণ।
এই আরাফাতে উপস্থিত না হলে হজের আনুষ্ঠানিকতা পূর্ণাঙ্গ হয় না। তাই হজে এসে যারা অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন, তাদেরও অ্যাম্বুলেন্সে করে আরাফাতের ময়দানে নিয়ে আসা হবে স্বল্প সময়ের জন্য।
ইসলামী রীতি অনুযায়ী, জিলহজ মাসের নবম দিনটি আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করে ইবাদতে কাটানোই হল হজ।
আরাফাত থেকে মিনায় ফেরার পথে সন্ধ্যায় মুজদালিফায় মাগরিব ও এশার নামাজ পড়বেন সমবেত মুসলমানরা। মুজদালিফায় রাতে থাকার সময় তারা পাথর সংগ্রহ করবেন, যা মিনার জামারায় শয়তানকে উদ্দেশ্য করে ছোড়া হবে।
বৃহস্পতিবার সকালে ফজরের নামাজ শেষে মুসল্লিরা মিনায় ফিরে জোহরের নামাজ আদায় করবেন। এরপর শয়তানকে (প্রতীকী) পাথর ছুড়বেন।
এরপর কোরবানি দিয়ে ইহরাম ত্যাগ করবেন এবং সবশেষে কাবা শরিফকে বিদায়ী তাওয়াফের মধ্যে দিয়ে শেষ হবে হজের আনুষ্ঠানিকতা।
মন্তব্য করুন