বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:১৯ পূর্বাহ্ন
আলোকিত কক্সবাজার ডেক্স:
সহকর্মীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা ভালো। এতে আপনার কর্মদিবসগুলো কম বিষণ্ণ হবে, যা আপনার কাজের ফোকাস ঠিক রাখতে সহায়ক হবে এবং আপনার কাজের উৎপাদনশীলতাও বাড়াবে। কিন্তু এই ঘনিষ্ঠতা যদি পেশাদারিত্বকে ছাড়িয়ে যায়, তাহলে বিপদ আছে। সূতরাং সহকর্মীরা যত ঘনিষ্ঠই হোক না কেন পেশাদারিত্ব বজায় রাখতে কখনোই তাদের সঙ্গে এই ২৩ কথা বলতে যাবেন না : ১. আপনার বেতন কত? এই প্রশ্নটি শুধু অপেশাদারই নয় বরং একটু কদর্যও বটে। ২. কিছু টাকা ধার দেওয়া যাবে কি? সঙ্গে টাকা না থাকলে কদাচিৎ কোনো সহকর্মীর কাছে দুপুরের খাবারের জন্য টাকা ধার চাওয়া যেতে পারে। কিন্তু প্রায়ই যদি এমন করেন তাহলে তা আর একদমই শোভনীয় হবে না। ৩. ‘সত্যি বলতে কি’ আপনি যখন বিশেষ কোনো উপলক্ষে নিজের সততার প্রতি অন্যের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে যাবেন তখন তারা ভাবতে বাধ্য হবে, ‘তাহলে কি আপনি আমার সঙ্গে সব সময়েই সৎ ছিলেন না?’ ৪. আপনি কি শুনেছেন…? কোনো সহকর্মীর ব্যাপারে অপর সহকর্মীর কাছে কখনোই কোনো কটু কথা বলতে যাবেন না। এতে আপনার নিজের ইমেজেরই ক্ষতি হবে বেশি। ৫. ‘প্যান্টগুলো আপনাকে মানিয়েছে বেশ’ সহকর্মীদের শারীরিক বৈশিষ্ট্য নিয়ে মন্তব্য করাকে অপেশাদার আচরণ হিসেবেই বিবেচনা করা হয়। আর তা যদি হয় কোনো বিপরীত লিঙ্গের সহকর্মীকে নিয়ে তাহলে তো আপনার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগও উঠতে পারে। ৬. ‘আপনারা সব সময়ই সমস্যা তৈরি করেন’ ধর্ম, রাজনীতি এবং সন্তান লালন-পালনের মতো অনেক বিষয় প্রায়ই কর্মস্থলে আলোচনার বিষয় হয়। কিন্ত বিশেষ কোনো গোষ্ঠীর প্রতি নেতিবাচক মন্তব্য করাটা বোকামি এবং অপেশাদারিত্বেরই লক্ষণ। এতে আপনি হয়রানির সমস্যায় পড়তে পারেন। ৭. আপনি কি গর্ভবতী? এ ধরনের প্রশ্ন করলে আপনার সহকর্মী যদি সত্যিই গর্ভবতী না হন তাহলে তিনি অপমানিত বোধ করবেন। আর যদি গর্ভবতী হয়ে থাকেন তাহলে তিনি হয়তো বিষয়টি নিয়ে কথা বলার জন্য মানসিকভাবে নাও প্রস্তুত থাকতে পারেন। ৮. ‘বিরক্ত করার জন্য দুঃখিত’ সহকর্মীর কাছে কোনো কিছু জানতে চাইতে গিয়ে এই কথা না বলে বরং বলূন, ‘মাফ করবেন। আপনার হাতে ফ্রি সময় আছে কি?’ ৯. আমি অন্য চাকরি খুঁজছি- আপনি কি এমন কাউকে চেনেন যিনি চাকরি দিচ্ছেন? এতে আপনার সহকর্মীরা স্বয়ংক্রিয়ভাবেই আপনার কাছ থেকে দূরে সরে যেতে থাকবেন। কারণ তাদের মনে এই ধারণা ঢুকে যাবে যে আপনি আর তাদের সঙ্গে বেশিদিন থাকছেন না। আবার সহকর্মীরা কথাটি বসের কাছে বলে দিলে তা আপনার জন্য অনাকাঙ্ক্ষিত বিপত্তিও ডেকে আনতে পারে। ১০. ‘দেখেছেন আমার শরীরের কী অবস্থা? আগামী কাল মেডিক্যাল টেস্টের রেজাল্ট পাবো’ সহকর্মীদের সঙ্গে কখনোই জ্বর-সর্দি ও মাথা ব্যথা জাতীয় সাধারণ রোগ ছাড়া বেশি কিছু শেয়ার করতে যাবেন না। ১১. ‘আমার ধারণা…’ কোনো বিষয়ে নিশ্চিত না হলে সে বিষয়ে বলতে গিয়ে ‘আমার ধারণা’ জাতীয় শব্দবন্ধ ব্যবহার করা যেতে পারে। কিন্তু হরহামেশাই এভাবে কথা বললে আপনাকে উদ্দীপনাহীন লোক বলেই মনে হবে। সূতরাং কোনো বিষয় নিশ্চিতভাবে জানা থাকলে তা দৃঢ়তার সঙ্গেই বলুন। ১২. ‘ওয়াও, আমি শুনে বিস্মিত হয়েছি যে তারা আপনাকে উপস্থাপনার জন্য অনুরোধ করেছে’ এ ক্ষেত্রে পেশাদারিত্বপূর্ণ প্রতিক্রিয়াটি হবে, ‘অভিনন্দন!’ ১৩. আমি যখন বোরা বোরায় থাকবো তখন কি আপনি দয়াকরে আমার ঘাটতিটুকু পুরণ করতে পারবেন? সহকর্মীদের সঙ্গে কখনোই আপনি কোনো বিলাসবহুল জায়গায় ভ্রমণে যাচ্ছেন বা আপনি কতটা বিলাসবহুল জীবনযাপন করছেন তা শেয়ার করতে যাবেন না। এতে তাদের মধ্যে আপনার প্রতি হিংসা তৈরি হবে। ১৪. আমিও কি আমিন্ত্রত? কর্মস্থলের সকলকেই সবকিছুতে আমন্ত্রণ নাও জানানো হতে পারে। সূতরাং এ ধরনের প্রশ্ন করে বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখোমুখি পড়ে যেতে পারেন। ১৫. তাহলে এ সপ্তাহের ছুটির দিনটি কি আপনি আমার সঙ্গেই কাটাচ্ছেন? এর মানে যদি হয় আড্ডা দেওয়া বা সময় কাটানো তাহলে বলতে পারেন। কিন্তু বিপরীত লিঙ্গের কারো সঙ্গে এ ধরনের কথা বললে অনেক সময় এর মানে করা হতে পারে যৌনতার আবেদনমূলক কিছু। সূতরাং সাবধান! ১৬. ‘আমি যদি আমার মেয়ে বন্ধুর নতুন অফিসের জন্য একটি কফির বক্স নিয়ে যাই তা হয়তো কেউই দেখবেন না’ এর মাধ্যমে আপনি প্রকাশ্যেই চুরির কথা বলছেন! যা আপনাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করার জন্য যথেষ্ট কারণ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে; অন্তত আপনার বিশ্বস্ততায় ঘাটতি ধরা পড়বে। ১৭. ‘ওহ! আমার ছেলেবন্ধুটা আবার’ আপনার ব্যক্তিগত সম্পর্কগুলোর ব্যাপারে সহকর্মীদের কাছে বিস্তারিত কিছু না জানানোই ভালো। এতে আপনার ব্যাপারে প্রতিকূল তথ্যই ফাঁস হয়ে পড়তে পারে। আর কর্মস্থলের সম্পর্কগুলোও এর ফলে খুব একটা উন্নত হয় না। সুতরাং আপনার ব্যক্তিগত সম্পর্কের কথাগুলো নিজের মধ্যে লুকিয়ে রাখাই ভালো। ১৮. ‘তিনি (কোনো নারী) সবকিছুতে একাই সব কৃতিত্ব নিতে চান’ হতে পারে আপনার বস বা কোনো সহকর্মী আপনার কাজের কৃতিত্ব ছিনতাই করছেন। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে সহকর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করলে তা কোনো ভালো ফল বয়ে আনবে না। তারচেয়ে বরং আপনার কাজের কৃতিত্ব যিনি চুরি করছেন তার সঙ্গেই বিষয়টি নিয়ে সরাসরি আলোচনা করতে পারেন। ১৯. আপনার ডিওডোরান্টটি কি একটু ধার নিতে পারি? পরস্পরের মাঝে কোনো কিছু ভাগাভাগি করাটা ভালো লক্ষণ। কিন্তু কর্মস্থলে এতটা ঘনিষ্ঠ না হওয়াই ভালো। ২০. ‘আমি এই কম্পানির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ করতে যাচ্ছি!’ আপনি যে প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন, তার বিরুদ্ধে যদি আপনার সত্যিই কোনো অভিযোগ থেকে থাকে তাহলে তা নিয়ে হম্বি-তম্বি না করে বরং আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলুন। আপনি যদি সত্যিই আপনার নিয়োগদাতার বিরুদ্ধে আইনি অভিযোগ তুলতে চান তাহলে তা গোপনে এবং নিয়োগদাতার মর্যাদা অক্ষুণ্ন রেখেই করুন। আর নিজের দায়িত্বটুকুও ঠিকমতো পালন করা অব্যাহত রাখুন। তা যদি সম্ভব না হয় তাহলে চাকরি ছেড়ে দেওয়াটাই ভালো হবে। ২১. ‘আপনার বাচ্চাটি হয়তো…..’ কারো বাচ্চা সম্পর্কে বাজে মন্তব্য করাটা নিজের জন্য শত্রু তৈরির সবচেয়ে কার্যকর উপায়। সূতরাং সহকর্মীদের বাচ্চার সম্পর্কে সবসময় ইতিবাচক মন্তব্য করুন অথবা চুপচাপ থাকুন। ২২. ‘আপনি কি জানেন, আমি ওজন কমানো শুরু করেছি, আমি একটি জিমে যোগ দিয়েছি’ আপনি হয়তো ভাবতে পারেন সহকর্মীকে আপনি বুঝি সহায়ক কোনো পরামর্শ দিচ্ছেন। কিন্তু সহকর্মী যদি আপনাকে কিছু জিজ্ঞেস না করে তাহলে গায়ে পড়ে পরামর্শ দিতে যাবেন না। কারণ আপনার মন্তব্য তার কাছে আঘাতমূলকও মনে হতে পারে। আর কোনো সহকর্মী মনে আঘাত পেলে তার সঙ্গে আপনার বাজে কর্মসম্পর্ক তৈরি হবে। ২৩. আপনি কি অবসরের জন্য তৈরি নন? অনেকের কাছেই বয়সের ইস্যুটি খুবই সংবেদনশীল একটি ইস্যু। কোনো সহকর্মী গর্ভবতী কিনা তা নিয়ে যেমন কোনো অনুমানমূলক মন্তব্য করা ঠিক নয় তেমনি কারো বয়স নিয়েও কোনো অনুমান বা মন্তব্য অশোভনীয়।সূত্র-কালেরকণ্ঠ
মন্তব্য করুন