মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ১২:১০ অপরাহ্ন

পরিকল্পনাকারী ও মদদদাতাদের খুঁজে বের করা সময়ের ব্যাপার মাত্র’

পরিকল্পনাকারী ও মদদদাতাদের খুঁজে বের করা সময়ের ব্যাপার মাত্র’

অনলাইন বিজ্ঞাপন

আলোকিত কক্সবাজার ডেক্স:

সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, শুধু হামলাকারি জঙ্গি-সন্ত্রাসী নয়, পর্দার আড়ালে থেকে কারা পরিকল্পনা করছে, মদদ দিচ্ছে, প্রশিক্ষণ ও অস্ত্র দিচ্ছে সে দেশি-বিদেশি যেই হোক না কেন সবাইকে বিচারের মুখোমুখি করা হবে। যেহেতু এ ব্যাপারে আন্তর্জাতিক সমর্থন রয়েছে, তাই সবাইকে খুঁজে বের করা আমাদের জন্য কঠিন হবে না। শুধু সময়ের ব্যাপার মাত্র। অপরাধীদের আমরা অবশ্যই দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে পারব। আজ বুধবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি এই অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।  স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে শুরু হওয়া সংসদ অধিবেশনে এ সংক্রান্ত প্রশ্নটি উত্থাপন করেন সরকারী দলের সংসদ সদস্য গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক। তার সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, এমন কাপুরুষোচিত অমানবিক হামলার ঘটনা ছিল কল্পনাতীত। যারা বাংলাদেশের উন্নয়ন চায় না, ভাল চায় না, স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না- তারাই এ ধরনের হামলা চালাচ্ছে।  তিনি আরো বলেন, এই হামলার পর বিদেশি রাষ্ট্রের প্রত্যেকে নিন্দা জানিয়ে পরিস্থিতি মোকাবেলায় পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় আমাদের পাশে আছে, এসব সন্ত্রাসী হামলা মোকাবেলায় সব ধরনের সহযোগিতারও আশ্বাস দিয়েছেন। এ কারণে হামলার নেপথ্যে দেশি-বিদেশি যেই জড়িত থাকুক না কেন, তাঁদের খুঁজে বের করা সময়ের ব্যাপার মাত্র। গুলশানে আর্টিজান রেঁস্তোরায় সন্দেহজনক হামলাকারীদের সনাক্ত করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সহযোগিতা করার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে সংসদ নেতা বলেন, হামলাকারী বেশ কয়েকজন মারা গেছে। কয়েকজন সন্দেহভাজনের ভিডিওচিত্র প্রকাশ করা হয়েছে। তাদের মধ্যে কয়েকজনকে ইতোমধ্যে সনাক্তও করা হয়েছে। বাকিদের সনাক্ত করতে সবার সহযোগিতা চাই। কেউ সন্দেহভাজনদের সনাক্ত করতে পারলে সঙ্গে সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অবহিত করার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বমন্দার মধ্যে বর্তমান সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করে। অর্থনৈতিক মন্দা মোকাবেলা করে আমরা বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে দ্রুত উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। সারা বিশ্বের সামনে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল। ২০১৪ ও ২০১৫ সালে বিএনপি-জামায়াত জোটের জ্বালাও-পোড়াও, ধ্বংসযজ্ঞ ও শত শত মানুষকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনা তুলে ধরে বলেন, এসব ঘটনায় বাংলাদেশকে প্রশ্নের মুখোমুখি পড়তে হয়।  তিনি আরো বলেন, ওইসব ঘটনা দ্রুত মোকাবেলা করে সুশাসনের মাধ্যমে দেশের ভাবমূর্তি যখন উজ্জ্বল করেছি, বিনিয়োগকারীদের মধ্যে যখন আস্থার পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে- তখন আবারো হামলার ঘটনা ঘটল। মেট্টোরেলের জাপানি পরামর্শক, গার্মেন্টস ব্যবসায়ী একজন ইটালী নাগরিকসহ বেশ ক’জন বিদেশি নাগরিককে হত্যা করা হলো। এ সকল ঘটনায় জড়িতরা কেউ রেহাই পাবে না। সরকারি দলের সংসদ সদস্য মনিরুল ইসলামের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণের কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। আশা করা যায়, ২০১৭ সালের ১৬ ডিসেম্বর মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণ করা সম্ভব হবে।  তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট সফলভাবে উৎক্ষেপিত হলে নির্দিষ্ট অরবিটার স্লট ১১৯ দশমিক ১ ডিগ্রী পূর্ব দ্রাঘিমাংশে পৌঁছতে প্রায় ২ সপ্তাহের মত সময় লাগবে। সফল উৎক্ষেপণের পর স্যাটেলাইটের ইন-অরবিট টেস্ট সম্পন্ন করতে আনুমানিক ৩ মাস সময় লাগবে। সম্পূর্ণ টেস্টিং মিশন শেষে ২০১৮ সালের এপ্রিল মাস নাগাদ বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট পূর্ণাঙ্গভাবে বাণিজ্যিক কার্যক্রম করতে পারবে বলে আশা করা যায়।  সংসদ নেতা আরো জানান, বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট সফলভাবে উৎক্ষেপণের পর পর্যায়ক্রমে বঙ্গবন্ধু-২ ও বঙ্গবন্ধু-৩ নামক আরও ২টি স্যাটেলাইট মহাকাশে প্রেরণের পরিকল্পনা আমাদের রয়েছে। বর্তমানে বিদেশি স্যাটেলাইটের ভাড়া বাবদ প্রদেয় বার্ষিক প্রায় ১৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সাশ্রয়সহ বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের সুযোগ সৃষ্টি হবে। জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ফখরুল ইমামের প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা জানান, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে বাংলাদেশ রেলওয়েকে আধুনিক, যুগোপযোগী, পরিবেশবান্ধব ও নির্ভরযোগ্য যাত্রী সেবামূলক গণপরিবহন হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে সর্বোচ্চ গুরুত্ব প্রদান করে যাচ্ছে। ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে এ পর্যন্ত সারা দেশে প্রায় ২৩৫ কিলোমিটার নতুন রেললাইন নির্মাণ করেছে। তবে বিভিন্ন সেকশনে নতুন ট্রেন চালু করার একটি বড় বাধা হলো ডাবল লাইন না থাকা। এ সমস্যা সমাধানে আমরা পর্যায়ক্রমে সকল গুরুত্বপূর্ণ রেলওয়ে সেকশনকে ডাবল লাইনে উন্নীত করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছি।  প্রধানমন্ত্রী জানান, যমুনা নদীর উপর বিদ্যমান বঙ্গবন্ধু সেতুর সমান্তরালে ডুয়েলগেজ ডাবল ট্রাক সম্পন্ন একটি রেল সেতু নির্মাণের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে একটি ডিপিপি প্রনয়ন করা হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য ইতিমধ্যে জাইকার সঙ্গে ঋণচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।  তিনি আরো জানান, ঢাকা হতে পদ্মা সেতু হয়ে যশোর পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণের লক্ষ্যে ‘পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্প’ একনেক কর্তৃক অনুমোদিত হয়েছে। এছাড়া পায়রা বন্দরকেও রেলওয়ে নেটওয়ার্কের আওতায় আনা হবে।সূত্র-কালেরকণ্ঠ


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

নিবন্ধনের জন্য আবেদিত
Desing & Developed BY MONTAKIM