সেন্ট কিটসের ওয়ার্নার পার্কে অস্ট্রেলিয়ার ২৮৮ রান তাড়ায় ২৫২ রানে গুটিয়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা।
আমলা-ডু প্লেসি-ডি ভিলিয়ার্সদের ব্যাটে এক সময় জয়ের পথেই ছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। কিন্তু আবারও দিতে হয়েছে লম্বা লেজের খেসারত। শেষ ৭ উইকেট হারিয়েছে তারা ৪২ রানের মধ্যে।
টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রোটিয়ারা শেষ ৭ উইকেট হারিয়েছিল ২৮ রানে!
মন্থর উইকেটের গায়ানা থেকে সেন্ট কিটসের ব্যাটিং উইকেটে এসে যেন হাঁপ ছেড়ে বেঁচেছেন ব্যাটসম্যানরা; মেলে ধরছেন স্ট্রোকের পসরা।
অ্যারন ফিঞ্চ (১৩) অবশ্য শুরুর দিকেই বোল্ড হন ইমরান তাহিরকে সুইপ করতে গিয়ে। তবে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে দারুণ খেলেছেনে ওয়ার্নার ও উসমান খাওয়াজা।
শুরু থেকেই দাপটে ব্যাট করা ওয়ার্নার অর্ধশতক স্পর্শ করেছেন ৫৩ বলে। তিন অঙ্ক ছুঁয়েছেন ১০৯ বলে। ওয়ানডেতে তার এটি ষষ্ঠ শতক, অস্ট্রেলিয়ার বাইরে প্রথম।
খাওয়াজা অষ্টম ওয়ানডেতে পেয়েছেন দ্বিতীয় অর্ধশতক। দুজন মিলে গড়েছেন ১৩৬ রানের জুটি।
পারনেলে শর্ট বলে পুল করে মিড উইকটে ধরা পড়েছেন ওয়ার্নার। ১১ চার ও ২ ছক্কায় ১২০ বলে করেছেন ১০৯।
৫৬ রানে খাওয়াজার সহজতম এক ক্যাচ ছাড়েন বিশ্বের সেরা ফিল্ডারদের একজন এবি ডি ভিলিয়ার্স। তবে খাওয়াজা এগোতে পারেননি আর বেশি, ফিরেছেন ৫৯ রানেই।
এই দুজনের বিদায়ে খানিকটা থমকে যায় অস্ট্রেলিয়ান ইনিংস। কমে যায় রানের গতি। এক সময় অনায়াস মনে হওয়া তিনশ’ রান চলে যায় দৃষ্টিসীমার খানিকটা বাইরে।
তবে শেষ দিকে ইনিংসে দম দেন স্টিভ স্মিথ ও ম্যাথু ওয়েড। ৪৯ বলে ৫২ রানে অপরাজিত থেকে যান অধিনায়ক স্মিথ। বাজে এক সিদ্ধান্তে আউট হওয়া ওয়েড করেছেন ১৪ বলে ২৪। শেষ ১০ ওভারে অস্ট্রেলিয়া তোলে ৯০ রান।
দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংসটাও এগোচ্ছিল অস্ট্রেলিয়ার গতিপথেই। শুরুর দিকে কুইন্টন ডি ককের বিদায়; দ্বিতীয় উইকেটে দারুণ একটি জুটি!
চোট কাটিয়ে ফেরা ফাফ ডু প্লেসির সঙ্গে দ্বিতীয় উইকেটে ১০৫ রানের জুটি গড়েন হাশিম আমলা। দারুণ সব শটের পর দুজনই আউট হয়েছে অনেক বাইরের বল তাড়া করে।
হেইজেলউডকে ড্রাইভ করতে গিয়ে শর্ট কাভারে স্মিথের নিচু এক ক্যাচের শিকার আমলা (৬০)।
মিচেল স্টার্কের বাইরের বলে শট খেলতে গিয়ে পয়েন্টে ক্যাচ দিয়েছেন ডু প্লেসি (৬৩)।ডি ভিলিয়ার্স তখনও ছিলেন। খেলেছেন চোখধাঁধানো কিছু শট। কিন্ত হেইজেলউডের রিভার্স সুইংয়ে এলোমেলো শটে এলোমেলো হয়েছে তার স্টাম্প (৩২ বলে ৩৯)। দলের আশা হয়ে ছিলেন জেপি দুমিনি। অ্যাডাম জ্যামপাকে ছক্কা মারার পরের বলে আরেকটির চেষ্টায় তিনি ধরা পড়েছেন সীমানায় (৩৯ বলে ৪১)।
ছয়ে ফারহান বেহারডিনের পর খানিকটা ব্যাটিং পারেন কেবল পার্নেল। ব্যাট ধরার মত নেই আর কেউ। হুড়মুড় করে তাই ভেঙে পড়ে প্রোটিয়া ব্যাটিং।
শেষ ১০ ওভারে দারুণ বোলিং করেছেন লেগ স্পিনার জ্যামপা। স্টার্ক-হেইজেলউড যথারীতি দারুণ ভূমিকা রেখেছেন। তবে ওয়ার্নার পার্কে ম্যাচসেরা আর কে হবেন? ওয়ার্নার!
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
অস্ট্রেলিয়া: ৫০ ওভারে ২৮৮/৬ (ওয়ার্নার ১০৯, ফিঞ্চ ১৩, খাওয়াজা ৫৯, স্মিথ ৫২*, বেইলি ১১, মার্শ ১০, ওয়েড ২৪, ফকনার ১; অ্যাবট ১/৫০, রাবাদা ১/৬৬, তাহির ২/৪৫, পারনেল ১/৩৪, দুমিনি ০/৩৯, ফাঙ্গিসো ১/৫২)।
দক্ষিণ আফ্রিকা: ৪৭.৪ ওভারে ২৫২ (ডি কক ১৯, আমলা ৬০, ডু প্লেসি ৬৩, ডি ভিলিয়ার্স ৩৯, দুমিনি ৪১, বেহারডিন ৪, পার্নেল ৩, অ্যাবট ১, ফাঙ্গিসো ৩, রাবাদা ৩*, তাহির ৬; স্টার্ক ৩/৪৩, হেইজেলউড ৩/৫২, ফকনার ০/৩২, মার্শ ০/৫২, জ্যামপা ৩/৫২, ফিঞ্চ ০/১৩)।
ফল: অস্ট্রেলিয়া ৩৬ রানে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: ডেভিড ওয়ার্নার।
সূত্র-বিডিনিউজ
মন্তব্য করুন