বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:০৮ পূর্বাহ্ন

পেকুয়ায় মামলার আসামীরায় বিএনপি-জামায়াতের প্রার্থী!

পেকুয়ায় মামলার আসামীরায় বিএনপি-জামায়াতের প্রার্থী!

অনলাইন বিজ্ঞাপন

মো: ফারুক 

আগামি ৩১ মার্চ ২য় দফা ইউপি নির্বাচনে পেকুয়া উপজেলায় যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষ নিয়ে হত্যা, পুলিশের উপর হামলা, এলাকায় নাশকতা, ঘরবাড়ি ভাংচুর, পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে গাড়ি ও বাড়ি পুড়ানো, ধর্ষন মামলা, সামাজিক বনায়ন নিধনসহ অসংখ্য অপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত জনপ্রতিনিধিরা আবারো বিএনপি-জামায়াতের ব্যানারে চেয়ারম্যান ও মেম্বার প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন। যে কোন মূল্যে তারা মনোনয়ন ফরম বাঁচাইয়ের দিন তাদের মনোনয়ন ফরম বাতিল না করতে মোটা অংকের টাকার মিশনেও নেমেছে বলে জানা গেছে। উপজেলার প্রধান কেন্দ্র পেকুয়া চৌমহনী, বাজারের আশাপাশে এমন কোন নৈরাজ্যে নাই তারা করেনি।

অতিতে তাদের হাতে নির্যাতন ও অত্যচারের মাত্রা এতোই বেশি ছিল এ নিয়ে এলাকার সাধারণ জনগণ থেকে শুরু করে সুশীল সমাজের মাঝে দেখা দিয়েছে আতংক আর উদ্বেগ। বিশেষ করে বাজারের ব্যবসায়ীরা ক্ষতির সম্মোখিন হয়েছিল সবচেয়ে বেশি। বড় বড় ব্যবসায়ীরা দোকানপাড় অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছিল। আর যারা ছিল তারা দিনের পর দিন বাজারের ব্যবসায়ীরা দোকানপাড় বন্ধ রেখে প্রতিবাদে মুখর হয়ে ওঠেছিল। নাশকতাকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ, মানববন্ধন আর মিছিল ছিল নিত্যদিন। আর তারাই আবারো নির্বাচনে জিতিয়ে আসতে সব কৌশল অবলম্বন করে যাচ্ছে।

উপজেলার সাত ইউনিয়নের সাধারণ এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, বিগত ইউপি নির্বাচনে সাত ইউপির মধ্যে পাঁচ ইউপিতে বিএনপি-জামায়াতের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়। সংরক্ষিত ২৭ মহিলা সদস্য ও ৬৩ ওয়ার্ডে সাধারণ সদস্য বেশির ভাগ এমইউপি তাদের দখলে ছিল। বিএনপির দূর্ঘ হিসাবে পরিচিত এ এলাকায় সাবেক প্রতিমন্ত্রী সালাউদ্দিন আহমদ (বর্তমানে ভারতের শিলিংঙ্গে গৃহবন্ধি) ব্যাপক প্রভাবে তারা নির্বাচিত হয়ে ছিলেন। আর ওই নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরাই পরবর্তিতে বিচারালয়ের মহান চেয়ারে অধিষ্টিত হয়ে চরমভাবে কলংকিত করেছিল সমাজ আর দেশকে।

জানা গেছে, বর্তমান মনোনয়ন ফরম জমা দেওয়া বিএনপি-জামায়াতের চেয়ারম্যান প্রার্থীর মধ্যে উপজেলা বিএনপির সভাপতি সদরের বাহাদুর শাহ, শীলখালীর উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি নুরুল হোছাইন, টইটংয়ের উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি রমিজ আহমদ ও রেজাউল করিম, বারবাকিয়ার জামায়াত নেতা মৌলভী বদিউল আলম, মগনামার জামায়াত নেতা শহিদুল মোস্তফা চৌধুরী, রাজাখালীর জামায়াত নেতা হুমাইন কবির, নুরুল আবছার বদু ও তার ভাই ছৈয়দনুরসহ আরো কয়েকজন স্ব-স্ব ইউনিয়নে চেয়ারম্যান প্রার্থী ও সদরের বিএনপি নেতা ৫নং ওয়ার্ডের বর্তমান এমইউপি মাহাবুবুল আলম, ৪নং ওয়ার্ডের শাহনেওয়াজ আজাদ, ৭নংওয়ার্ডের যুবদল নেতা আজিম সাও, ৬নং ওয়ার্ডের আবু তাহের মনু, টইটংয়ের আলোচিত বোরকা বাহিনীর প্রধান শাহাদত মেম্বারসহ আরো অনেকে মেম্বার প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন। তাদের অনেকের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে জিআর ৪০/১৫(১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৬(২), ০৫/১৩, ০৬/১৩, স্কুল ছাত্র সাজ্জাদ ও উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি ফরায়েজী হত্যা মামলাসহ ১৪/১৫টি মামলা চলমান রয়েছে। এছাড়াও উল্লেখযোগ্য চেয়ারম্যান ও এমইউপির মধ্যে নাশকতার সময় সামাজিক বনায়ন নিধনের কারণে বন আইনে মামলা দায়ের করেন বনবিভাগ। এর বেশির ভাগ মামলা পেকুয়া থানা তদন্তপূর্বক আদালতে চার্জসিঠ দাখিল করেছেন।

এছাড়াও মগনামার বর্তমান চেয়ারম্যান প্রার্থী জামায়াত নেতা শহিদুল মোস্তফার বিরুদ্ধে গত ২মাসে ২টি ধর্ষন মামলা রুজু হয়েছে। বারবাকিয়ায় জামায়াত নেতা মৌলভী বদিউল আলমের বিরুদ্ধে একটি মামলা বর্তমানে বিচার ফাইলে রয়েছে। রাজাখালীর জামায়াত নেতা হুমাইন একজন দূর্ধর্ষ শিবির ক্যাডার হিসাবে পরিচিত। বিগত কিছুদিন আগে উপজেলা জামায়াতের আমিরসহ তিনি পুলিশের হাতে আটক হয়ে কারাভোগ করে বের হয়। আর তারাই এখন চেয়ারম্যান ও মেম্বার প্রার্থী হতে মরিয়া।
স্থানীয় এলাকাবাসীরা অভিযোগ করে বলেন, বর্তমান সরকার ব্যাপক উন্নয়ন আর সফলতাকে বাধাগ্রস্ত করতে ও দেশকে নৈরাজ্যের দিকে ঠেলে দিতে এলাকার নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হয়েও তারা এলাকায় ব্যাপক নাশকতা চালিয়েছিল। তাদেরকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করে আমরাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলাম সবচেয়ে বেশি। এবার তাদেরকে আমরা বেলটের মাধ্যমে চরম ভাবে প্রতিশোধ নিব। আর সরকারের কাছে আমাদের অনুরোধ ওই নাশকতাকারীদের নির্বাচন থেকে অযুগ্যে ঘোষনা করা হউক।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

নিবন্ধনের জন্য আবেদিত
Desing & Developed BY MONTAKIM