শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৪:০৪ পূর্বাহ্ন
আলোকিত কক্সবাজার ডেক্স:
‘পায়রা বন্দর প্রকল্প (ভূমি অধিগ্রহণ) আইন, ২০১৫’ এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন করেছে মন্ত্রিসভা। এই আইনে স্থাপনা নির্মাণে অধিগ্রহণ করা জমির ভিডিও ধারণ করে ক্ষতিপূরণ নির্ধারণ করবে সরকার। তবে রাতারাতি জমির শ্রেণি ও কাঠামো পরিবর্তন করে অতিরিক্ত ক্ষতিপূরণ নেয়া যাবে না।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে গতকাল সোমবার সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়।
বৈঠকের এম মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়ে বলেন, ‘পায়রা বন্দর প্রকল্প আইনের খসড়া একটি বিশেষ বিধিসহ অনুমোদন করা হয়েছে, যাতে প্রকল্প এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের দ্রুত ক্ষতিপূরণ দেয়া যায়। এই আইনের লক্ষ্য হচ্ছে পদ্মা সেতু প্রকল্প ও ঢাকা এলিভেটেড এঙ্প্রেসওয়ে প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণ আইনের মতোই সরকারের একটি অগ্রাধিকার প্রকল্প হিসেবে পায়রা বন্দর প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণের সুবিধা দেয়া।
আইনের বিশেষ বিধানে পাঁচ নম্বর ধারাতে বলা হয়েছে, প্রত্যাশী সংস্থার কাছ থেকে অর্থ পাওয়ার ৬০ দিনের মধ্যে পরিশোধের ব্যবস্থা করা হবে। যাদের প্রয়োজনে জমি অধিগ্রহণ করা হচ্ছে তারাই প্রত্যাশী সংস্থা। আইন মন্ত্রণালয়ের ভেটিং সাপেক্ষে এই আইনের খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘আইনের অধীনে প্রকল্পের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ভূমি মালিকরা সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকের পক্ষে অধিগ্রহণ কমিটি অর্থ ছাড় করার ৬০ দিনের মধ্যে ক্ষতিপূরণ পাবেন।’
মন্ত্রিপরিষদ সচিব আরও বলেন, ‘যখন প্রকল্প নেয়া হয় দুষ্টু লোকেরা বেশি ক্ষতিপূরণ পাওয়ার জন্য রাতারাতি স্ট্রাকচার তৈরি করে অসাধু কর্মচারীদের সঙ্গে যোগসাজসে ক্ষতিপূরণ নেন। এ ধরনের পেশাদার লোক রয়েছে। ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কে এ ধরনের লোক পাবেন। পরে নিজেদের মধ্যে ক্ষতিপূরণের টাকা ভাগ বাটোয়ারা করেন। এটি চেক দেয়ার জন্য এ প্রভিশন রাখা হয়েছে। যদি জনস্বার্থবিরোধী কোন অসাধু উদ্দেশ্যে ঘরবাড়ি নির্মাণ বা জমির শ্রেণি পরিবর্তন করে কৃষিজমি বাণিজ্যিক প্লট হিসাবে কেউ দেখান, তাহলে কেউ বর্ধিত হারে ক্ষতিপূরণ পাবেন না।’
শ্রেণি পরিবর্তন করে ক্ষতিপূরণ দাবি করলে জেলা প্রশাসন প্রত্যাখান করবে জানিয়ে মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা বলেন, ‘প্রত্যাখানের বিরুদ্ধে সাত দিনের মধ্যে জেলা প্রশাসনের কাছে আপিল করা যাবে। অনেক সময় নিলে প্রকল্প ঝুলে যাবে ও বাস্তবায়নে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এজন্য আপিলের পাঁচ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করা হবে। আপিল নিষ্পত্তির ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জেলা প্রশাসক ব্যবস্থা নেবেন। আপিলে হেরে গেলে জেলা প্রশাসক ঘরবাড়ি স্থাপনা নিজ খরচে সরিয়ে নিতে বলবেন। না হলে প্রকাশ্যে নিলামে বিক্রি করে ট্রেজারিতে টাকা জমা দেবেন।’
তিনি বলেন, ‘আর একটি বিষয়, সমপ্রতি রি-ইনফোর্স করা হয়েছে (এটি আগে ছিল না)। এটি হলো, যখন অধিগ্রহণের নোটিশ দেয়া হয়, তখন ভিডিও করা হয়। এর উদ্দেশ্য- জমির প্রকৃতি কি, কি গাছপালা ও স্থাপনা রয়েছে তা দেখা। গাছপালার জন্যও ক্ষতিপূরণ দেয়া হয়। কি গাছপালা, কি স্ট্রাকচার রয়েছে এর ভিডিও করে নিয়ে এর ভিত্তিতেই ক্ষতিপূরণ নির্ধারণ করা হবে। আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে কোর্ট-কাচারি হলেও এই ভিডিও গ্রহণযোগ্য হবে।’
এছাড়াও মন্ত্রিসভা বৈঠক উত্থাপন করা হলেও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও অধিদফতরের আলোচনার মাধ্যমে আরও পর্যালোচনার জন্য ‘জাতীয় গুণগত মান (পণ্য ও সেবা) নীতি, ২০১৫’ এর খসড়া ফেরত পাঠানো হয়েছে। শিল্প মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এই আইনের খসড়াটি মন্ত্রিসভায় উত্থাপন করা হয়েছিল।
মন্তব্য করুন