বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৫৭ অপরাহ্ন
ছবি সংগ্রহীত।
ওয়াহিদুর রহমান রুবেল।।
বাংলাদেশ ওশানোগ্রাফিক রিসার্চ ইনস্টিটিউট-এর মেডিক্যাল অফিসার (শিক্ষানবিশ) ফাতেমা রহমান এবং সিনিয়র সাইন্টিফিক অফিসার (শিক্ষানবিশ) সীমা রানীকেও চাকুরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ফাতেমা রহমান নিয়োগ পরিক্ষায় অংশ গ্রহণ না করে মেডিক্যাল অফিসার এবং ডিগ্রী পাশ করে সিনিয়র সাইন্টিফিক অফিসার পদে নিয়োগ পেয়েছেন সীমা রানী। সরকারি নিরীক্ষা প্রতিবেদনে অনিয়ম ধরা পড়ায় দুজনকে চাকরি থেকে অবসান (বরখাস্ত) করা হয়েছে। গেল ২ অক্টোবর বাংলাদেশ ওশানোগ্রাফিক রিসার্চ ইনস্টিটিউড এর মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. তৌহিদা রহমান স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে তাদের চাকরি থেকে অবসান (বরখাস্ত) করা হয়েছে।
আদেশে বলা হয়, ফাতেমা রহমান ২০২২ সালের ২৯ আগস্ট বাংলাদেশ ওশানোগ্রাফিক রিসার্চ ইনস্টিটিউট এর মেডিক্যাল সেন্টারে মেডিক্যাল অফিসার (শিক্ষানবিশ) পদে যোগদান করেন। কিন্তু শিক্ষানবিশ হিসাবে তাঁর আচরণ ও কর্ম সন্তোষজনক নয়। এ বিষয়ে তাঁকে বিভিন্ন সময়ে সতর্ক করার পাশাপাশি কারণ দর্শানো নোটিশ প্রদান করা হয়। তারপরও তাঁর আচরন ও কর্মে পরিবর্তন আসেনি।
২০১৯ সালের ২৫ সেপ্টম্বর “জাল জালিয়াতির মাধ্যমে তাকে নিয়োগ দেয়া হয় বলে সরকারের অডিট প্রতিবেদনে (এআইআর) উল্লেখ করা হয়। ২০২১ সালের ২১ জানুয়ারির উক্ত অডিট প্রতিবেদনে তার নিয়োগে গুরুতর আার্থিক অনিয়ম (সিরিয়াস ফিনানশিয়াল ইরিগোলারেটিস) এর তথ্য উঠে এসেছে। এছাড়া পরিক্ষায় অংশ না নিয়ে তাকে নিয়োগ দেয়ার ভয়াবহ তথ্যও উঠে আসে প্রতিবেদনে। এতে বলা হয়, নিয়োগ পরিক্ষায় ৮০১ রোল নম্বরধারী হিসেবে পরিক্ষায় অংশ নেন মোঃ ওয়াহেদুজ্জামান নামে এক পরিক্ষার্থী। অথচ উক্ত রোল নম্বারের বিপরীতে ফাতেমা রহমানকে নিয়োগ দেয়া হয়। অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ সম্পর্কে জানতে ২০২৩ সালের ১৬ মার্চ মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এবং ২৮ মার্চ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় ফাতেমা রহমানের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ জানতে চেয়ে তাকে চিঠি দেয়া হয়। কিন্তু চিঠির কোন জবাব না পেয়ে বাংলাদেশ ওশানোগ্রাফিক রিসার্চ ইনস্টিটিউট এর কর্মচারী চাকুরি প্রবিধানমালা, ২০১৭ এর বিধি ৬ এর উপবিধি ২(ক) ও বিধি ৬ এর উপবিধি ৩(খ)(অ) মতে ফাতেমা রহমানকে চাকরি থেকে অবসান (বরখাস্ত) করা হয়েছে।
অপরদিকে, শিক্ষাগত যোগ্যতা না থাকার পরও নিয়োগ এবং চাকুরি মেয়াদকালে আচরণ ও কর্ম সন্তোষজনক না হওয়ায় বাংলাদেশ ওশানোগ্রাফিক রিসার্চ ইনস্টিটিউট-এর সিনিয়র সাইন্টিফিক অফিসার (শিক্ষানবিশ)পদ থেকে সীমা রানীকেও চাকরি থেকে অবসান (বরখাস্ত) করা হয়েছে।
সীমা রানী ২০২২ সালের ২৯ আগস্ট বাংলাদেশ ওশানোগ্রাফিক রিসার্চ ইনস্টিটিউট এর বায়োলজিক্যাল ওশানোগ্রাফি বিভাগে সিনিয়র সাইন্টিফিক অফিসার (শিক্ষানবিশ) পদে যোগদান করেন। সিনিয়র সাইন্টিফিক অফিসার পদে ডক্টরেট ডিগ্রী অথবা স্নাতক (সম্মান)সহ স্নাতকোত্তর ডিগ্রী চাওয়া হলেও তার এ সার্টিফিকেট ছিলনা। তবে ডক্টরেট ডিগ্রীতে অধ্যয়নরত আছেন জানিয়েস আবেদনপত্রে এপিয়ার্ড উল্লেখ করেছেন। এবং ২০১৯ সালের ২৩ অক্টোবর একটি প্রত্যয়ন পত্র জমা দেন। অথচ তিনি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় হতে ডিগ্রী (পাস) কোর্স সম্পন্ন করেছেন। অযোগ্য হওয়ার পরও অনিয়মের মাধ্যমে তাকে সিনিয়র সাইন্টিফিক অফিসার পদে নিয়োগ দেয়া হয়। অভিযোগ সম্পর্কে সন্তোষজনক জবাব না পেয়ে বাংলাদেশ ওশানোগ্রাফিক রিসার্চ ইনস্টিটিউট এর কর্মচারী চাকুরি প্রবিধানমালা, ২০১৭ এর বিধি ৬ এর উপবিধি ২(ক) ও বিধি ৬ এর উপবিধি ৩(খ) (অ) মতে সিনিয়র সাইন্টিফিক অফিসার (শিক্ষানবিশ) সীমা রানীকে চাকরি থেকে অবসান (বরখাস্ত) করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত ফাতেমা রহমান ও সীমা রানীর সাথে যোগাযোরেগ চেষ্টা করা হলেও মোবাইল বন্ধ থাকায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
মন্তব্য করুন