বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৫, ০২:৪৮ অপরাহ্ন
টেকনাফ প্রতিনিধি॥
টেকনাফ উপজেলা জুড়ে সুপারি চাষে বা¤পার ফলন হয়েছে। মৌসুমে শুরুতে বিনা খরচে এ ফসলে কৃষকরা অতি লাভবান হওয়ায় সুপারি চাষের জনপ্রিয়তা দিন দিন বাড়ছে। এ চাষে আশানুরুপ ফলন হওয়ায় কৃষকদের মুখে হাসি দেখা দিয়েছে। অন্য চাষা বাদদের মত কোন রকম ঝুঁকিপূর্ণ না হওয়ায় কৃষকরা সুপারি চাষের দিকে বেশী ঝুঁকেছেন। এই উপজেলায় সুপারি চাষের উপযোগি আবহাওয়া এবং মাটি হওয়ায় প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও উৎপাদিত সুপারি এলাকার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে রপ্তানি করা হচ্ছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কারিগরী সহযোগীতা পেলে গ্রামীণ কৃষকরা সুপারি চাষ করে নিজেদের ভাগ্য বদলে আরো সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে। উন্নত জাতের সুপারি একবার চাষ করে সারা জীবন আয়ের মুখ দেখতে পায় কৃষকরা। এতে পরিবারে প্রচূর টাকা আয়ের মাধ্যমে জীবন জীবিকায় অবদান রাখে।
তথ্য সুত্রে জানা যায়, টেকনাফ সদর ইউনিয়নের মহেশখালিয়া পাড়া , পশ্চিম গোদারবিল , বড় হাবিব পাড়া, উত্তর লম্বরী দক্ষিন লম্বরী, মিঠাপানি ছড়া , সাবরাং ইউনিয়নের মন্ডল পাড়া, সিকদার পাড়া, মুন্ডাল ডেইল, নয়া পাড়া, আচারবনিয়া পাড়া, মগপাড়া, হারিয়াখালি, লাপারঘোনা, কচুবনিয়া পাড়া, হ্নীলা ইউনিয়নের লেচুয়াপ্রাং, উলুচামরী, রঙ্গিখালী, পানখালী, মোচনী, মরিচ্যাঘোনা, হোয়াইক্যংয়ের মরিচ্যাঘোনা, কম্বনিয়া পাড়া, খারাংখালী, নয়াবাজার, কাঞ্জরপাড়া,রইক্ষ্যং, দইগ্যাকাটা, লাতুরীখোলা, হরিখোলা ও বাহারছড়া ইউনিয়নের কিছু এলাকার কৃষক সুপারি চাষ করে থাকেন। এখানকার কৃষি-অকৃষি পরিবারগুলো সহজে সুপারি চাষ করে প্রচুর টাকা আয় করছেন বলে জানা গেছে। সুপারি চাষীদের দেখাদেখিতে অন্য চাষে নিয়োজিত কৃষকগণও বর্তমানে এচাষের দিকে মনোযোগী হচ্ছে। কেননা এ গাছ একবার রোপন করলে প্রতি মৌসুমে ফল পাওয়া যায়। টেকনাফের আবহাওয়া ও মাটি চাষা বাদের উপযোগি হওয়ায় সার বা বিষ কোন কিছু প্রয়োগ করতে হয়না বিদায় চাষিদের কোন খরচ নেই বললে চলে। এদিকে টেকনাফ উপজেলা থেকে সপ্তাহের দুই হাটে ১২-১৫ ট্রাক সুপারি দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রেরন করা হয়। এ উপজেলার সুপারি গুনে মানে উৎকৃষ্ট হওয়ায় বিভিন্ন অঞ্চলে এর বেশ কদর রয়েছে।
সাবরাং নয়াপাড়ার কয়েকটি কৃষকদের সাথে কথা বলে জানায়, সুপারি চাষ একবার ভাল ভাবে চাষ করতে পারলে সারা জীবন আপেলের মত গোলার ফলন ঘরে তুলতে পারে। বর্ষার শেষের দিকে এফল বাজারে বিক্রি করে। একেকটি গাছে ৪-৫ পন (৮০পিস) ফল ধরে। এক পন সুপারি ২০০-২৫০টাকা বিক্রি করে থাকে। সাধারণ লোকজনও বাড়ির খোলা জায়গায় সুপারি চাষ করে সহজেই লক্ষাধিক টাকা আয় করছে। দেখা গেছে, টেকনাফের উন্নয়ন বঞ্চিত কৃষি এলাকা সদর ইউনিয়ন ও সাবরাং ইউনিয়নের অধিকাংশ পরিবার সুপারি থেকে প্রচুর টাকা রোজগার করে থাকে। এর মধ্যে হাজারো পরিবার বর্তমানে এচাষের উপর নির্ভরশীল। তারা অন্য চাষের চাইতে সুপারি গোলা চাষে কল্পনাতীত টাকা আয় করছে। তাই উক্ত এলাকার কৃষকরা বেশী খুশী।
টেকনাফ সদর মহেশ খালিয়া পাড়ার কৃষক আজিম উদ্দিন বলেন , কৃষি অফিসের সহযোগীতা ছাড়াই এখানকার কৃষকরা অন্য চাষ পরিবর্তে বাড়ির আশে পাশে খালি জায়গায় সুপারি চাষ করে আসছে। কৃষি অধিদপ্তরের কারিগরী সহযোগীতা পেলে কৃষকরা আরো বেশী লাভবান হবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আব্দুল লতিফ জানান, আমরা প্রতিনিয়ত কৃষকদেরকে উদ্ধুদ্ধ করে যাচ্ছি। যে কোন চাষে কৃষকদের কারিগরী সহায়তা জন্য আমাদের মাঠ পর্যায়ের উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা নিয়োজিত আছেন।
মন্তব্য করুন