মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ১১:২০ পূর্বাহ্ন
ছবি : সংগৃহীত
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে আরাকান আর্মি ও সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষে মর্টার শেল ও বিস্ফোরণের বিকট শব্দে কাঁপছে কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্ত। ওপারে আকাশপথে যুদ্ধ বিমানের হামলায় বিকট শব্দে এপারে সীমান্তের বসবাসকারীরা ভয়-ভীতির মধ্য রয়েছে।
সোমবার (৮ জুলাই) ভোর থেকে বিকেল পর্যন্ত টেকনাফ উপজেলার ৩টি পয়েন্টে মিয়ানমারের মর্টারশেল-ভারি গোলার বিকট শব্দ পান সীমান্তের মানুষ। এতে সীমান্তের মানুষের শঙ্কা, নতুন করে রোহিঙ্গার পাশাপাশি সেদেশের বিজিপির আরও সদস্যের এপারে অনুপ্রবেশ ঘটতে পারে।
এর আগে শুক্রবার সেন্টমার্টিনে অনুপ্রবেশ করা মিয়ানমারের ২ বিজিপিসহ ৩১ রোহিঙ্গাকে ফেরত পাঠানো হয়।
সরেজমিন দেখা গেছে, টেকনাফ শহর থেকে ১৩ কিলোমিটার দূরে সীমান্ত সড়কের পূর্বে নাফনদের পাড়ে জালিয়াপাড়া। সেখানে এখনো শখানেক পরিবারের পাঁচ শতাধিক মানুষের বসবাস। ওপারে সেদেশে স্পিড বোটের টহল দেখা গেছে।
বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত ঘেঁষা নাফ নদের তীরে দাঁড়িয়ে সম্প্রতি আঙুল তুলে গোলার বিকট শব্দ ভেসে আসার জায়গা দেখানোর চেষ্টা করছিলেন শাহপরীর দ্বীপ সীমান্তের বাসিন্দা জেলে নুর হোসেন (৫৫)।
তিনি বলেন, মিয়ানমারের সীমান্ত ঘেঁষা নাফনাদে জীবনের অর্ধের বেশি সময় পার হয়ে গেছে। এ নাফনদ আমাদের জীবন সঙ্গী। নাফের ওপারে মিয়ানমারে গত ছয়-সাত মাস ধরে যুদ্ধ চলছে সেদেশে। যার ফলে আমাদের জীবনে আতঙ্ক নেমে এসেছে। এখন গোলার বিকট শব্দ সঙ্গী হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেক সময় যুদ্ধ বিমানের হামলাও চোখে পরে। আজকেও চোখে পরেছে যুদ্ধ বিমানের হামলা।
নাফের তীরে শাহপরীর জেটি ঘাটে দোকানি নবী হোসেন বলেন, দীর্ঘদিন পর সেন্টমার্টিন থেকে স্পিড বোটে লোকজন পারাপার করেছে। কিন্তু আজকেও জেটির ওপারে ব্যাপক গুলি বর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। ফলে নাফের তীরে প্রতিদিন গুলির শব্দে সীমান্তের বসবাসকারী মানুষের আতঙ্কের দিন পার করতে হচ্ছে। মাঝেমধ্যে এমন বিকট শব্দ পাওয়া আমাদের ঘরবাড়ি কেঁপে ওঠে।
সীমান্তের বাসিন্দা জলিল মিয়া ও মোহাম্মদ ইসলাম বলেন, সীমান্তের ওপার থেকে ফের গোলার শব্দ পাওয়া গেছে। এভাবে আর কতদিন চলবে এই যুদ্ধ খেলা? আমাদের সীমান্তের লোকজনকে অনেক ভয়ের মধ্য থাকতে হয়।
সীমান্তের গোলার বিকট শব্দ থামেনি উল্লেখ করে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ ইউপি সদস্য আবদুস সালাম বলেন, আজও (সোমবার) সকাল থেকে গোলার শব্দ পাওয়া গেছে। বিকেল পর্যন্ত সীমান্তের মানুষ গোলার বিকট শব্দ পেয়েছেন।
এদিকে সীমান্তে বিজিবি সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বলে জানিয়েছেন টেকনাফ ব্যাটালিয়ন (বিজিবি-২) অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দীন আহমেদ। তিনি বলেন, নতুন করে সীমান্ত দিয়ে যাতে কোনো অনুপ্রবেশের ঘটনা না ঘটে সেজন্য আমাদের টহল জোরদার আছে।
এ বিষয়ে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আদনান চৌধুরী বলেন, সীমান্তে বাসিন্দারা আজকেও ওপার থেকে গোলার বিকট শব্দ পাওয়ার কথা স্বীকার করেছে। তবে আমাদের আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যরা যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত আছে।
সূত্র-কালবেলা।
মন্তব্য করুন