বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ১০:০০ পূর্বাহ্ন

পাহাড় ধ্বসে দু’রোহিঙ্গা মৃত্যু, মেরিন ড্রাইভে যান চলাচলে বিঘ্ন

পাহাড় ধ্বসে দু’রোহিঙ্গা মৃত্যু, মেরিন ড্রাইভে যান চলাচলে বিঘ্ন

অনলাইন বিজ্ঞাপন

ছবি-পাহাড় ধসে মেরিন ড্রাইভে যান চলাচল বন্ধ।

ওয়াহিদুর রহমান রুবেল।।

কক্সবাজারে টানা বৃষ্টিতে বুধবার (৩ জুলাই) ভোরে পাহাড় চাপায় নিহত হয়েছেন দুই রোহিঙ্গা। এতে আহত হয়েছেন আরো বেশ কয়েকজন। এসময় ডজনাধিক ক্যাম্পে জলাবদ্ধতা ও পানিতে শতাধিক শেল্টার ক্ষতির মুখে পড়েছে। বুধবার ভোর রাতে উখিয়ার ক্যাম্প-৪ এক্সটনশনে নতুন করে পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটে বলে ক্যাম্প সূত্রের বরাতে জানিয়েছেন উখিয়া থানায় ওসি মো. শামীম হোসেন।

এরআগে ২২ জুন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পাহাড় ধসে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছিল।

নিহতরা হলো- উখিয়ার ক্যাম্প-১১ ব্লক ১ এফের দিল মোহাম্মদের ছেলে মো. আনোয়ার হোসেন (২১) ও টেকনাফের লেদার মো. আলমের ছেলে মো. সিফাত (১৩)।

একইভাবে, একাধিক স্পটে পাহাড় ধসের মাটির সড়কের উপরে আসায় কক্সবাজার মেরিন ড্রাইভে বেশ কয়েক ঘন্টা যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। রাতের কোন এক সময় পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী বুলডোজার দিয়ে মাটি সরিয়ে বেলা ১১টার যান চলাচল স্বাভাবিক হয় বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের কক্সবাজার রেঞ্জ কর্মকর্তা সমীর রঞ্জন সাহা।

রোহিঙ্গাদের বরাত দিয়ে উখিয়া থানার ওসি শামীম জানান, টানা ভারী বৃষ্টির কারণে বুধবার ভোর রাতে রোহিঙ্গা ক্যাম্প-১১ এফ ১ ব্লক এবং ক্যাম্প-৮ ইস্ট, ব্লক-৪১ বালুখালীতে পাহাড়ের উপরে থাকা শেল্টার ধসে পড়লে মো. আনোয়ার হোসেন মাটিতে চাপা পড়ে মারা যায়। অপরদিকে মো. সিফাত(১৩) তার মামার শেডে বেড়াতে এসে মাটি চাপা পড়ে নিহত হয়। তার বাড়ি টেকনাফের লেদা বলে জানা গেছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার তৎপরতা চালিয়ে লাশ দু’টি উদ্ধার করে।

অপরদিকে, উখিয়ার রোহিঙ্গা ক‍্যাম্প-১ইষ্ট ওয়েষ্ট-৩, ৪, ৬, ৭, ১১, ১২ এবং ২০ এক্স এ বিভিন্ন ব্লকে ভারী বৃষ্টির পানিতে শতাধিক শেল্টার ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। শিকার হচ্ছে জলাবদ্ধতার।

আবহাওয়া অধিদফতর কক্সবাজার স্টেশনের সহকারি আবহাওয়াবিদ আবদুল হান্নান জানান, লঘুচাপের প্রভাবে গত দেড় সপ্তাহ ধরে কক্সবাজার জেলায় বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। মঙ্গলবার সকাল ৬টা হতে বুধবার সকাল ৬টা পর্যন্ত কক্সবাজারে বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে ৭৪ মিলিমিটার। দিনের বেলা বৃষ্টির তীব্রতা কম হলেও মঙ্গলবার মাঝরাত হতে অতিশয় ভারী বর্ষণ হয়েছে। দিনে বৃষ্টিপাত কম হলেও সন্ধ্যার পর থেকে রাতে থেমে থেমে ভারী বর্ষণ অব্যাহত থাকছে। আবহাওয়ার পূর্বাভাস মতে আরো কয়েকদিন অব্যাহত থাকতে পারে বৃষ্টিপাত। সাথে পাহাড় ধ্বসেরও সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান তিনি।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) কক্সবাজার জেলা সভাপতি এইচএম এরশাদ বলেন, গত ২২ জুন পাহাড়ের মাটিচাপায় মারা পড়েছেন রোহিঙ্গা ও স্থানীয় মিলে ১২ জন। সেই ধারায় বুধবার মরলো আরো দুজন। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে এ পাহাড়ধস ও মৃত্যুর ধারা অব্যাহত থাকলে মৃত্যুর মিছিলও দীর্ঘ হতে পারে। তাই সচেতনতা বাড়ানোর তাগাদা দেন তিনি।

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান বলেন, টানা বর্ষণে পাহাড় ধ্বসে মৃত্যু এড়াতে ঝুঁকিপূর্ণ বাসে থাকাদের সরে যেতে মাইকিং করা হয়েছে। ভারী বর্ষণে প্লাবণের আশংকাও রয়েছে। জেলার নদীগুলোতে ঢল নামলে এর ক্ষয়ক্ষতি হতে নিরাপদ থাকার আগাম প্রস্তুতি নিতে ইউএনওদের নির্দেশনা দেয়া রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন ডিসি।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

নিবন্ধনের জন্য আবেদিত
Desing & Developed BY MONTAKIM