বুধবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৪, ০৭:৫৫ পূর্বাহ্ন
ফাইল ছবি।
ওয়াহিদুর রহমান রুবেল।।
ঈদুল ফিতরের মতো ঈদুল আযহাতেও টানা ৫ দিনের ছুটি থাকলেও কক্সবাজারে আশানুরূপ পর্যটক আসেনি। ফলে হতাশ হয়েছে ব্যবসায়ীরা। অথচ ঈদের পরে পর্যটক বরণ করতে প্রস্তুতি নেন পর্যটন শিল্প ব্যবসায়ীরা। এ অবস্থায় লোকসানের বোঝা মাথায় উঠতে পারে বলে আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন তারা। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে পর্যটক হয়রানি বন্ধ করতে কঠোর অবস্থান রয়েছে তাদের।
ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত হলেও কক্সবাজারকে পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে কোন পদক্ষেপ নেয়নি সংশ্লিষ্টরা। সুরক্ষা করা হচ্ছে না পর্যটন স্পটগুলো। সৌন্দর্য্য রক্ষায় গঠিত বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির সদস্যরাও ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ছে। ফলে কক্সবাজার বিমুখ হচ্ছে পর্যটকরা। এ অবস্থায় পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে পারে এমন সব পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করার আহবান জানান তারা।
হোটেল মালিকদের মতে, সৈকত শহরে হোটেল মোটেল রয়েছে চার শতাধিক। এসব হোটেলে দৈনিক প্রায় সোয়া লাখ পর্যটকের রাত যাপনের ব্যবস্থা রয়েছে। ঈদের সময় হোটেলগুলোর প্রায় ৭০ ভাগ বুকিং থাকতো। কিন্তু এবারে দু’একটি হোটেল ছাড়া আর কোন হোটেলে বুকিং হয়নি।
কক্সবাজারের তারকামানের হোটেল সী প্রিন্সেস এর সিনিয়র অফিসার মাজেদুল বশর চৌধুরী সুজন বলেন, যান্ত্রিকতায় থাকা মানুষগুলো সুযোগ পেলেই কক্সবাজার বেড়াতে আসেন। এবারে অন্য হোটেলের কথা বলতে পারবোনা আমাদের হোটেলে আগামী দুই তিন দিন শতভাগ বুকিং রয়েছে। তবে অতীতের মতো ভালো ব্যবসা হচ্ছেনা।
হোটেল সায়মন বীচ রিসোর্টের ফ্রন্ট অফিস অফিসার সারোয়ার আলম বলেন, আমাদের বুকিং সন্তোষজনক। তারপরও শতভাগ বুকিং হয়নি। কতৃপক্ষের নির্দেশে ছাড় ঘোষণা করা হয়েছে। রয়েছে বুফে লাঞ্চ ও ডিনারের ব্যবস্থাও।
ওশান প্যারাডাইস লিমিটেডের পরিচালক আবদুল কাদের মিশু বলেন, পর্যটকদের সেবা দিতেই মুখিয়ে থাকি আমরা। এবারও ব্যতিক্রম ছিলোনা, কিন্তু এত কম পর্যটক আসবে আমরা ভাবিনি । সরকার যে পরিমাণ রাজস্ব আয় করে সেভাবে পর্যটকদের জন্য বিনোদন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারেনি। যার কারণে দিন দিন কক্সবাজার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে ভ্রমণ পিপাসুরা। আমি মনে করি বিষয়টি নিয়ে চিন্তা করার সময় এসে গেছে।
কক্সবাজার ট্যুরস অপারেটর ওনার্স এসোসিয়েশন (টুয়াক)’র সভাপতি রেজাউল করিম’র মতে, আমাদের আশা ছিলো কোরবানির ছুটিতে পর্যটকে ভরে যাবে বেলাভুমি কক্সবাজার। কিন্তু আমরা হতাশ হয়েছি। এত কম পর্যটক আসবে সেটি আমাদের ধারণার বাইরে ছিল।
ঢাকা থেকে বেড়াতে আসা পর্যটক দম্পতি বলেন, বিচ ছাড়া কক্সবাজারে দেখার কি আছে ? একদিনে কক্সবাজারে ঘুরে বেড়ানো যায়। সেন্টমার্টিনও যাওয়া যাচ্ছেনা। তাই কক্সবাজারে আসছেনা পর্যটকরা।
আবাসিক হোটেল মোটেল গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সেলিম নেওয়াজ বলেন, কোরবানির ঈদে পর্যটক এলে আগের লোকসান পুষিয়ে নেয়া যাবে। কিন্তু আমাদের প্রত্যাশা পুরণ হয়নি। এরপরও আশা করছি ঈদের ১-২ দিন পর পর্যটক সমাগম বাড়বে।
এদিকে পর্যটকদের নিরাপত্তা জোরদারে বিষয়ে ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার রিজিয়ন প্রধান অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মাহমুদ বলেন, পর্যটক যাই আসুক ছুটির দিনগুলোতে কঠোর নিরাপত্তা বলয় থাকে আমাদের। ছুটি শেষ না হওয়া পর্যন্ত কক্সবাজার থেকে টেকনাফ ও ইনানীতে সচেষ্ট থাকবে ট্যুরিষ্ট পুলিশ।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট (এডিএম) মো. ইয়ামিন হোসেন বলেন, পর্যটকদের সুযোগ সুবিধার বিষয় নিয়ে জেলা প্রশাসন কাজ করছে। ছুটির দিনে পর্যটকদের নিরাপত্তায় মাঠে রয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালতের টিম
মন্তব্য করুন