মঙ্গলবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:২৭ অপরাহ্ন
এস.এম.ছগির আহমদ আজগরী পেকুয়া
কক্সবাজারের পেকুয়ায় নিধন হচ্ছে সামাজিক বনায়নের বৃক্ষ। অজ্ঞাত গাছ চোর সিন্ডিকেট অবাধে বাগানের গাছ লুঠের খবর পাওয়া গেছে। বনবিভাগের উদাসীনতার ফলে উপজেলার টৈটং ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে নিধন হচ্ছে সরকারি বনভুমি। গাছ চোর সিন্ডিকেটের দৌরাত্মা বেড়ে যাওয়ায় চট্টগ্রাম দক্ষিন বন বিভাগের আওতাধীন টৈটংয়ের পাহাড়গুলো নিধন হচ্ছে নির্বিচারে। সামাজিক বাগানের উপকারভোগীদের পরিশ্রমের ফসল বাগান সম্প্রতি হুমকির মধ্যে পড়েছে। এরই মধ্যে টৈটং ইউনিয়নের মধুখালী এলাকায় এক প্রবাসীর সৃজিত ৫২একর বনায়ন থেকে নির্বিচারে লুট করা হচ্ছে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ। পরিকল্পিত বনায়নের আওতায় ওই এলাকার হাজ্বী মনির আহমদের পুত্র নুরুল হক উপকারভোগী হিসেবে ওই ৫২একর বনবিভাগের জায়গাতে বাগান সৃজন করেন। বিগত ১৮বছর পুর্বে ওই ব্যক্তি মধুখালী এলাকার দুর্গম পাহাড়ের বড়জিরি পইরগ্যাখোলা নামক স্থানে পরিকল্পিত বাগানের আওতায় কয়েক হাজার বৃক্ষ রোপন করেন।
এরই মধ্যে ফলজ ও বনজ এবং ঔষুধি গাছ গাছালিও রয়েছে। বনজ বৃক্ষ গুলো অধিকাংশ বিক্রি উপযুক্ত হয়েছে। ফলে বিশাল বাগানের বর্ধনশীল বৃক্ষগুলোর প্রতি লোলুপ দৃষ্টি পড়ে অজ্ঞাত গাছ চোর সিন্ডিকেটের। জানাগেছে, নুরুল হক বর্তমানে জীবিকার জন্য সৌদিআরবে অবস্থান করছেন। এতে ওই বাগানের গাছ গুলো কর্তন করতে উৎসাহী হয়েছেন ওই চক্র। সম্প্রতি মধূখালীতে গাছ নিধনের মহোৎসব চলছে। কিছু পেশাদার গাছ চোর অবাধে পাহাড় থেকে পাচার করছে শত শত গাছ। আর এসব গাছগুলো তারা বিভিন্ন প্রান্তে বীর দর্পে বিক্রি করে হাতিয়ে নিচ্ছেন লাখ লাখ টাকা। এরই ফলে একদিকে নিধন হচ্ছে পাহাড়। অপরদিকে নি:স্ব হচ্ছেন সামাজিক বাগানের উপকারভোগীরা। এদিকে গাছ পাচারের পাশাপাশি ওই চক্রটি বাগানের মালিকদের সৃজিত বাগানের ভুমিও তাদের লোলুপ দৃষ্টির মধ্যে পড়েছে। নি¤œাঞ্চলের মানুষগুলো এক খন্ড বসতির জায়গা খোঁজতে এখন পাহাড়ের দিকে ঝুঁকছেন। বনভুমি সরকারের হলেও এর নিয়ন্ত্রক ওই চক্র। তারা বহিরাগত লোকদের বসতি সৃষ্টির জন্য টাকা নিচ্ছেন লাখ লাখ। এভাবে বন নিধন ও পাহাড়ের ভুমি দখল অব্যহত রয়েছে পেকুয়ায়। টৈটং মধূখালীসহ বিভিন্ন পাহাড় অবৈধ অভিবাসনদের নিয়ন্ত্রনে চলে গেছে। বনবিভাগ এনিয়ে কোন ধরনের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহনে সম্পুর্ন ব্যর্থ হয়েছে। তবে মাঝে মধ্যে কিছু কিছু নাম মাত্র উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে। এসবও প্রভাবশালীদের বেলায় হয়না। অধিকিন্তু অভিযান হয়ে থাকে দুর্বলের প্রতি।
টৈটংয়ের মধূখালীতে সৌদি প্রবাসী নুরুল হকের সৃজিত ৫২একর বৃক্ষ এখন হুমকির মুখে। লাখ লাখ টাকা ব্যয় করে ওই বাগান সৃজন করেছেন তিনি। কিন্তু সম্প্রতি কাল হয়েছেন ওই গাছ চোর সিন্ডিকেট। তার বৃক্ষ নিধন ছাড়াও ৫২একর বনভুমি অবৈধ দখল নিতে চেষ্টা চলছে। এবিষয়ে প্রবাসী নুরুল হকের স্ত্রী মোতাহেরা বেগম জানিয়েছেন, বাগানের এখন যে অবস্থা হয়েছে মনে হচ্ছে রোদ না হলে কয়েকদিনের মধ্যে গাছ সমুলে বিনাশ হবে। এব্যাপারে টৈটং ইউপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান কবির আহমদ বলেন, উপকারভোগীদের বাগান সংরক্ষনের জন্য আমাদের পক্ষ থেকে স্থানীয়দের নিয়ে সচেতনতা মুলক বিভিন্ন প্রোগ্রাম হয়ে আসছে। বনবিভাগকে পাহাড় রক্ষায় আরো নজরদারি বাড়াতে হবে। জানতে চাইলে চট্টগ্রাম দক্ষিন বনবিভাগের বারবাকিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা উত্তম কুমার পাল বলেন, বনবিভাগের লোকবল কম। এসুযোগে গাছ চোর সিন্ডিকেট প্রতিনিয়ত সামাজিক বনায়নের গাছ রাতের আধারে চুরি করছে। বনবিভাগ গাছ চোরদের চিহ্নিত করে মামলা করার প্রস্তুতি চলছে।
মন্তব্য করুন