বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ১০:২৯ পূর্বাহ্ন
ফাইল ছবি।
ওয়াহিদুর রহমান রুবেল,
আরমাত্র কয়েকদিন পরে পবিত্র রমজান শেষে পবিত্র ঈদুল ফিতর। এবারে ঈদের ছুটির সাথে যোগ হয়েছে পহেশা বৈশাখ। এ সময়ে পর্যটকে ভরপুর থাকে কক্সবাজার। এবারে ঈদ ও পহেলা বৈশাখের টানা ছুটির থাকলেও কক্সবাজারে আশানুরূপ পর্যটক আসার সম্ভবনা কম। ঈদের আগ মুহূর্তে এসেও হোটেল মোটেলগুলোতে আগাম বুকিং নেই পর্যাপ্ত। অথচ বিগত সময় ৮০ ভাগ হোটেল বুকিং থাকতো। টানা ৫দিন ছুটিতে কেবল তারকা মানের হোটেলগুলোতে ১২, ১৩ ও ১৪ এপ্রিল বুকিং ৮০-৯০ শতাংশ হলেও অন্যান্য হোটেলগুলোতে বুকিং মাত্র ৪০ ভাগ। বাকি দিনগুলো উল্লেখ করার মতো বুকিং নেই। ফলে এ সময়টাতে ছাড় দিয়েও বুকিং এ আশানুরূপ সাড়া পাচ্ছে না বলে দাবি হোটেল কর্তৃপক্ষের।
কক্সবাজার হোটেল গেস্ট হাউজ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সেলিম নেওয়াজ বলেন, প্রতি বছর ঈদ ও দিবস ভিত্তিক ছুটিতে লাখো পর্যটকে সরগরম হয় কক্সবাজার। এবারো আমাদের আশা আগের মতোই পর্যটক সমাগম হবে। কিন্তু চৈত্রের দাবদাহে পুড়ছে সারা দেশ। এ কারণে, আশানুরূপ পর্যটক আসবে কি না- সন্দেহ রয়েছে।
তবে, পর্যটন ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন ঈদের আগেই হয়তো আরও কিছু বুকিং হতে পারে। এ অবস্থা চললে এবারের ঈদে ব্যবসা মন্দা হতে পারে বলে আশঙ্কা তাদের।
অতীতের মতো পর্যটকদের নিরাপত্তায় সবধরণের প্রস্তুতি সম্পন্ন করার কথা জানিয়েছে ট্যুরিস্ট পুলিশ। আর পর্যটক হয়রানি বন্ধে ভ্রম্যমান আদালত পরিচালনার কথা জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।
এদিকে ঈদের ছুটিতে আসা পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানকে নতুন করে সাজাতে ব্যস্ত ব্যবসায়ীরা। হোটেলের ভেতর-বাহিরে রং ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাসহ সব দিকে খেয়াল রাখছেন কর্তৃপক্ষ।
কক্সবাজার হোটেল, গেস্ট হাউজ ও রিসোর্ট মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার বলেন, বিগত সময়গুলোতে রোজার ১৫ দিনের মধ্যে হোটেলের ৬০ ভাগ কক্ষ বুকিং হতো। এবারে চৈত্রের দাবদাহের কারণে সেই পারসেন্টিস কম। তারপরও আমরা আশাবাদী ব্যবসা ভাল হবে। পর্যটকদের পরিচ্ছন্ন আবহ দিতে হোটেল-মোটেলগুলোকে পরিষ্কার করা হচ্ছে। তবে, বিগত সময়ের হিসেবে করলে এবারে ঈদের মৌসুমে তেমন একটা ব্যবসা নাও হতে পারে।
ওশান প্যারাডাইসের পিআরও সায়ীদ আলমগীর বলেন, ঈদ বলে নয়, আমরা সব সময় পর্যটকদের সেবা দিতে প্রস্তুত থাকি। তবে এবারের ঈদের আগে পরে শুক্রবার শনিবারসহ প্রায় দশ দিনের ছুটি থাকলেও ব্যবসা হতে পারে দুইতিন দিন। এখনো হোটেল কক্ষের তেমন বুকিং না হলেও ১২ এপ্রিল থেকে ১৪ এপ্রিল তিন দিন ৮০শতাংশ বুকিং রয়েছে আমাদের।
হোটেল দি সী প্রিন্সেস’র ম্যানেজার মাজেদুল বশর চৌধুরী সুজন বলেন, ঈদের সময়ও রুম ভাড়ায় ৩০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দেয়া হয়েছে। তারপরও বুকিং কম। এতে ব্যবসায়ীরা হতাশ। তবে এখনো আমরা আশাবাদী ছুটিতে পূর্বের ন্যায় পর্যটক আসবে কক্সবাজার।
এদিকে, পর্যটকের নিরাপত্তায় কঠোর অবস্থানের কথা জানিয়েছে ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার জোনের দায়িত্বপ্রাপ্ত অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মাহমুদ বলেন, পর্যটকের সেবা নিশ্চিত ও নিরাপত্তায় সচেষ্ট রয়েছে ট্যুরিস্ট পুলিশ। পর্যটন সংশ্লিষ্ট সকলের সাথে বৈঠক হয়েছে। আগত অতিথিদের ভালো অনুভূতি দিতে প্রস্তুত সবাই। পর্যটন স্পটগুলো এবং সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে পয়েন্টে পোশাকধারীদের পাশাপাশি সাদা পোশাকেও শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা থাকবে। সবজায়গায় থাকবে মনিটরিং।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. ইয়ামিন হোসেন বলেন, পর্যটকদের হয়রানি বন্ধে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেয়া আছে জেলা প্রশাসনের। কোন হোটেলে অতিরিক্ত ভাড়া কিংবা চালকের হাতে হয়রানির অভিযোগ পেলে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মন্তব্য করুন