মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ ২০২৫, ০২:৪২ অপরাহ্ন
ফাইল ছবি-নিহত বন কর্মকর্তা সাজ্জদ হোসেন।
কক্সবাজারের উখিয়ায় সংরক্ষিত বনের পাহাড় কেটে মাটি পাচার রদ করতে গিয়ে পাহাড় খেকোদের ড্রাম্প ট্রাকের চাপায় বনবিট কর্মকর্তা নিহতের ঘটনায় ১০ জনের নাম উল্লেখ করে ১৫ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে। এ ঘটনায় এজাহারভূক্ত এক আসামিকে গ্রেপ্তারও করেছে পুলিশ। সোমবার (১ এপ্রিল) বিকেলে বনবিভাগের উখিয়া রেজ্ঞ কর্মকর্তা গাজী শফিউল আলম বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন বলে জানিয়েছেন উখিয়া থানার ওসি মো. শামীম হোসেন।
এদিকে, সহকর্মী হত্যার প্রতিবাদে মঙ্গলবার দুপুরে কক্সবাজারে প্রতিবাদ সভা ও মানববন্ধনের আয়োজন করেছে বনকর্মী-কর্মকর্তারাগণ, এমনটি জানিয়েছেন নিহত সজলের ব্যাচমেট হিমছড়ি বিট কর্মকর্তা কামরুজ্জামান শোভন।
হত্যা মামলার আসামিরা হলেন, উখিয়া উপজেলার রাজাপালং ইউনিয়নের পশ্চিম হরিণমারা এলাকার মোহাম্মদ কাশেমের ছেলে ও ডাম্পার ট্রাকটির চালক মো. বাপ্পী (২৩), একই এলাকার সুলতান আহম্মদের ছেলে ছৈয়দ আলম ওরফে কানা ছৈয়দ (৪০) ও তার ছেলে মো. তারেক (২০), রাজাপালং ইউনিয়নের তুতুরবিল এলাকার নুরুল আলম মাইজ্জার ছেলে হেলাল উদ্দিন (২৭), হরিণমারা এলাকার মৃত আব্দুল আজিজের ছেলে ছৈয়দ করিম (৩৫), একই এলাকার আব্দুল আজিজের ছেলে আনোয়ার ইসলাম (৩৫), আব্দুর রহিমের ছেলে শাহ আলম (৩৫), হিজলিয়া এলাকার ঠান্ডা মিয়ার ছেলে মো. বাবুল (৫০), একই এলাকার ফরিদ আলম ওরফে ফরিদ ড্রাইভারের ছেলে মো. রুবেল (২৪) এবং হরিণমারা এলাকার শাহ আলমের ছেলে কামাল উদ্দিন ড্রাইভার (৩৯)।
মামলায় অজ্ঞাতনামা আর ৫/৬ জনকে আসামি করা হয়েছে। এদের মধ্যে গ্রেপ্তার হয়েছে, এজাহারভূক্ত ৫ নম্বর আসামি ছৈয়দ করিম (৩৫)।
রোববার ভোররাত সাড়ে ৩টার দিকে উখিয়া উপজেলার রাজাপালং ইউনিয়নের হরিণমারা এলাকায় পাহাড় কেটে মাটি পাচার করছিল একদল পাহাড়খেকো। খবর পেয়ে বনবিভাগের দোছড়ি বিটের কর্মকর্তা মো. সাজ্জাদুজ্জামান সজল (৩০) সহ কয়েকজন বনকর্মি ঘটনাস্থলে যান। এসময় তিনিসহ মোটর সাইকেল আরোহী দুইজনকে পাচারকারিদের মাটিভর্তি ডাম্পট্রাক চাপা দেয়। এতে সাজ্জাদুজ্জামান ঘটনাস্থলে মারা যান এবং মোহাম্মদ আলী নামের এক বনরক্ষী আহত হন।
নিহত সাজ্জাদুজ্জামান সজল (৩০) কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের উখিয়া রেঞ্জের দোছড়ি বনবিটের বিট কর্মকর্তার দায়িত্বে ছিলেন। তিনি মুন্সিগঞ্জ জেলার গজারিয়া উপজেলার মোহাম্মদ শাহজাহানের ছেলে।
ঘটনায় আহত বনরক্ষী মোহাম্মদ আলী (২৭) টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের ঝিমংখালী এলাকার আবুল মজ্ঞুরের ছেলে।
ওসি শামীম হোসেন বলেন, রোববার রাতে বনবিভাগের উখিয়া রেজ্ঞের এক কর্মকর্তা নিহতের ঘটনায় রেঞ্জার বাদী হয়ে ১০ জনের নাম উল্লেখসহ ১৫ জনকে আসামি করে থানায় এজাহার দায়ের করেন। পরে পুলিশ মামলাটি নথিভূক্ত করে।
ঘটনার পর থেকে পুলিশ জড়িতদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু করেছে। সোমবার ভোরে রাজাপালং ইউনিয়নের হরিণমারা এলাকায় অভিযান চালিয়ে এজাহারভূক্ত ৫ নম্বর আসামি ছৈয়দ করিমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মামলার অপর আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে উল্লেখ করেন ওসি।
অপরদিকে, রবিবার দুপুরে বিভাগীয় বন কার্যালয়ে প্রথম জানাজা শেষে নিহত সজলকে নিজ বাড়ি মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে পৌঁছার পর এশার নামাজের পর দ্বিতীয় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন