বৃহস্পতিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৭:২৩ অপরাহ্ন

ডেঙ্গু প্রকোপ বাড়ছে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আটমাসে আক্রান্ত ১০৯৭৭ জন, মৃত-১১

ডেঙ্গু প্রকোপ বাড়ছে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আটমাসে আক্রান্ত ১০৯৭৭ জন, মৃত-১১

অনলাইন বিজ্ঞাপন

ফাইল ছবি।

 

 

ওয়াহিদ রুবেল

এডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু প্রকোপ ক্রমেই মারাত্মক আকার ধারণ করছে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে। চলতি বছরে আটমাসে জেলায় আক্রান্ত রোগীর ১২৭৩৮ জনের মধ্যে ১০৯৭৭ জনই রোহিঙ্গা। এ পর্যন্ত মৃত ১৩ জনের মধ্যে ১১ জনই রোহিঙ্গা। আক্রান্তের হার ৮৬ দশমিক ১৮ শতাংশ। অথচ ২০২২ সালে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১৭৩৯০ জন। ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিন হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে অসংখ্য রোগী। ক্যাম্প ছাড়িয়ে দ্রæত কক্সবাজারের প্রত্যান্ত অঞ্চলেও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে ডেঙ্গু। তবে এ রোগে আক্রান্ত হয়েছেন ২০৩৮ জন স্থানীয় বাসিন্দা। আক্রান্তের মধ্যে ৬১ ভাগ রোগীই পুরুষ। আর ৫ ভাগ শিশু। বয়সের ভিত্তিতে ১৯ থেকে ৪০ বছর বয়সের আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা শতকরা ৫৯ ভাগ।

কক্সবাজার জেলা সিভিল সার্জন অফিসের কর্মকর্তা শাহ ফাহিম আহমদ ফয়সাল জানান, জানুয়ারি মাসে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ১৭১ জন। কয়েক মাসের ব্যবধানে এটি লাফিয়ে আগস্ট মাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৫৫৯১ জন। সর্বশেষ সেপ্টম্বর মাসের ১২ তারিখ পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮৪৬ জনে। প্রতিদিন আক্রান্তের সংখ্যা যেন জ্যামিতিক হারে বাড়ছে। আর এতে চাপ বাড়ছে সরকারি বেসরকারি সব হাসপাতালে।

তথ্য মতে, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সব থেকে বেশি আক্রান্ত হয়েছে ক্যাম্প-৩ এ ২ হাজার ৪৭৫ জন, ক্যাম্প-৪’ এ ৮২৯ জন, ক্যাম্প- ১/ডবিøউ ৮১৮ জন, ক্যাম্প-৯’ এ ৬১০ জন, ক্যাম্প-১/ই তে ৫১৫ জন ও ক্যাম্প ১১ তে ৪৮১ জনসহ চলতি বছরে ক্যাম্পে ১০৯৭৭ জন রোহিঙ্গা আক্রান্তের হয়েছেন। ক্রমেই এ সংখ্যা বিভিন্ন ক্যাম্পে ছড়িয়ে পড়তে পারে উদ্বেগজনক হরে। আর কক্সবাজারে উপজেলা ভিত্তিক আক্রান্তের মধ্যে সবচেয়ে বেশি কক্সবাজার পৌরসভায় ৪০৮ জন। এছাড়াও টেকনাফ ৩৩৩ জন, চকরিয়ায় ২৮০ জন, উখিয়ায় ২০৯ জন, মহেশখালী ১৬৭জন, সদর ১৫২ জন, রামুতে ১২০, পেকুয়ায় ৩০ এবং কুতুবদিয়ায় ১৩ জন রোগী আক্রান্ত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে জেলা আইন শৃঙ্খলা কমিটির এক সভায় কক্সবাজার পৌরসভার ড্রেন নিয়মিত পরিষ্কার রাখাসহ কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

সম্প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) মশাবাহিত ডেঙ্গু রোগের বিস্তার জলবায়ু পরিবর্তনকে আংশিকভাবে দায়ী করে বলেছে, বাংলাদেশে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব রেকর্ডের সবচেয়ে ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। তবে এ রোগের লক্ষ্যণ দেখা দিলে আতংকিত না হয়ে দ্রæত চিকিৎসকের পরামর্শে সেবা গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা।

কক্সবাজার জেলা সিভিল সার্জন অফিসের কর্মকর্তা শাহ ফাহিম আহমদ ফয়সাল (রোগ নিয়ন্ত্রণ) বলেন, মশাবাহিত এ রোগটি এপ্রিল টু সেপ্টম্বর ডিজিজ হিসেবে আমাদের কাছে পরিচিত। সংখ্যা হিসেবে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আক্রান্তের সংখ্যাটা অনেক। তবে গেল সপ্তাহে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আক্রান্তের সংখ্যা কমে আসছে। কিন্তু স্থানীয়দের আক্রান্তের সংখ্যা কমেনি। এ রোগ থেকে মক্তি পেতে হলে শুধু স্বাস্থ্য বিভাগের উপর নির্ভর নির্ভর না হয়ে সকল বিভাগের সমন্বয়ে জন সচেতনতা বাড়াতে হবে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ডোর টু ডোর সচেতনতা কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

তিনি বলেন, রোগের সেবা দিতে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে ১০ জন চিকিৎসক টেলিমেডিসিন সেবা দিচ্ছেন। একই সাথে জেলা সদর হাসপাতালে পৃথক ডেঙ্গু ওয়ার্ড এবং উপজেলা পর্যায়ে ডেঙ্গু কর্ণার করা হয়েছে।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান বলেন, ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সচেতনতার পাশাপাশি পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার জন্য জেলাব্যাপী ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করা হবে।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

নিবন্ধনের জন্য আবেদিত
Desing & Developed BY MONTAKIM