শুক্রবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৭:২৬ পূর্বাহ্ন

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলা বাতিলের সুযোগ নেই : আইনমন্ত্রী

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলা বাতিলের সুযোগ নেই : আইনমন্ত্রী

অনলাইন বিজ্ঞাপন

জাতীয় সংসদ ও ইনসেটে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। ছবি: সংগৃহীত

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন রোহিত করে সাইবার নিরাপত্তা আইন পাস করা হয়েছে। তবে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা মামলা বাতিলের সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) জাতীয় সংসদে গণফোরামের সংসদ সদস্য মোকাব্বির খানের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান। ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকুর সভাপতিত্বে টেবিলে প্রশ্নোত্তর উপস্থাপন করা হয়।

গণফোরামের সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান তার প্রশ্নে বলেন, বাতিল হওয়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপপ্রয়োগে যারা বিভিন্ন ধরনের হয়রানি, জেল-জুলুমের শিকার হয়েছেন; এখনো অনেকেই কারাগারে আছেন, তাদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে কি না? একইসঙ্গে বিষয়গুলো কীভাবে নিষ্পত্তি করা হবে তাও জানতে চান তিনি।

প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা মামলা বাতিল করার সুযোগ নেই। এ সংক্রান্ত বিষয়ে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রশ্নই আসে না। এ আইন বাতিল করে সাইবার নিরাপত্তা বিল পাস হয়েছে। রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরের পরে গেজেট হলে বিলটি আইনে পরিণত হবে। নতুন আইনে বলা হয়েছে, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা মামলাগুলো চলমান থাকবে।

তিনি বলেন, আইনের অবস্থান হলো যেসব অপরাধ পুরোনো আইনে করা হয়েছে, সেই পুরোনো আইনে যে শাস্তি, আদালত সেই শান্তি অপরাধীকে প্রদান করবে। আমাদের সংবিধানের ৩৫ অনুচ্ছেদে বিচার ও দণ্ড সম্পর্কে রক্ষণ সংক্রান্ত যে বিধান রয়েছে তাতে উল্লেখ করা হয়েছে- ‘অপরাধের দায়যুক্ত কার্য সংঘটনকালে বলবৎ ছিল, এইরূপ আইন ভঙ্গ করিবার অপরাধ ব্যতীত কোনো ব্যক্তিকে দোষী সাব্যস্ত করা যাইবে না। অপরাধ- সংঘটনকালে বলবৎ সেই আইনবলে যে দণ্ড দেওয়া যাইতে পারিত, তাহাকে তাহার অধিক বা তাহা হইতে ভিন্ন দণ্ড দেওয়া যাইবে না’।

আনিসুল হক বলেন, সাইবার নিরাপত্তা আইনে রহিতকরণ ও হেফাজত সংক্রান্ত বিধান হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অধীন দায়ের করা অভিযোগ ও তৎসংক্রান্ত অন্যান্য কার্যক্রম বা সূচিত কোনো কার্যধারা বা দায়ের করা কোনো মামলা বা আপিল যেকোনো পর্যায়ে অনিষ্পন্ন থাকলে উক্ত কার্যধারা বা আপিল এমনভাবে চলমান থাকবে যেন তা সাইবার নিরাপত্তা আইনের অধীন সূচিত বা দায়েরকৃত।

উল্লেখ্য, গতকাল বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বিনা পরোয়ানায় তল্লাশী ও গ্রেপ্তারের ক্ষমতা রেখেই বহুল আলোচিত ‌’সাইবার নিরাপত্তা বিল-২০২৩’ পাস হয়েছে। তবে এতে মিথ্যা মামলা দায়ের করলে সেটাকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করে সাজার বিধানও রাখা হয়েছে।

সংসদের বৈঠকে বিলটি পাসের জন্য উত্থাপণ করেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। বিলের ওপর আনা বিরোধী সদস্যদের জনমত যাচাই, বাছাই কমিটিতে প্র্রেরণ এবং সংশোধনী প্রস্তাবগুলো নিস্পত্তি শেষে বিলটি কণ্ঠভোটে পাস হয়।

দেশ-বিদেশে ব্যাপক সমালোচনার মুখে বিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন রহিত করে সরকার সাইবার নিরাপত্তা আইনের উদ্যোগ নেয়। গত ৫ সেপ্টেম্বর বিলটি সংসদে উঠার পর পরীক্ষা-নীরিক্ষার জন্য সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়।

আইনটির খসড়া প্রকাশের পর থেকেই মানবাধিকারকর্মী ও সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠন বলে আসছে, সাইবার নিরাপত্তা আইনও কার্যত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মূল বিষয়বস্তু বহাল রাখা হচ্ছে।

ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের মত্ইো এই আইনের অপব্যবহারের আশঙ্কা ব্যক্ত করে তারা বলছেন, প্রস্তাবিত আইনে কিছু ক্ষেত্রে সাজা কমানো ও জামিনযোগ্য ধারা বাড়ানো হলেও অপরাধের সংজ্ঞা সুনির্দিষ্ট করা হয়নি। ফলে মানুষকে হয়রানি করার সুযোগ থেকেই যাবে।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

নিবন্ধনের জন্য আবেদিত
Desing & Developed BY MONTAKIM