সোমবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৫, ০১:০৮ পূর্বাহ্ন
ওয়াহিদুর রহমান রুবেল
মিয়ানমার সীমান্ত থেকে দেশটির নৌ-বাহিনীর হাতে উদ্ধার হওয়া আরো ৪৮ জন অভিবাসন প্রত্যাশী বাংলাদেশী নাগরিককে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। বুধবার দুপুর ২ টায় বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম সীমান্ত এলাকার বাংলাদেশ-মিয়ানমার মৈত্রী সেতু দিয়ে তাদের প্রত্যাবাসন করা হয়। এ নিয়ে সাত দফায় মোট ৭৭৭ জন অভিবাসন প্রত্যাশী বাংলাদেশী নাগরিককে মিয়ানমার থেকে দেশে ফিরিয়ে আনা হলো।
এর আগে যথারীতি বাংলাদেশ-মিয়ানমার মৈত্রী সেতুর বিপরীতে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সীমান্ত পিলার-৩০/১ এর সন্নিকটে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও মিয়ানমারের মংডুর ইমিগ্রেশন এন্ড ন্যাশনাল রেজিষ্ট্রেশন ডিপার্টমেন্ট এর মধ্যে ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক পর্যায়ে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের পক্ষের নেতৃত্ব দেন ১৭ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল ইমরান উল্লাহ সরকার এবং মিয়ানমারের পক্ষে নেতৃত্ব দেন মংডুর ইমিগ্রেশন এন্ড ন্যাশনাল রেজিষ্ট্রেশন ডিপার্টমেন্ট এর উপপরিচালক স নাইং। এছাড়াও বৈঠকে বিজিবি কক্সবাজার সেক্টর-এর অতিরিক্ত পরিচালক (অপারেশন) মেজর মুহাম্মদ আমিনুল ইসলাম এবং কক্সবাজার জেলা প্রশাসন, কক্সবাজার জেলা পুলিশ ও ইমিগ্রেশন পুলিশের প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। অপরদিকে মিয়ানমার পক্ষে উপস্থিত ছিলেন মিয়ানমার ইমিগ্রেশন, বিজিপি এবং স্থানীয় জেলা প্রশাসনের প্রতিনিধিবৃন্দ। বৈঠকের পর ৪৮ জন অভিবাসন প্রত্যাশী বাংলাদেশী নাগরিককে হস্তান্তর করা হয়।
বৈঠক শেষে বাংলাদেশ ভূখন্ডে ফিরে ১৭ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক বাংলাদেশ পক্ষে নেতৃত্ব দেন লেঃ কর্ণেল ইমরান উল্লাহ সরকার জানিয়েছেন, বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গৃহীত সিদ্ধান্ত মোতাবেক সপ্তম দফায় যাচাইকৃত ৪৮ জন বাংলাদেশী নাগরিককে আজ প্রত্যাবাসন করা হয়েছে। তাদেরকে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ এবং ইমিগ্রেশন বিভাগের প্রতিনিধিদের উপস্থিতি’তে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে গ্রহণ করে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন ও জেলা পুলিশের কাছে পরবর্তী আইনগত প্রক্রিয়া সম্পাদনের জন্য হস্তান্তর করা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইএমও) ন্যাশনাল প্রোগ্রাম অফিসার আসিফ মুনীর জানিয়েছেন, আজ ফেরত আনা বাংলাদেশী নাগরিকদের মধ্যে কুষ্টিয়া জেলার ২, কক্সবাজার জেলার ১৮, যশোর জেলার ১১, টাঙ্গাইল জেলার ৪, নারায়নগঞ্জ জেলার ২, বগুড়ার ৩, সিরাজগঞ্জের ৩ জন এবং খুলনা, নোয়াখালী, নওগা, কিশোরগঞ্জ ও গোপালগঞ্জ জেলার এক জন করে বাসিন্দা রয়েছেন। তাদের মধ্যে ৫ জন শিশুও রয়েছে। তাদের মধ্যে এক জনের বয়স ১৩ বছর। বাকি ৪ জনের ১৫ থেকে ১৭ বছর বয়স বলে নিশ্চিত করেছেন অভিবাসন সংস্থা।
প্রসঙ্গত, ইতোপূর্বে ৬ দফায় মোট ৭২৯ জন বাংলাদেশী নাগরিককে মিয়ানমার থেকে ফিরিয়ে আনা হয়েছিলো। গত ৮ জুন ১৫০ জন, ১৯ জুন ৩৭ জন, ২২ জুলাই ১৫৫ জন, ১০ আগস্ট ১৫৯ জন, ২৫ আগস্ট ১২৫ জন এবং ১২ অক্টোবর ১০৩ জনকে ফেরত আনা হয়।
মন্তব্য করুন