বুধবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৬:১৯ অপরাহ্ন

বাহিনী প্রধান মঞ্জুসহ র‌্যাবের হাতে আটক ৭ জলদুস্য

বাহিনী প্রধান মঞ্জুসহ র‌্যাবের হাতে আটক ৭ জলদুস্য

অনলাইন বিজ্ঞাপন

ছবি-র‌্যাবের হাতে আটক সাত জলদুস্য।

 

 

ওয়াহিদ রুবেল।।

কক্সবাজারের নাজিরারটেকে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে র‌্যাব-১৫ এর হাতে গ্রেফতার হয়েছে জলদস্যু মঞ্জু বাহিনীর প্রধান মঞ্জুর আলম ও তার বাহিনীর উপপ্রধানসহ সাত ডাকাত। এ সময় তাদের কাছ থেকে আগ্নেয়াাস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়।

রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) ভোরে র‌্যাব-১৫ সদস্যরা এ অভিযান চালায় বলে দুপুরে কক্সবাজার র‌্যাব-১৫ এর সদর কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়ক লে.কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন এসব তথ্য জানান।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন, মহেশখালীর কুতুবজেম ইউনিয়নের সোনাদিয়া গ্রামের মৃত বাহদুর মিয়ার ছেলে শীর্ষ জলদস্যু মোঃ মঞ্জুর আলম প্রকাশ মঞ্জু (৩৮)। তার বিরুদ্ধে ডাকাতিসহ ৯ টি মামলা রয়েছে। চট্টগ্রাম বাঁশখালী ছনুয়া ইউনিয়নের ছনুয়া এলাকাট আবু তাহেরের ছেলে মোঃ বাহার উদ্দিন বাহার মাহবুব (৩২), কুতুবদিয়া উপজেলার আলী আকবর ডেইল ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের কালুয়ার ডেইল এলাকার মৃত সামছুল আলমের ছেলে মকছুদ আলম (৩২), পেকুয়ার মগনামা ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের কাকপাড়া এলাকার বাসিন্দা মৃত সৈয়দুল করিমের ছেলে মোঃ তোফায়েল (২১), চকরিয়া বরইতলী ৩ নং ওয়ার্ডের পূর্ব মহাজেরপাড়ার বাসিন্দা বদিউল আলমের ছেলে মোঃ দিদার (৩০), চট্টগ্রাম হাটহাজারী মাদ্রসা ইউনিয়নের তেহমনও এলাকার মৃত ইছহাকের ছেলে ইকবাল হোসেন (৩৫), এবং উত্তর কুতুবদিয়া পাড়ার ইয়ার মোহাম্মদের ছেলে মোহাম্মদ রাশেদ (২৭)।

র‌্যাব-১৫ এর অধিনায়ক লে.কর্নেল সাজ্জাদ হোসেন বলেন, কক্সবাজার পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডস্থ নাজিরারটেক মোস্তাকপাড়া বাজারের উত্তর পশ্চিম মাছ ঘাট এলাকায় দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে ডাকাতির প্রস্তুতি নিয়েছে মঞ্জুর বাহিনী। এমন তথ্যের ভিত্তিতে ১০ সেপ্টেম্বর ভোরে র‌্যাবের একটি দল উক্ত স্থানে অভিযান চালায়। র‌্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে পালানোর সময় কুখ্যাত জলদস্যু সর্দার মঞ্জুরসহ তার বাহিনীর ৭ ডাকাত গ্রেফতার হয়। পরে তাদের কাছ থেকে ৩টি দেশীয় তৈরী বন্দুক, ৪ রাউন্ড কার্তুজ, ৩ রাউন্ড এ্যামুনিশন, ২টি কিরিচ, ২টি সুইচ গিয়ার চাকু, ২টি টর্চ লাইট এবং ৭টি বাটন মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
অধিনায়ক বলেন, কক্সবাজারে বেশ কিছু জলদস্যু গ্রæপ সক্রিয় রয়েছে। তারা জেলার বিভিন্ন স্থানের সক্রিয় অপরাধী এবং চট্টগ্রামের বাঁশখালী থেকে ডাকাত দলের সদস্য সংগ্রহ করে সাগরে দস্যুতা করে যাচ্ছে। এসব বাহিনীর মধ্যে মঞ্জুর বাহিনীও একটি সক্রিয় গ্রুপ।

ছবি-সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন র‌্যাব-১৫ এর অধিনায়ক।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো বলেন, বঙ্গোপসাগরে জলদস্যুরা বেপরোয়া হয়ে উঠায় সাগরে মাছ ধরতে যাওয়া জেলেদের মধ্যে রীতিমত আতংক দেখা দিয়েছে। জলদস্যুরা জেলেদের মারধর করে জাল, মাছ ও নগদ অর্থ লুটপাট করে নিয়ে যায়। অনেক সময় জেলেদের অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করার পাশাপাশি জেলেদের খুনও করে থাকে। বিষয়টি মাথায় রেখে কাজ করছে র‌্যাব।

কক্সবাজার ১০ জেলে হত্যার পেছনে মঞ্জুর বাহিনী জড়িত থাকার তথ্য র‌্যাবের কাছে রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, মঞ্জুরের নির্দেশে সাগরে ডাকাতির নেতৃত্ব দেন আটক বাহার। আর ডাকাত সদস্য সংগ্রহের কাজ করেন মকছুদ আলম এবং ট্রলার সংগ্রহের কাজ করেন রাশেদ। একই সাথে জলদস্যুর কয়টি গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে, তারা কোথা থেকে অস্ত্র সংগ্রহ করে তার তদন্ত চলছে। আশা করছি দ্রæতই জলদস্যু ভীতি কাটানো যাবে বঙ্গোপসাগর।র‌্যাব-১৫ এর অধিনায়ক বলেন, গ্রেফতারকৃত মঞ্জু কুখ্যাত জলদস্যু সর্দার হিসেবে তার বিরুদ্ধে ৯টিরও অধিক মামলা রয়েছে। কক্সবাজারে জেলে সম্প্রদায় ও অন্যান্যদের নিকট আতংকের নাম মঞ্জু ডাকাত। তারা প্রতি ১/২ সপ্তাহ পরপর নদী ও সাগরে ডাকাতি করে থাকে।

র‌্যাব-১৫ এর এ কর্মকর্তা বলেন, জলদস্যুর যে কয়টি গ্রæপ সক্রিয় রয়েছে, তারা কোথা থেকে অস্ত্র পায় সেটিও তদন্ত শুরু করেছি। আশা করছি দ্রæতই জলদস্যুদের নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হবে। জেলেরা যেন নির্বিঘ্নে সাগরে মাছ ধরতে পারে এমন নিরাপদ পরিবেশ শিগগিরই আসবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

নিবন্ধনের জন্য আবেদিত
Desing & Developed BY MONTAKIM