বৃহস্পতিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৬:৩৫ অপরাহ্ন

শান্তি সম্মেলেন মাঝেই অশান্ত রাশিয়া-ইউক্রেন

শান্তি সম্মেলেন মাঝেই অশান্ত রাশিয়া-ইউক্রেন

অনলাইন বিজ্ঞাপন

ছবি : সের্গেই মালগাভকো/ডিপিএ/পিকচার অ্যালায়েন্স

সপ্তাহান্তে জেদ্দায় ইউক্রেনে শান্তি ফেরাতে সম্মেলনের মাঝে রাশিয়া ও ইউক্রেন পাল্টাহামলা চালিয়ে গেছে। ক্রিমিয়া উপদ্বীপে সেতু ও সড়কপথ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জেলেনস্কি রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ করেছেন।

ইউক্রেনের ওপর রাশিয়ার লাগাতার হামলা সত্ত্বেও প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি দেশের প্রতিরক্ষার ক্ষমতা সম্পর্কে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন।

বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানি থেকে পাওয়া আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ‘গুরুত্বপূর্ণ ফলাফল’ দেখাচ্ছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। দৈনিক ভিডিও বার্তায় তিনি মার্কিন প্যাট্রিয়ট সিস্টেম ও জার্মান আইরিস-টি সিস্টেমের কার্যকারিতার প্রশংসা করেন।

তার মতে, এই দুই রক্ষাকবচের কল্যাণে শুধু গত সপ্তাহেই রাশিয়ার ৬৫টি ক্ষেপণাস্ত্র ও ১৭৮টি ড্রোন হামলার বেশির ভাগ ধ্বংস করা সম্ভব হয়েছে। রাজধানী কিয়েভসহ দেশের একাধিক অঞ্চলে বেসামরিক লক্ষ্যবস্তুর ওপর আকাশপথে রাশিয়া ইচ্ছাকৃত হামলা চালিয়ে আসছে বলে জেলেনস্কি অভিযোগ করেন।

শনিবার খারকিভ অঞ্চলে এক রক্ত সঞ্চালন কেন্দ্রের ওপর হামলাকে তিনি যুদ্ধাপরাধ হিসেবে বর্ণনা করেন।

ইউক্রেনও রাশিয়া-অধিকৃত এলাকার ওপর পালটা হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ক্রিমিয়া উপদ্বীপের সঙ্গে মূল ভূখণ্ডের সংযোগকারী দুটি সেতুর ওপর ইউক্রেন জোরালো হামলা চালিয়েছে। রাশিয়ার নিযুক্ত ক্রিমিয়ার গভর্নর বলেন, চোনহার সেতুর ওপর ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ঘটেছে।

এ ছাড়া ক্রিমিয়ার সঙ্গে ইউক্রেনের রাশিয়া অধিকৃত অঞ্চলের মধ্যে তিনটি সড়কপথের ওপরেও হামলা চালানো হয়েছে।

রাশিয়ার মূল ভূখণ্ডের ওপর হামলা সম্পর্কে সে দেশ অবশ্য প্রকাশ্যে কোনো মন্তব্য করছে না। রবিবার মস্কোর উদ্দেশ্যে নিক্ষেপ করা একটি ড্রোন ধ্বংস করা হয়েছে বলে রাশিয়া দাবি করছে। কিছু সময়ের জন্য শহরের একটি বিমানবন্দর বন্ধ রাখা হয়েছিল। শুধু চলতি সপ্তাহেই এমন তিনটি ড্রোন হামলার খবর পাওয়া গেছে।

সৌদি আরবের উদ্যোগে ইউক্রেনে শান্তি ফেরাতে সপ্তাহান্তে আলোচনার মাঝেই যুদ্ধক্ষেত্রে এমন তৎপরতা চলেছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির দপ্তরের কর্মকর্তা মিখাইলো পডোলইয়াক বলেন, ইউক্রেন যেভাবে ‘নিরপেক্ষ’ দেশগুলোর এই সম্মেলনে সক্রিয় অংশ নিয়েছে, তার জবাব হিসেবেই রাশিয়া আরো হামলা চালিয়েছে।

উল্লেখ্য, শনিবার ও রবিবার জেদ্দা শহরে জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, চীন ও ভারতসহ প্রায় ৪০টি দেশ ইউক্রেনে শান্তি ফেরানোর লক্ষ্যে আলোচনা চালিয়েছে। মূলত বিভিন্ন দেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টারা এই সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন। রাশিয়া অবশ্য সম্মেলনে অংশ নেয়নি। অংশগ্রহণকারী দেশগুলো এই সংলাপ চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেছে। কোনো স্পষ্ট ফলাফল বা ঘোষণাপত্র সম্ভব না হলেও ইউক্রেন এই উদ্যোগ সম্পর্কে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে। জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে সংলাপের এক ফর্মুলা সম্পর্কে আলোচনা হলেও শেষ পর্যন্ত সেই প্রস্তাব সম্পর্কে প্রকাশ্যে কিছু জানানো হনি। তবে এমন উদ্যোগের সঙ্গে জেলেনস্কির নিজস্ব শান্তি প্রস্তাবের মিল থাকায় ইউক্রেন সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে।

এদিকে রাশিয়ার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী দেশ চীনও জেদ্দা সম্মেলনে অংশ নেওয়ায় কিছুটা আশার আলো দেখা যাচ্ছে। গত জুন মাসে ডেনমার্কের রাজধানী কোপেনহেগেনে ইউক্রেনে শান্তি সংক্রান্ত প্রথম সম্মেলনে সে দেশ যোগ দেয়নি। এমনকি জেদ্দার পর তৃতীয় সম্মেলন আয়োজনের পক্ষে চীন সমর্থন জানিয়েছে বলে ইউরোপীয় ইউনিয়নের এক কর্মকর্তা দাবি করেছেন।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

নিবন্ধনের জন্য আবেদিত
Desing & Developed BY MONTAKIM