বুধবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৭:০৮ অপরাহ্ন
ফাইল ছবি।
কক্সবাজাওে প্রকাশ্য জনসভায় ‘আট কেন্দ্রে ভোট ডাকাতির অসত্য, বানোয়াট বক্তব্য দেয়ায় উখিয়ার হলদিয়া পালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইমরুল কায়েস চৌধুরীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে সরকার। বিতর্কিত বক্তব্য সম্পর্কে জানাতে গত ১২ জুলই কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের ইউপি-১ শাখার সিনিয়র সহকারী সচিব জেসমীন প্রধান এ নোটিশ দেন। আগামী বিশ কার্য দিবসের মধ্যে জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়েছে চেয়ারম্যান ইমরুলকে।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসন সুত্রে জানা গেছে, স্থানীয় সরকার বিভাগের গত ১২ জুলাই নোটিশটি দেয়া হলেও এটি মঙ্গলবার জেলা প্রশাসনের কাছে পৌঁছে। নোটিশটি স্থানীয় সরকার বিভাগের ওয়েবসাইটেও প্রকাশ করা হয়েছে।
নোটিশে বলা হয়, সদ্য সমাপ্ত কক্সবাজার পৌরসভা নির্বাচনের এক সভায় বক্তব্য দিতে গিয়ে হলদিয়াপালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইমরুল কাযেস চৌধুরী কক্সবাজার সদর উপজেলা চেয়ারম্যান কায়সারুল হক জুয়েলকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ২০১৯ সালে কক্সবাজার সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আমি ৮টি কেন্দ্রে ভোট ডাকাতি করেছি বলেই আপনি উপজেলা চেয়ারম্যান। তার এ বক্তব্যটি জনপ্রিয় দৈনি কালবেলার মাল্টিমিয়ায় প্রচার পেলে দ্রæত দেশ বিদেশে ভাইরাল হয়ে পড়ে। তার বক্তব্যটি অসত্য ও বানোয়াট বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। এমন অসত্য বক্তব্য প্রদান করায় কেন ইমরুলের বিরুদ্ধে স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন ২০০৯ অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না তা বিশ কার্যদিবসের মধ্যে কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্থানীয় সরকার বিভাগে জবাব দিতে চেয়ারম্যান ইমরুলকে নির্দেশ দেয়া হয়।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের স্থানীয় সরকার বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক নাসিম আহমেদ মঙ্গলবার বলেন, মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের চিঠিটি মঙ্গলবার আমার হস্তগত হয়েছে। এটি ওয়েব সাইটেও প্রকাশ করা হয়েছে। নির্দ্দেশনা মোতাবেক আমরা উখিয়া উপজেলার হলদিয়া পালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এস,এম ইমরুল কায়েস চৌধুরীকে ২০ কর্মদিবসে জবাব দিতে জানিয়ে দিয়েছি।
জানতে অভিযুক্ত হলদিয়া পালং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইমরুল কায়েস চৌধুরীকে ফোন করা হলেও রিসিভ না করায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
এরআগে ১১ জুন হলদিয়া পালং ইউপি চেয়ারম্যান ইমরুল কায়েস চৌধুরীর বক্তব্যের সত্যতা অনুসন্ধান করে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে কক্সবাজার জেলা প্রশাসককে চিঠি দেন স্থানীয় সরকার ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের ইউপি-১ শাখা। ইতিমধ্যে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রতিবেদন দেয়া হয়েছে বলে জানানো হয়।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো: শাহীন ইমরান বলেন, হলদিয়াপালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের একটি বক্তব্য অনুসন্ধান করে প্রতিবেদন চেয়েছিল মন্ত্রণালয়। আমরা অনুসন্ধান করে তদন্ত প্রতিবেদন দিয়েছি। এরপরে মন্ত্রণালয় থেকে চেয়ারম্যানকে একটি কারণ দর্শানো নোটিশ দেয়া হয়। আজ (বুধবার) আমি এ বিষয়ে অবগত হয়েছি।
এদিকে জেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানিয়েছেন, কর্মকর্তা জানিয়েছিলেন, ২০১৯ সালের মার্চ মাসে কক্সবাজার সদর উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্টিত হয়েছিল ইভিএম পদ্বতিতে। ইভিএম পদ্বতিতে অনুষ্টিত নির্বাচনে ভোট কারচুপি বা ডাকাতি’র কথা বলায় নির্বাচন কমিশন বিব্রত। ‘ভোট ডাকাতির’ বক্তব্য সম্বলিত চেয়ারম্যানের ভিডিও বক্তব্যটি দেশে-বিদেশে ভাইরাল হয়ে পড়ায় গত ৮ জুন নির্বাচন কমিশন উক্ত ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নিতে সরকারের স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে নির্দ্দেশ প্রদান করেছিল। এর প্রেক্ষিতে স্থানীয় সরকার বিভাগের নির্দ্দেশনায় কক্সবাজারের জেলা প্রশাসন তদন্ত সাপেক্ষে প্রতিবেদন প্রেরণ করে মন্ত্রণালয়ে। এরপর চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে কারণ দর্শানো নোটিশ প্রেরণ করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন