শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৪:১৫ পূর্বাহ্ন
মুহাম্মাদ হেদায়াতুল্লাহ
আল্লাহ তাআলা ইসলামকে পরিপূর্ণ দ্বিন হিসেবে নির্বাচন করেছেন। মানুষকে পৃথিবীতে পাঠিয়ে একমাত্র তাঁর ইবাদতের নির্দেশ দিয়েছেন। এই নির্দেশনার মধ্যে মানুষের দুনিয়া ও আখিরাতের সব কর্মকাণ্ড অন্তর্ভুক্ত আছে। তাই ব্যক্তি, সমাজ, রাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক পরিসরে একজন মুসলিমের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
ন্যায় প্রতিষ্ঠায় সচেষ্ট থাকা : আমানত তথা অন্যের প্রাপ্য যথাযথভাবে পৌঁছে দেওয়া, ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা, সর্বোপরি কোরআন ও সুন্নাহ অনুসরণ করা একজন দায়িত্বশীলের প্রধান কর্তব্য। পবিত্র কোরআনের একটি আয়াতে দায়িত্বশীলদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা রয়েছে। আল্লাহ বলেন, ‘আল্লাহ তোমাদের নির্দেশ দিচ্ছেন, যেন তোমরা আমানত হকদারের কাছে অর্পণ করো। তোমরা যখন মানুষের মধ্যে বিচারকার্য পরিচালনা করবে, তখন ন্যায়পরায়ণতার সঙ্গে বিচার করবে, আল্লাহ তোমাদের কতই না উত্তম উপদেশ দেন, আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা।
হে মুমিনরা, তোমরা আল্লাহ ও রাসুলের আনুগত্য করো এবং তাদের, যারা তোমাদের মধ্যে ক্ষমতার অধিকারী, তোমাদের কোনো বিষয়ে মতভেদ হলে তা আল্লাহ ও রাসুলের কাছে উপস্থাপন করো, এটাই উত্তম ও পরিণামে সুন্দরতর।’
(সুরা : নিসা, আয়াত : ৫৯-৫৮)
যোগ্যদের নিয়োগ দেওয়া : ইসলামী শরিয়তে যেকোনো দায়িত্ব অর্পণের ক্ষেত্রে কিছু বিষয়কে সর্বাধিক গুরুত্ব দিতে হবে। জনসাধারণের যেকোনো কাজে দায়িত্বশীল নিয়োগের ক্ষেত্রে যোগ্যদের প্রাধান্য দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে গুরুত্বের সঙ্গে আমানতদারির নির্দেশনা এসেছে।
যেমন: পবিত্র কোরআনে মুসা (আ.)-এর বিশ্বস্ততা প্রসঙ্গে তাঁর স্ত্রীর কথা বর্ণিত হয়েছে, অন্যত্র শাসনকার্যে ইউসুফ (আ.)-এর নিয়োগ সম্পর্কে ইরশাদ হয়েছে, ‘রাজা বলল, ইউসুফকে আমাদের কাছে নিয়ে আসো, তাকে আমি একান্ত সহচর নিযুক্ত করব, অতঃপর তাঁর সঙ্গে কথা বলে রাজা বলল, আজ আপনি আমাদের কাছে অত্যন্ত মর্যাদাবান ও বিশ্বস্ত।’
(সুরা : ইউসুফ, আয়াত : ৫৪)
সৎকর্মশীল হওয়া : আল্লাহ ও রাসুল (সা.)-এর নির্দেশনা পালনকারী দায়িত্বশীলদের অনুসরণ করা সাধারণ মুসলিমদের কর্তব্য। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, আল্লাহ তোমাদের তিনটি বিষয় পছন্দ করেন এবং তিনটি বিষয় অপছন্দ করেন। তিনি পছন্দ করেন তোমরা একমাত্র তাঁর ইবাদত কোরো, তাঁর সঙ্গে কাউকে অংশীদার করবে না এবং আল্লাহর জন্য সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকবে, বিভেদ করবে না এবং আল্লাহ যাদের তোমাদের দায়িত্বশীল করবেন, তাদের জন্য কল্যাণ কামনা করবে। তিনি অপছন্দ করেন তোমাদের অনর্থক কথাবার্তা, সম্পদের অপব্যয় ও মানুষের কাছে বেশি বেশি চাওয়া।
(মুসলিম, হাদিস : ১৭১৫)
পরকালে বিশেষ মর্যাদা : ন্যায়পরায়ণ শাসকদের জন্য ইহকাল ও পরকালে সুসংবাদ রয়েছে। ইয়াদ বিন হিমার আল-মুজাশেয়ি (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, জান্নাতে তিন শ্রেণির লোক থাকবে। ক্ষমতাসীন ন্যায়পরায়ণ শাসক, মুসলিম ও আত্মীয়দের প্রতি অনুগ্রহপরায়ণ এবং বড় পরিবার নিয়ে যিনি নিষ্কলুষ পবিত্র জীবন যাপন করেন। (মুসলিম, হাদিস : ২৮৬৫)
সূত্র-কালেরকণ্ঠ
মন্তব্য করুন