বৃহস্পতিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৫:১৭ অপরাহ্ন
কক্সবাজারে পাহাড় কাটা বন্ধে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু, ভূমি এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ ৮ সরকারি কর্মকর্তাকে আইনী নোটিশ দিয়েছে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা)। ২৫ জুন (রবিবার) সমিতির পক্ষ থেকে আইনজীবী এস. হাসানুল বান্না ডাকযোগে এ নোটিশ দেন। নোটিশ প্রাপ্তির সাত দিনের মধ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়ে নোটিশদাতাকে জানানোর জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। অন্যথায় নোটিশ গ্রহীতাদের বিরুদ্ধে আইনী পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে জানানো হয়।
তিন সচিব ছাড়াও যাদের কাছে নোটিশ দেয়া হয়েছে তারা হলেন, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, কক্সবাজার জেলা প্রশাসক, কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপার এবং কক্সবাজার পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক।
বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা)-এর পক্ষে ‘এলএন/পাহাড়/কক্স/২০২৩/-৯৬’ সূত্রে দেয়া ‘নোটিশ অব ডিমাণ্ড ফর জাস্টি’ এ বলা হয়, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর ও পর্যটন নগরী কক্সবাজারের সৌন্দর্য বর্ধন করেছে ছোট-বড় অসংখ্য পাহাড় ও টিলা। প্রাকৃতিক ভারসাম্য বজায় রাখতে ও পরিবেশগত বিপর্যয় থেকে কক্সবাজারকে রক্ষা করতে পাহাড় ও টিলার গুরুত্ব অপরিসীম। জনগুরুত্বপূর্ণ এ পাহাড়গুলো ব্যক্তি স্বার্থে নির্বিচারে কেটে ফেলা হচ্ছে। পরিবেশগত বিপর্যয় থেকে রক্ষা করতে এ জেলার ১০.৪৬ হেক্টর এলাকাকে সরকার ১৯৯৯ সালে প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা ঘোষণা করে সেখানে ভূমির শ্রেণি পরিবর্তন সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
সরকারের ঘোষিত কক্সবাজারের প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকার মধ্যে ঝিলংজা মৌজা অন্যতম। মৌজার বিএস ১৭০৭ নং দাগে ৪৯৯৭ একর পাহাড় শ্রেণির জমি বাংলাদেশ সরকারের নামে রেকর্ড রয়েছে। ২০১০ সালের ৫ মে মে জে:প্র:/কক্স/ রাজস্ব/২-১৬৬/২০০৭-১০০৭ স্বারকে বিএস ১৭০৭০ দাগের ৫.০০ একর পাহাড় শ্রেণির ভূমি সাংবাদিকগণের আবাসনের জন্য বরাদ্দ প্রদানের জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে।সাংবাদিকদের আবাসনের জন্য ভূমি বরাদ্দ প্রদান জাতীয় অপরিহার্য স্বার্থ না হওয়া সত্ত্বেও পাহাড় শ্রেণির ভূমিতে আবাসনের প্রস্তাব বাতিল না করে বরং তা নথিভুক্ত করা হয়েছে যা দেশে প্রচলিত আইনের পরিপন্থি।
আরো পড়ুন:কক্সবাজারে প্রকাশ্যে কাটা হচ্ছে পাহাড় !
দেশের বিবেক খ্যাত সাংবাদিক, পরিবেশবাদী, দেশের আইন ও আদালত পাহাড় কাটার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। পাহাড় কেটে সাংবাদিকদের আবাসন তৈরি হলে তা জাতীর নিকট খারাপ দৃষ্টান্তের সৃষ্টি করবে ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদের নৈতিকতা ও গ্রহণযোগ্যতা হারাবে। সাংবাদিকগণের আবাসনের দাবি যৌক্তিক তবে, তা পাহাড় কেটে নয়। বিকল্প কোনো অকৃষি খাস জমিতে সাংবাদিকগণের আবাসনের ব্যবস্থা করা যেতে পারে।
দেশে প্রচলিত আইন অনুযায়ী জাতীয় অপরিহার্য স্বার্থ ও পরিবেশগত ছাড়পত্র ব্যতিত পাহাড় কর্তন/মোচন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। একইসাথে কর্তন করা পাহাড়গুলোতে দেশিয় প্রজাতির বৃক্ষ রোপণ এবং দেয়াল দ্বারা সুরক্ষিত রাখার নির্দেশ প্রদান করেন আদালত।
আইনী বিধি নিষেধ ও আদালতের স্পষ্ট নিষেধাজ্ঞা থাকায় কক্সবাজার জেলায় নতুন করে পাহাড় কেটে কোনো উন্নয়নের সুযোগ নেই বিধায় সাংবাদিকগণের আবাসনের জন্য বিকল্প কোনো স্থানে ভূমি বরাদ্দ প্রদানের কোনো বিকল্প নেই।
এমতাবস্থায় বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) আদালতের আদেশ প্রতিপালনের জন্য কক্সবাজারে বিদ্যমান অবশিষ্ট পাহাড় সংরক্ষণের জোর দাবী জানানো হচ্ছে।
এ বিষয়ে গৃহিত পদক্ষেপ আগামী ৭ দিনের মধ্যে নেয়া পদক্ষেপ জানানোর অনুরোধ করা হয়েছে। অন্যথায় আইনী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে নোটিশে জানানো হয়।
মন্তব্য করুন