বুধবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৪, ০৭:১৭ পূর্বাহ্ন
ফাইল ছবি ইমরুল কায়েস চৌধুরী।
নিজস্ব প্রতিবেদক:
গেল উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে কক্সবাজার শহরের ৮টি ভোট কেন্দ্রে দখল করে ভোট ডাকাতি করে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী কায়সারুল হক জুয়েলের জয় নিশ্চিত করেছিলেন বলে দাবি করেছেন উখিয়া উপজেলা যুবলীগের সভাপতি প্রার্থী ও হলদিয়াপালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইমরুল কায়েস চৌধুরী।
মঙ্গলবার (৬ জুন) রাতে কক্সবাজার পৌর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী মাহবুব রহমানের সমর্থণে আয়োজিত এক সভায় যুবলীগ নেতা ইমরুল এমন মন্তব্য করেন।তার বক্তব্যটি দ্রুত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়লে পুরো জেলায় তুলপাড় শুরু হয়।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ১২ জুন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মাহবুবুর রহমান চৌধুরীর পক্ষে শহরের তারাবনিয়ারছড়ায় এক সভার আয়োজন করা হয়। উক্ত সভায় অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন উখিয়ার হলদিয়াপালং ইউনিয়নে নৌকার বিদ্রোহী প্রার্থী ইমরুল কায়েস। সভায় কক্সবাজার সদর উপজেলা চেয়ারম্যান জুয়েলকে উদ্দ্যেশে করে ইমরুল কায়েস বলেন, বিগত সদর উপজেলা নির্বাচনে আমি কক্সবাজারে ৮ টি কেন্দ্র নৌকার পক্ষে ভোট ডাকাতি করেছি। আমি ভোট ডাকাতি না করলে তুমি জুয়েল আজ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হতে পারতে না। আমার অবদান জানা না থাকলে তোমার বড় ভাই রাশেদ এবং জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মার্শালের কাছে জেনে নিও।
তিনি আরও বলেন, আজ তোমরা সে অবদান ভুলে গিয়েছো। জুয়েল তুমি বড় অকৃতজ্ঞ, আমানুষ। তোমারা নির্বাচিত হলে পৌরবাসিকেও ভুলে যাবেন। কারন আপনারা যে শেখ হাসিনার নাম সাইনবোর্ড ব্যবহার করে চলেন সে জননেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে আপনারা আজ ভুলে গিয়েছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আজ আপনাদের ডেকেছিল আপনারা যাননি। এসময় হুমকি ধমকির পরিবর্তে পাল্টা জবাব রেড়ি আছে বলেও হুশিয়ার করে দেন ইমরুল।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী জানিয়েছেন, ইমরুল ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ভোট কেন্দ্র দখল করে নৌকাকে পরাজিত করে চেয়ারম্যান হয়েছেন। নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে তার হাতে নির্যাতিত হয়েছেন মুক্তিযোদ্ধা পরিবার, মসজিদের ইমাম, স্কুলের শিক্ষক, শ্রমিক এবং দিন মজুর। এবার পৌরসভায় এসে সরকার এবং নির্বাচন কমিশনকে বিতর্ক করতে বক্তব্য দিয়েছেন। যেটা সরকার বিরোধী। তার এমন বক্তব্যের জন্য তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।
প্রসঙ্গত: কায়সারুল হক জুয়েল বর্তমান সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। তিনি কক্সবাজার জেলা সবচেয়ে প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ পরিবার হিসেবে পরিচিত ও প্রয়াত আওয়ামীলীগ নেতা একে এম মোজ্জামেল হকের কনিষ্ঠ ছেলে। তার বড়ভাই সদস্য বহিষ্কৃত আওয়ামী লীগ নেতা মাসেদুল হক রাশেদ দলীয় মোনোনয়ন না পেয়ে নাগরিক কমিটির ব্যানারে কক্সবাজার পৌরসভায় নির্বাচন করছেন।
এদিকে যুবলীগ নেতা ইমরুলের এ বক্তব্যে ফলে ইভিএম পদ্ধতি নিয়ে অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন অনকে।কারন কায়সারুল হক জুয়েল ২০১৯ সালে প্রথম ইভিএম পদ্ধতির ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন। ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক প্রক্রিয়া দেখাচ্ছে আওয়ামী লীগের অনেক নেতা কর্মীরাও।
যুবলীগ ইমরুলের ভোট ডাকাতি করে জয় নিশ্চিত করার বিষয়ে জানতে উপজেলা চেয়ারম্যান কায়সারুল হক জুয়েল, পরিষদেশের চেয়ারম্যান শাহীনুল হক মার্শাল ও পৌর বিদ্রোহী প্রার্থী মাজেদুল হক রাশেদকে একাধিকবার মুঠোফোনে রিং দেয়া হলেও রিসিভ করেননি।
তবে, যুবলীগ নেতা ইমরুলের বক্ত্যবের দায় নিবেনা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন জেলা আওয়ামীলীগ।
জেলা সভাপতি এড.ফরিদুল আলম ও সাধারণ সম্পাদক সাক্ষরিত এক বিবৃতিতে জানানো হয় কারো উদ্ভট ও ব্যক্তিগত বক্তব্যের দায় আওয়ামীলীগ নিবে না। বর্তমান সরকারের আমলে সবসময় নিরপেক্ষত ও সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছেন বলেও দাবি করা হয় বিবৃতিতে।
ভোট ডাকাতির বিষয়ে যুবলীগ নেতার বক্তব্য ইতিমধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবগত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এস. এম. শাহাদাত হোসেন।
মন্তব্য করুন