রবিবার, ২৮ মে ২০২৩, ১০:০৯ পূর্বাহ্ন

পর্যটকে ভরপুর কক্সবাজার সৈকত ঈদের ছুটি

পর্যটকে ভরপুর কক্সবাজার সৈকত ঈদের ছুটি

অনলাইন বিজ্ঞাপন

ঈদের তৃতীয়দিন সোমবারে এসেও পর্যটকে মুখরিত দীর্ঘতম কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত। বালিয়াড়ি আর সাগরে জলে উচ্ছাসে মেতেছে হাজারো পর্যটকেরা। সৈকতের সুগন্ধ পয়েন্ট থেকে লাবণী পয়েন্ট পর্যন্ত যতদূর চোখ যায় মানুষ আর মানুষের ভরপুর সৈকত। পর্যটকদের পাশাপাশি স্থানীয়রাও সৈকত ভ্রমণে এসেছে। আরো কয়েকদিন লাখো পর্যটকের আগমন ঘটলে এবারের ঈদের মৌসুমে ৩-৪শ কোটি টাকা বাণিজ্য হতে পারে বলে মনে করছেন পর্যটন সংশ্লিষ্ট সকল ব্যবসায়ীরা।

এদিকে সৈকতের পাশাপাশি কক্সবাজার- টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ, টেকনাফ, রামু, চকরিয়া ও মহেশখালীর বিনোদনকেন্দ্রগুলোতে দর্শনার্থীর ভিড় বাড়ছে। এতে ব্যবসা-বাণিজ্যে চাঙাভাব ফিরেছে। হোটেল মালিক ও ব্যবসায়ীরা মনে করছেন, ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত সৈকতে পর্যটকের সমাগম থাকবে।

ঢাকার মিরপুর ৩ থেকে বেড়াতে আসা ব্যবসায়ী মুছলেম উদ্দিন জানান, সৈকত আগের থেকে পরিচ্ছন্ন, নিরাপত্তা বেশ ভালো। রাতভর সমুদ্রে মানুষের আনাগোনায় কোনো সমস্যা হয়না। আর সাগরের কাছে এলেই মনটা ভালো হয়ে যায়।

সিলেট থেকে বেড়াতে আসা আরেক ব্যবসায়ী দিদারুল ইসলাম সপরিবারে কক্সবাজার ভ্রমণে এসেছেন। তিনি স্ত্রী সন্তান নিয়ে সোমবার বিকলে সৈকতের সিগাল পয়েন্টে নামেন। বালুচরে দাঁড়িয়ে কিছুক্ষণ সমুদ্রে লোকজনের গোসল ও টিউবে ভেসে ঢেউয়ের সঙ্গে লড়ার দৃশ্য উপভোগ করেন। এরপর পাশের একটি চেয়ার-ছাতার কিটকটে বসে পড়েন।

দিদারুল ইসলাম বলেন, জীবনে প্রথম তারা কক্সবাজার সৈকত ভ্রমণে এসেছেন। উঠেছেন কলাতলীর একটি গেস্টহাউসে। এত মানুষের ভিড় দেখে সমুদ্রে গোসলে নামার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন বলে জানালেন তিনি।

দেখা গেছে, উত্তাল সমুদ্রে কোমরসমান পানিতে নেমে গোসল করছেন অনেক পর্যটক। রোববার বিকেল থেকে বৈরী আবহাওয়ার কারণে সমুদ্রে উত্তাল অবস্থা। ১৩ দিন ধরে টানা দাবদাহ পরিস্থিতি বিরাজ করলেও বৃষ্টির দেখা নেই।

এদিকে কক্সবাজার সৈকতে সন্ধ্যায় পর্যটকদের ভিড় কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে বিপুলসংখ্যক মানুষ। গোসলে নামা পর্যটকদের পর্যবেক্ষণে পৃথক চারটি টাওয়ার থেকে এবং পানিতে দাঁড়িয়ে নজরদারি করছেন ‘সি সেফ’ নামে বেসরকারি একটি লাইফগার্ড প্রতিষ্ঠানের ২৫ জন কর্মী। প্রতিষ্ঠানের সুপারভাইজার মো. আলমগীর বলেন, বিপুলসংখ্যক পর্যটক সামাল দিয়ে স্বল্পসংখ্যক লাইফগার্ড কর্মীকে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

সমুদ্রে গোসল সেরে পর্যটকেরা ছুটছেন কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের দিকে। এই সড়কের দুই পাশে আছে পাহাড়ি ঝরনা, প্রাকৃতিক গুহা ও সুড়ঙ্গ, দরিয়ানগর পর্যটন পল্লি, পাথুরে সৈকত ইনানী ও পাটুয়ারটেক, টেকনাফ সৈকত ইত্যাদি। এসব সৈকতেও অনেকে ঝুঁকি নিয়ে গোসল করছেন।

কক্সবাজার হোটেল-গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাসেম সিকদার বলেন, কক্সবাজারের বিপুলসংখ্যক পর্যটক কক্সবাজারে এসেছে। আশা করছি ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত পর্যটক আসা অব্যাহত থাকবে। আমরাও আমাদের পক্ষথেকে পর্যটকদের ছাড় দিচ্ছি। এসময়ের মধ্যে ভালো ব্যবসার আশা করছি।

কক্সবাজার চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি আবু মোর্শেদ চৌধুরী বলেন, ঈদের ছুটিসহ পরবর্তী ১০ দিনে সৈকত ভ্রমণে আসবেন অন্তত দশ লাখ পর্যটক। এর বিপরীতে পাঁচ শতাধিক হোটেল গেস্টহাউস, রিসোর্ট, কটেজ, সাত শতাধিক রেস্তোঁরাসহ পর্যটনসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ব্যবসা হবে প্রায় ৬০০ কোটি টাকার।

সৈকত ভ্রমণে আসা পর্যটকের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা টুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. জিললুর রহমান বলেন, ঈদের ছুটি এবং পরবর্তী আরও কয়েক দিনে সৈকত ভ্রমণে আসছেন অন্তত ৫ থেকে আট লাখ পর্যটক। তাদের নিরাপত্তায় টুরিস্ট পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর আছে। কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ, বিনোদনকেন্দ্র ছাড়াও সমুদ্রসৈকতে রাত দিন পর্যটকদের নিরাপত্তা দিচ্ছে টুরিস্ট পুলিশ।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

নিবন্ধনের জন্য আবেদিত
Desing & Developed BY MONTAKIM