কক্সবাজার বঙ্গোপসাগরে ভাসার ১৪ ঘণ্টা পর কূলে এসে আটকা পড়া ২৫ টন ওজনের মৃত তিমিটি আজ বুধবার সকালে সায়মান বিচ রির্সোট পয়েন্টে মাটিতে পুঁতে ফেলা হয়েছে। মৃত তিমির গায়ে জেলেদের জাল জড়ানো ছিল। ধারণা করা হচ্ছে, জালে আটকে অন্তত সপ্তাহ আগে তিমিটির মৃত্যু হয়েছে।

মাছের লেজ পচে গন্ধ বের হচ্ছিল। দুর্গন্ধে সায়মন বিচ এলাকায় দাঁড়ানো কষ্ট সাধ্য হয়ে উঠেছে। তাই নমুনা সংগ্রহ করে মাটিতে পুঁতে ফেলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের পর্যটন সেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাসুম বিল্লাহ।

কক্সবাজার বনবিভাগের সদর রেঞ্জ কর্মকর্তা সমীর রঞ্জন সাহা বলেন, মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) রাতের ভাটায় কলাতলীর সায়মন বিচ রিসোর্ট পয়েন্টে মৃত তিমিটি বালিতে আটকা পড়ে। এরপর থেকে তিমিটি দেখতে ভিড় করে অনেকে।

এরআগে হিমছড়ির দরিয়ানগর পয়েন্টে সৈকতে বিশাল আকৃতির তিমিটি ভেসে ওঠার পর বিকালে সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা ড্রোনের মাধ্যমে তিমিটির ছবি ও ফুটেজ সংগ্রহ করেন। কলাতলী পয়েন্টে ভেসে আসার পর তারা এটির নমুনা সংগ্রহ করেন।

সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের সিনিয়র বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘তিমিটির লেজের অংশ পচে গেছে। আর পরিমাপ করার পর দেখা গেছে তিমিটি ৫০ ফুটের বেশি লম্বা। তিমিটির নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি জেলেদের জালে আটকা পড়ে এটির মৃত্যু হয়েছে।

বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ও সমুদ্রবিজ্ঞানী সাঈদ মোহাম্মদ বেলাল হায়দর বলেন, ‘ভেসে আসা মৃত তিমি ব্রাইডস জাতের। এর বৈজ্ঞানিক নাম বেলিনিওপেট্রা ইডিনি। এর আগে ২০২১ সালের ৯ ও ১০ এপ্রিল দুটি তিমি হিমছড়ির ঠিক একই পয়েন্টে ভেসে এসেছিল। যে দুটি তিমি গত বছর ভেসে এসেছিল সেগুলোও বেলিনিওপেট্রা ইডিনি প্রজাতির তিমি ছিল। আমরা ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে নিশ্চিত হয়েছিলাম। এ প্রজাতির তিমির দাঁত নেই। মুখের মধ্যে চিরুনির মতো একটি অংশ দিয়ে খাবার প্রক্রিয়াজাত করে।

তিনি বলেন, ‘তিমিটি থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছিল। ধারণা করছি বেশ কিছুদিন আগেই গভীর সমুদ্রে তিমিটির মৃত্যু হয়েছে। এটির শরীরে জালের বিশাল রশি পেঁচিয়ে আছে। মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। মাছ ধরার জালে আটকা পড়ে এবং গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে কিংবা অন্য কোনো কারণে তিমিটি মারা গেছে বলে আপাতত ধারণা করা হচ্ছে।