রবিবার, ২৮ মে ২০২৩, ০৮:৪২ পূর্বাহ্ন

বর্জ্যের বিনিময়ে ইফতার সামগ্রী পেলেন সোনাদিয়াবাসী

বর্জ্যের বিনিময়ে ইফতার সামগ্রী পেলেন সোনাদিয়াবাসী

অনলাইন বিজ্ঞাপন

মহেশখালীর সোনাদিয়া স্থানীয়দের মাঝে বর্জ্যের বিনিময়ে ইফতার বিতরণ করেছে মুক্তির বন্ধন ফাউন্ডেশন নামে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)’র পৃষ্টপোষকতা ও উপকূলীয় বনবিভাগের সহযোগিতায় দ্বীপের বালিয়াড়ি ও বাসাবাড়ির অপচনশীল আবর্জনার বিনিময়ে এসব ইফতার সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। রোজার একদিন আগে খেজুর, মুড়ি পেয়ে বেজায় খুশি সোনাদিয়াবাসী।

বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) দুপুরে সোনাদিয়ার পশ্চিমপাড়া চর এলাকায় মুক্তির বন্ধন ফাউন্ডেশনের আবর্জনা এক্সচেঞ্জ ও ইফতার বিতরণ অনুষ্ঠান করা হয়েছে। রমজান পুরোমাস এ কাযর্ক্রম অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন ব্যতিক্রমী এ কার্যক্রমের সমন্বয়ক এ কে এম হাসানুজ্জামান মৃদুল।

তিনি বলেন, ঈদের আগে দ্বীপের সাড়ে তিনশ পরিবারের আবাল-বৃদ্ধ-বণিতা আড়াইহাজার মানুষের জন্য নতুন জামা দেয়া হবে।

বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) সহকারি ম্যানেজার আমজাদ হোসেন জানান, সোনাদিয়া একটি অর্থনৈতিক সম্ভাবনাময় দ্বীপ। এখানে গড়ে তোলা হচ্ছে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল। এ কারণে দ্বীপকে পরিচ্ছন্ন রাখতে স্থানীয় অধিবাসীদের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে স্বেচ্ছাসেবী ব্যতিক্রমী এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। উপকূলীয় বনবিভাগ ও বেজার সহযোগিতায় এ উদ্যোগে রয়েছে ইফতার ও ঈদ সামগ্রি বিতরণ। দ্বীপবাসী বাড়িতে ব্যবহৃত প্লাস্টিকপণ্য ও অন্যান্য আবর্জনা এক্সচেঞ্জ করলেই ইফতার ও ঈদ সামগ্রি পাবেন তারা।

স্থানীয় মুরব্বি সুলতান আহমদ বলেন, প্রায় ১২ কিলোমিটার ব্যাসের এ দ্বীপের পূর্বপাড়ায় একটি মাত্র প্রাইমারি স্কুল রয়েছে। স্বাস্থ্য সেবা বা অন্য কোন সেবাই এখানে আর কোন সরকারি সেবা প্রতিষ্টান নেই। এক পাড়া থেকে আরেক পাড়ার দূরত্ব প্রায় ৩-৪ কিলোমিটার। তাই এখানকার শিশুরা শিক্ষা বিমুখ। হাটতে জানলেই বাবা-দাদা বা বড় ভাইদের সাথে পোনা ধরা বা অন্য কাজেই তাদের মনোনিবেশ হয়। মহেশখালী-কক্সবাজারের সাথে একমাত্র যোগাযোগ মাধ্যম নদীপথ। এ যোগাযোগ জোয়ার-ভাটায় নির্ভর। নাগরিক সুবিধা বঞ্চিত দ্বীপে রোজার আগে ইফতারি উপহার পাওয়া, তাও আবার ময়লার বিনিময়ে- এটি সত্যি অন্যরকম অনুভূতি। এ প্রোগ্রামের মাধ্যমে যত্রতত্র আবর্জনায় পরিবেশ দূষণের হাত হতে দ্বীপটি রক্ষা হতে পারে। তবে, প্রচারণার চেয়ে বিতরণ হওয়া ইফতার সামগ্রি যতসামান্য বলে উল্লেখ করেন তিনি।

উপকারভোগী সালেহা আকতার (৪৫) বলেন, প্লাস্টিক ও বাড়ির অপচনশীল ময়লা দিয়ে খেজুর ও মুরিসহ আরো কিছু পণ্য পেয়েছি। আবর্জনা দিয়ে এসব পাওয়া যাবে কখনো ভাবিনি। এখন থেকে প্লাস্টিক ফেলে না দিয়ে সংরক্ষণ করবো। দ্বীপের চারপাশের বালিয়াড়িতে কোন ময়লা পেলে তাও কুড়িয়ে জমিয়ে রাখবো।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. আবু সুফিয়ান বলেন,পর্যটন নগরী কক্সবাজারের সেন্টমারটিনসহ অন্যান্য দ্বীপ এবং সৈকতকে দূষনমুক্ত রাখতে জেলা প্রশাসন নিরন্তর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু অসচেতনতা ও অবহেলার কারণে পুরোপুরি সফলতা আসছে না। সাধারণ মানুষের মাঝে সচেতনতা তৈরীতে একাধিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কাজ শুরু করেছে। সেন্টমার্টিনে প্লাস্টিকের বিনিময়ে নিত্যপণ্য পাচ্ছে স্থানীয়রা আর সোনাদিয়ায় মুক্তির বন্ধন ফাউন্ডেশন দ্বীপবাসিকে ইফতার সামগ্রি দিয়েছে বলে জেনেছি। উদ্যোগগুলো প্রশংসার দাবিদার। আশা করছি এসবউদ্যোগের মাধ্যমে দ্বীপের পরিবেশ ও প্রতিবেশ রক্ষা হবে


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

নিবন্ধনের জন্য আবেদিত
Desing & Developed BY MONTAKIM