নিউ ইয়র্কের হোয়াইট প্লেইন্স ফেডারেল আদালতের বিচারক ভিনসেন্ট ব্রিকেটি সোমবার এই রায় ঘোষণা করেন।
মার্কিন আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর কাছে সংরক্ষিত তথ্য ঘুষের বিনিময়ে সরবরাহ করার অপরাধে এ মামলায় লাস্টিককে পাঁচ বছর জেল খাটতে হবে। আর কারাভোগের পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারিতে থাকতে হবে আরও দুই বছর।
এফবিআইয়ের সাবেক স্পেশাল এজেন্ট রবার্ট লাস্টিক বর্তমানে আরেকটি মামলায় ১০ বছরের সাজা খাটছেন। দুই সাজা পরপর কার্যকর হবে বলে আদালতের রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে।
অর্থাৎ, সব মিলিয়ে লাস্টিককে ১৫ বছর কারাগারে কাটাতে হবে বলে ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি প্রিট ভারারা জানিয়েছেন।
একই ঘটনায় এর আগে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি ও জাসাসের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মোহাম্মদ উল্লাহ মামুনের ছেলে রিজভী আহমেদ সিজারের সাড়ে তিন বছর কারাদণ্ড এবং ঘুষ লেনদেনে মধ্যস্থতাকারী যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক জোহানেস থালেরের আড়াই বছরের জেল হয়েছে।
এর মধ্যে সিজার আছেন নিউ জার্সির ডিক্স ফ্যাসিলিটিতে (কারাগার); আর থালের কানেটিকাটের কারাগারে। একই ঘটনা হলেও এফবিআইয়ের সাবেক এজেন্ট লাস্টিকের বিচার চলে আলাদাভাবে।
ঘুষ লেনদেনের ঘটনায় ২০১৩ সালের ১৩ অগাস্ট গ্রেপ্তার হন থালের ও সিজার। এরপর গতবছর ১৭ অক্টোবর তারা আদালতে দোষ স্বীকার করে জানান, ২০১১ সালের সেপ্টেম্বর থেকে পরের বছর মার্চ পর্যন্ত সময়ে ঘুষ নিয়ে লাস্টিকের সঙ্গে তাদের আলোচনা হয়।
লাস্টিক ওই সময় এফবিআইয়ের কাউন্টার ইন্টেলিজেন্স স্কোয়াডে ছিলেন। তার ছোটবেলার বন্ধু থালেরের মাধ্যমে এই আলোচনা চলে। আর একটি দোকানে একসঙ্গে কাজ করার সুবাদে রিজভীর সঙ্গে থালেরের পরিচয়।
জবানবন্দিতে সীজার বলেছিলেন, বিপরীত মতাদর্শের একজন বাংলাদেশি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলারক্ষা বাহিনীর গোপন নথি এবং ‘সন্দেহজনক’ কর্মকাণ্ডের বিষয়ে একটি প্রতিবেদন পাওয়ার জন্য তিনি ঘুষ সাধেন। এ বিষয়ে লাস্টিকের সঙ্গে মেইল ও মোবাইলে থালেরের মেসেজ চালাচালি হয়। লাস্টিক প্রাথমিকভাবে ৪০ হাজার ডলার এবং পরে মাসিক ভিত্তিতে ৩০ হাজার ডলারের বিনিময়ে ‘সব তথ্য’ দিতে রাজি হন।
যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ ওই বাংলাদেশি রাজনীতিকের নাম-পরিচয় প্রকাশ না করলেও গত মার্চে সিজারের রায়ের পর বাংলাদেশে জাতীয় সংসদে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়, যেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের ক্ষতি করতে তার তথ্য পেতেই ওই ঘুষকাণ্ডের কথা উঠে আসে।
জয় নিজেও তার ফেইসবুক পাতায় এ বিষয়ে স্ট্যাটাস দেন। দোষীদের খুজে বের করে বিচারের আওতায় আনার কথাও বলেন তিনি।
সম্প্রতি জয়কে ‘অপহরণ ও হত্যার’ ষড়যন্ত্রের অভিযোগে সীজারের বাবা মামুনের বিরুদ্ধে ঢাকার একটি থানায় মামলা হয়েছে।
মন্তব্য করুন