শুক্রবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৮:৪৯ পূর্বাহ্ন

সুফল প্রকল্পে সুফল নিয়ে সঞ্চয় ! প্রকল্পের কোটি টাকা লুটপাটের অভিযোগ

সুফল প্রকল্পে সুফল নিয়ে সঞ্চয় ! প্রকল্পের কোটি টাকা লুটপাটের অভিযোগ

অনলাইন বিজ্ঞাপন

ছবি-হিমছড়ি পাহাড়ভাঙ্গ বনের সাইবোর্ড।

 

 

“সরকারি বনজ সম্পদ ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন, বন সংরক্ষণ ও পুনরুদ্ধারে স্থানীয় জনগণের অংশগ্রহণ এবং বনের উপর সরাসরি নির্ভরতা হ্রাসসহ বনজ সম্পদ উজাড়রোধে” কল্পে সরকার সাস্টেনেইবল ফরেস্ট এন্ড লাভলীহুডস প্রজক্ট (সুফল) বা টেকসই বন ও জীবিকা প্রকল্প গ্রহণ করেন। কিন্তু প্রকল্পের কোটি টাকা লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে বিভাগীয় বন কর্মকর্ত, রেঞ্জ এবং বিট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে। এতে সুফল প্রকল্পের সুফল নিয়ে সঞ্চয় দেখা দিয়েছে। আলোকিত কক্সবাজারের ধারাবাহিক প্রতিবেদনে আজ সুফল প্রকল্পের অনিয়ম নিয়ে পড়ুন প্রতিবেদনের ৬ষ্ট পর্ব।

।।ওয়াহিদ রুবেল।।

“সরকারি বনজ সম্পদ ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন, বন সংরক্ষণ ও পুনরুদ্ধারে স্থানীয় জনগণের অংশগ্রহণ এবং বনের উপর সরাসরি নির্ভরতা হ্রাসসহ বনজ সম্পদ উজাড়রোধে” কল্পে সরকার সাস্টেনেইবল ফরেস্ট এন্ড লাভলীহুডস প্রজক্ট (সুফল) বা টেকসই বন ও জীবিকা প্রকল্প গ্রহণ করে। ২০১৮ সালের নেয়া প্রকল্পটি চলতি বছরে জুনে শেষ হবে। মেয়াদ শেষ হতে চললেও প্রকল্পের অর্ধেকও বাস্তবায়ন করতে পারেনি কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগ। আর যে কয়েকটি বাগান করেছে সেখানেও নানা অনিয়নমের অভিযোগ উঠেছে। যা নিয়ে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী।

কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের দেয়া তথ্য মতে, সুফল প্রকল্পের আওতায় ২০১৯-২০ থেকে ২০২১-২২ পর্যন্ত তিন অর্থবছরে মোট বাগান করেছে মাত্র ৮ হাজার ৪শ হেক্টর বাগান করা হয়েছে। তৎমধ্যে দ্রুত বর্ধনশীল বাগান করা হয়েছে ৪ হাজার ৩০ হেক্টর, ধীর বর্ধনশীল বাগান ২ হাজার ৭শ হেক্টর, এনরিচমেন্ট বাগান ১১’শ ৪০ হেক্টর, হেবিটেট উন্নয়ন বাগান ২১০ হেক্টর, ঝাউ বাগান ১০৫ হেক্টর, এ.এন.আর বাগান ২৩ হেক্টর, বিপন্ন ও বিলুপ্ত প্রায় প্রজাতির বাগান ২৭ হেক্টর, মেডিসিনাল বাগান ৬৫ হেক্টর, পি এন্ড ওয়াইল্ড লাইফ ১০০ হেক্টর। যেখানে ব্যয় দেখানো হয়েছ ৩২ কোটি ৩৮ লাখ ৩৮ হাজার টাকা।

অভিযোগ উঠেছে কাগজে কলমে ৮ হাজার হেক্টর বনায়নের কথা বলা হলেও বাস্তবে বনায়ন হয়েছে আরো কম। সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, বাগানের নামে নয় ছয় করে বিপুল পরিমাণ টাকা আত্মসাৎ করেছে বিভাগীয় বনকর্মকর্তা, রেঞ্জ ও বিট কর্মকর্তারা।

ছবি-পানেরছড়া বিটের।

 

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ধারণা করা হয়েছিল এ প্রকল্পের মাধ্যমে বন নির্ভর জনগোষ্ঠীর বিকল্প জীবিকা সুবিধা প্রদান করা সম্ভব হবে। একই সাথে অতিদরিদ্র বিপদাপন্ন নারী, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীসহ সাধারণ জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাবে। কিন্তু এখনো শেষ করা হয়নি বননির্ভর জনগোষ্ঠির তালিকা তৈরির কাজ। যে তালিকা করা হয়েছে তা নিয়েও রয়েছে বিতর্ক। লোক দেখানো বাগান করা হলেও পরিচর্যার অভাবে মারা গেছে ১৫-২০ ভাগ চারা। করা হয়নি নার্সারি মালিকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও। এছাড়া নার্সারি তৈরি, চারা রোপন, দো-আঁশ মাটি এবং নি¤œ মানের বীজ সংগ্রহ করে চরম অনিয়ম করা হয়েছে প্রকল্পে।

প্রকল্পের নানা অনিয়ম দুর্নীতি নিয়ে সংসদীয় কমিটির এক সভায় ক্ষোভ প্রকাশ করে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, প্রকল্পের ‘সুফল’ খুব ভালো নাম। কিন্তু এর কাজ তত ভালো নয়। প্রত্যাশার ধারে কাছেও নেই তারা। এত বড় প্রকল্প সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করতে গেলে ভিত শক্ত করতে হবে। কিন্তু তাদের সে পরিকল্পনা নেই, বাস্তবায়ন তো পরের কথা।
জানতে চাইলে কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের বিভাগীয় বনকর্মকর্তা সরওয়ার আলম বলেন, করোনাকালীন সময় বাগান করা সম্ভব হয়নি। এখন ধীরে ধীর সব বাগান বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। ঠিকাদার নিয়োগের মাধ্যমে আমরা সব কাজ বাস্তবায়ন করছি। এনজিও সংস্থা নেকম বননির্ভর জনগোষ্ঠির তালিকা তৈরি করে তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করছেন।

এ ব্যপারে প্রকল্প পরিচালক গোবিন্দ রায়ের ০১৭১৮৬৮৮৯৩৭ নাম্বারে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ না করায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

নিবন্ধনের জন্য আবেদিত
Desing & Developed BY MONTAKIM