বৃহস্পতিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৬:২৮ অপরাহ্ন
ছবি-কক্সবাজার সদর উপজেলার পিএমখালী থেকে তোলা।
কক্সবাজার বনবিভাগের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ দীর্ঘদিনের। পাহাড় খেকুদের হাতে প্রতিনিয়ত ধ্বংস হচ্ছে পাহাড়। বনবিভাগের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও পাহাড় কাটা নিয়ে আলোকিত কক্সবাজারের ধারাবাহিক প্রতিবেদন আজ পাহাড় কাটা নিয়ে পড়ুন প্রতিবেদনের তৃতীয় পর্ব।
।।ওয়াহিদ রুবেল।।
কক্সবাজারে কোন অবস্থায় থামানো যাচ্ছে না পাহাড় কাটা। জনপ্রতিনিধি, ক্ষমতাসীন দলের নেতা, প্রভাবশালী ব্যক্তিদের নেতৃত্বে প্রায় শতাধিক স্থানে পাহাড় কাটা হচ্ছে। প্রতিদিন পাহাড় কাটা হলেও কার্যকর কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেনা বনবিভাগ। অতিমাত্রায় পাহাড় কাটার ফলে পরিবেশের উপর মারাত্ত¡ক প্রভাব পড়ছে। আর ধ্বংস হচ্ছে বন। এ অবস্থায় পরিবেশ রক্ষায় পাহাড় কাটা বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানিয়েছেন পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো। যদিও বনবিভাগের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে আইনগত জটিলতার কারণে অনেক সময় পাহাড় খেকোদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারেন না তারা।
অনুসন্ধানে করে জানা যায়, কক্সবাজার সদর উপজেলার ইসলামপুর, পিএমখালী, খুরুশকুল, ঝিলংজা, ভারুয়াখালী, ঈদগাঁও, জালালাবাদ, রামুর দক্ষিণ মিঠাছড়ি, খুনিয়াপালং, রাজারকুল, উখিয়ার জালিয়াপালংএর পাইন্যাশিয়া, হলদিয়া পালং, থাইংখালী, রত্নাপালং, রাজাপালং, টেকনাফের হোয়াইক্যাং, বাহারছড়া, মহেশখালীর কালামরছড়া, মাতারবাড়িসহ অন্তত শতাধিক স্থানে পাহাড় কাটছে প্রভাবশালীরা।
তথ্য মতে, কক্সবাজার ঈদগাঁও উপজেলার ওবাইদুল হক ও তার সহযোগিরা, কক্সবাজার সদর উপজেলার পিএমখালী ইনিয়নের তোতকখালী এলাকার হানিফ সিকদারের ছেলে কায়েস সিকদার, পিএমখালী এলাকার আব্দুল্লাহ, নুরুল আমিনের ছেলে জোসেফ, সাতঘরিয়া পাড়া এলাকার নবি হোসনের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম মধ্যম নয়াপাড়া এলাকার মৃত আবু বক্করের ছেলে নুরুল হুদা, রামু উপজেলার দক্ষিণ মিঠাছড়ি চাইল্লাতলি এলাকার হাবিবুর রহমানের ছেলে মাহামুদুল্লা, কক্সবাজার সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি পি এম খালির মধ্যম নয়াপাড়া এলাকার ছৈয়দ নুর সদ: ছেলে দেলুয়ার হোসেন, দক্ষিণ মিঠাছড়ির চাইল্লাতলী এলাকার মো: সহত আলীর ছেলে জসিম উদ্দীন, ঝিলংজা মহুরি পাড়া এলাকার সিরাজুল ইসলামের ছেলে জকরিয়া, খুরুশকুলের মুনু এবং মনিরুল হক।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কক্সবাজার বনবিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, আমাদের চোখের সামনে প্রভাবশালীরা পাহাড় কাটলেও নিজেদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে আমরা কোন ব্যবস্থা নিতে পারি না।
ছবি-মহেশখালী থেকে তোলা ছবি।
তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, পাহাড় খেকোদের কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে পাহাড় কাটা বন্ধে কার্যকর কোন ব্যবস্থা নেয়না বনবিভাগ। যার কারণে পাহাড় কাটা বন্ধ করা যাচ্ছেনা।
কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো: সরওয়ার কামাল পাহাড় কাটার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত বন ফিরিয়ে আনা কঠিন কাজ। ক্ষতির বিষয়ে আমরা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানিয়েছি। একই সাথে যে পরিমাণ বনভূমি অক্ষত রয়েছে তা রক্ষা করতে আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের বিভাগীয় বনকর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন সরকার বলেন, পাহাড় কাটার খবর পেয়ে আমরা অভিযান পরিচালনা করি। কিন্তু ঘটনাস্থলে কাউকে পাওয়া না গেলে কার্যকর কোন পদক্ষেপ নেয়া যায়না।
কক্সবাজার পরিবরশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক শেখ নাজমুল হক বলেন, পাহাড় কাটার সাথে জড়িতদের যেসব নাম আমরা পাচ্ছি তাদের সবাইকে নোটিশও দেয়া হয়েছে। পর্যায়ক্রমে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মন্তব্য করুন