বৃহস্পতিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৫:৫৩ অপরাহ্ন

হীরকজয়ন্তী কারা করছে জানেন না কলেজ প্রশাসন

হীরকজয়ন্তী কারা করছে জানেন না কলেজ প্রশাসন

অনলাইন বিজ্ঞাপন

ছবি- হীরকজয়ন্তী আয়োজক কমিটির সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কলেজে সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ।

হীরকজয়ন্তীর ব্যানারে কক্সবাজার সকারি কলেজ ক্যাম্পাস দখলে নিতে চায় শিবির। কলেজ অধ্যক্ষ গিয়াস উদ্দিনের প্রতক্ষ মদদে এমন অপচেষ্টা চলছে বলে দাবি করেছেন প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনের সাবেক ও বর্তমান নেতারা। এতে কলেজ ক্যাম্পাসে বড় ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটতে পারে বলেও দাবি করেছেন তারা। সম্প্রতি কলেজ ক্যাম্পাসে শিবিরের আনাগোনা বেড়ে যাওয়ায় এমন আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন তারা। একই সাথে হীরকজয়ন্তী বাস্তবায়ন কমিটির বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগও তুলেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তবে হীরকজয়ন্তীর সাথে কলেজ প্রশাসনের কোন সম্পর্ক নেই বলে দাবি করেছেন কলেজ অধ্যক্ষ গিয়াস উদ্দিন।
জানা যায়, দক্ষিণ চট্টগ্রামের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীট  কক্সবাজার সরকারি কলেজ ৬০ বছর পার করছে। এ উপলক্ষে কলেজের প্রাত্মান জিএস ও কক্সবাজার পৌরসভার মেয়রকে আহবায়ক করে ১২ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। তবে কমিটির অনেকে কলেজের ছাত্র ছিলেন না। আবার পুরো প্রক্রিয়ার প্রধান সহকারী সচিবের দায়িত্ব পালন করছেন সাবেক শিবির নেতা ও শিবির পরিচালিত আইডিয়াল কোচিং সেন্টারের পরিচালক শাহেদ আলী অলিদ।
অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের সমালোচনা এড়াতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমানকে আহবায়ক করা হয়েছে। তাকে অন্ধকারে রেখে পেছন থেকে কলকাঠি নাড়ছে শিবির। অনুষ্ঠানের নির্ধারিত দিনে শেষ সময় এসে ক্যাম্পাসে অরাজকতা সৃষ্টি করার পরিকল্পনা রয়েছে শিবিরের। গত দশ বছর ধরে কলেজে তাদের একক আধিপত্য ফিরে পেতে মরিয়া হয়ে এমন সিদ্ধান্ত বলে জানা যায়। ইতিমধ্যে রেজিস্ট্রেশন করা শতকরা ৮০ ভাগই সাবেক ও বর্তমান শিবির কর্মী বলে জানা যায়। এবং নিজেদের সবাইকে রেজিষ্ট্রেশন করাচ্ছেন তারা। এছাড়া কলেজ শিক্ষার্থীদের রেজিষ্ট্রেশন না করারও অভিযোগ করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে কলেজ ক্যাম্পাসে হীরকজয়ন্তী বাস্তবায়ন কমিটির বিরুদ্ধে অবস্থান কর্মসূচী পালন করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এসময় হীরকজয়ন্তীর নামে আর্থিক অনিয়মের স্লোগান দিতে থাকে তারা। পরে হীরকজয়ন্তীর ব্যানারে শিবিরের অপতৎপরতা বন্ধের দাবিতে কলেজ অধ্যক্ষকে একটি লিখিত অভিযোগ দেন তারা।
কলেজ ছাত্র রিয়াজ উদ্দিন রিয়াদ বলেন, হীরকজয়ন্তী হবে এটি কলেজ ছাত্র হিসেবে আমার জন্য খুশির। কিন্তু আমরা এখনো জানি না কারা অনুষ্ঠান করতেছে। উচিত ছিল কলেজে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের সাথে নিয়ে এটি বাস্তবায়ন করবে কলেজ প্রশাসন।
আরেক ছাত্র মো: শাওন বলেন, আমরা হীরকজয়ন্তীর পক্ষে। কিন্তু সকলের সমন্বয়ে প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনের নেতাদের সাথে সমন্বয় করতে হবে। এখন যা হচ্ছে তা ক্যাম্পাসে শিবিরকে প্রতিষ্ঠা করা।
কলেজ ছাত্রলীগের আহবায়ক রাজিবুল ইসলাম বলেন, কলেজ অধ্যক্ষ মুখে বলেন হীরকজয়ন্তীর সাথে তাদের কোন সম্পর্ক নেই। কিন্তু ভেতরে ভেতরে শিবিরের সাথে আঁতাত করে কাজ করছেন। এ অবস্থা চলতে থাকলে ক্যাম্পাসে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা করছি আমরা।
কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি জাকের হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শাখাওয়াত হোসেন বলেন, ৬০ বছর পূর্তি উদযাপন করতে হলে কলেজে প্রগতিশীল সকল ছাত্র সংগঠনের দায়িত্বশীল নেতা, কলেজ প্রশাসনের সমন্বয় থাকা দরকার ছিল। কিন্তু করা হয়নি। আমরা জেনেছি হীরকজয়ন্তীর ব্যানারে সাম্প্রদায়িক রাজনীতি প্রতিষ্ঠার অপচেষ্টা চলছে।
কক্সবাজার সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হেলাল উদ্দিন বলেন, ছাত্রলীগ কর্মীরা রক্ত দিয়ে ক্যাম্পাস শিবির মুক্ত করেছে। আমার ভাইয়ের রক্তের উপর দাঁড়িয়ে সাম্প্রদায়িক অপশক্তির উন্মাদনা করতে দেয়া হবে না।
ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি রিদুয়ান আলী বলেন, এই তো সেদিন কলেজ ক্যাম্পাসে শহীদ মিনারে ফুল দিতে গিয়ে হামলা করেছিল শিবির। আবারো তাদের নিয়ে হীরকজয়ন্তী বাস্তবায়ন করা আমাদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে।
কলেজ অধ্যক্ষ গিয়াস উদ্দিন জানান, হীরকজয়ন্তী করার মতো টাকা কলেজ প্রশাসনের নেই। যাদের টাকা আছে তারা করছে। হীরকজয়ন্তীর সাথে কলেজ প্রশাসনের কোন সম্পর্ক নেই। পৌরসভার মেয়র আমার সাথে যোগাযোগ করেছিল তাই আমি কলেজের মাঠ ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছি। আর তাদের সাথে যোগাযোগ করার জন্য একটি কমিটিও করে দিয়েছি। এর পেছনে যে শিবির কাজ করছে তা আমি জানি না।
তিনি বলেন, কলেজ বন্ধের দিন হীরকজয়ন্তীর অনুষ্ঠান হবে। সেখানে অপ্রীতিকর কিছু ঘটলে তার দায়ভার আমি নিবো না। আর কারা টাকা উত্তোলন করছে সেটিও জানি না।
হীরকজয়ন্তীর সাথে সম্পর্ক না থাকলে কমিটি কেন করা হয়েছে এমন প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারেন নি তিনি।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

নিবন্ধনের জন্য আবেদিত
Desing & Developed BY MONTAKIM