শুক্রবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৮:১৭ পূর্বাহ্ন
ফাইল ছবি খুনিয়াপালং ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হক।
।।ওয়াহিদ রুবেল।।
হালনাগাদ ভোটার তালিকায় অর্ন্তভূক্তি হতে প্রয়োজনে জাতীয়তা সনদসহ গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র সংগ্রহ করতে চেয়ারম্যানের কাছে ধর্ণা দিয়েও সেবা পাচ্ছেন না কক্সবাজারের রামু উপজেলার খুনিয়া পালং ইউনিয়নের বাসিন্দারা। গেল ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচন করায় প্রয়োজনীয় এসব কাগজপত্র দিচ্ছেন না বলে অভিযোগ তুলেছেন ভুক্তভোগীরা। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল হক কোম্পানীর স্বেচ্ছাচারিতা ও অনিয়মের বিরুদ্ধে ৩১ জানুয়ারি কক্সবাজার জেলা প্রশাসককে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ইউনিয়নের ভূক্তভোগী ৬ ব্যক্তি।
অভিযোগ স্বীকার করেছেন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। আর জেলা প্রশাসন বলছে তদন্ত করে সত্যতা পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ভূক্তভোগী আবছার, মামুন, লিয়াকত, জসিম বলেন, ভোটার তালিকা হালনাগাদে জাতীয় সনদ, জন্মনিবন্ধন, বিশেষ প্রত্যায়নসহ প্রায় ১১ প্রকার কাগজপত্রের প্রয়োজন। কিন্তু গেল নির্বাচনে নৌকা প্রতিকের পক্ষে ভোট করায় চেয়ারম্যান প্রয়োজনীয় এসব কাগজপত্র দিচ্ছেন না। এতে আমরা নাগরিক সুবিধা থেকে যেমন বঞ্চিত হচ্ছি তেমনি চেয়ারম্যান কর্তৃক হয়রানি ও বৈষম্যের শিকার হচ্ছি। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য দাবি করেছেন তারা।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে চেয়ারম্যান আব্দুল হক স্বেচ্ছাচারী আচরণ করছেন। এরআগেও একই অভিযোগে ইউনিয়নের মধ্যম ধেছুয়াপালং ৫ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মৃত সোলেমান এর ছেলে মো: নুরুল আলম স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ে (ইউনিয়ন পরিষদ-১ শাখায়) লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তার অভিযোগ তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ১৮ অক্টোবর মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব জেসমীন প্রধান সাক্ষরিত একটি পত্র জেলা প্রশাসক বরাবরে পাঠানো হয়। ১৪ নভেম্বর রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহমিদা মুস্তফা সাক্ষরিত একটি নোটিশ জারি করে ২৮ নভেম্বর প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে চেয়ারম্যান আব্দুল হক কোম্পানী এবং অভিযোগকারীকে উপস্থিত থাকতে বলা হয়। কিন্তু চেয়ারম্যান সেদিনও উপস্থিত ছিলেন না।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ভোটার তালিকা হালনাগাদের গঠিত উপজেলা বিয়ষ কমিটির আহবায়ক ফাহমিদা মুস্তফা বলেন, শুধু খুনিয়াপালং নয়, ঈদগড় ইউনিয়নেও ভোটার হওয়ার যোগ্য সম্পন্ন ব্যক্তিদের ইচ্ছাকৃতভাবে কাগজপত্র দেয়া হচ্ছে না বলে লিখিত ও মৌখিক অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। এরুপ অভিযোগ অনভিপ্রেত ও দু:খজনক এবং দায়িত্ব অবহেলার সামিল। প্রকৃত নাগরিক হলে জাতীয়তা সনদ, জন্মনিবন্ধন, ওয়ারিশ সনদসহ সব ধারণের কাগজপত্র দেয়ার নির্দেশনা রয়েছে।
তিনি বলেন, স্থানীয়দের অভিযোগের প্রেক্ষিতে গেল ১৩ ডিসেম্বর উপজেলার ঈদগড় ও খুনিয়াপালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে চিঠি দেয়া হয়।
অভিযোগ স্বীকার করে খুনিয়াপালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল হক কোম্পানী বলেন, আমি চার শ্রেণীর লোকজনকে কাগজপত্র দিচ্ছি না। তাদের মধ্যে রোহিঙ্গা, গ্রাম্য আদালতের আদেশ অমান্যকারী, ইউনিয়ন পরিষদের টেক্স না দেয়া এবং নিজের কাগজ নিয়ে যারা আসে না এমন লোক। এসব লোকজনকে কাগজপত্র না দেয়ার বিধানও আইনে বলা আছে বলে দাবি করেছেন তিনি। তবে ইউএনও কার্যালয় থেকে তাকে চিঠি দেয়া হয় নি বলে দাবি করেছেন চেয়ারম্যান আব্দুল হক।
এ ব্যাপারে স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক জাহিদ ইকবাল বলেন, জেলার অনেক ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে লিখিত ও মৌখিক অনেক অভিযোগ আসছে। অভিযোগ তদন্ত করা হচ্ছে। সত্যতা পেলে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তিনি বলেন, নাগরিক সেবা না দেয়ার কোন সুযোগ নেই।
মন্তব্য করুন