বৃহস্পতিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৫:০৯ অপরাহ্ন

বার্মিজ মার্কেট দখলে নিতে মরিয়া ভূমিদস্যু; ব্যবসায়ীদের কোটি টাকা লোকসান

বার্মিজ মার্কেট দখলে নিতে মরিয়া ভূমিদস্যু; ব্যবসায়ীদের কোটি টাকা লোকসান

অনলাইন বিজ্ঞাপন

ছবি-কলাতলীতে নির্মিত বার্মিজ মার্কেট। ইনসেট সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন ভোক্তভোগী পরিবার।

 

 

কক্সবাজারের কলাতলীতে বার্মিজ মার্কেট দখলের পায়তারা করছে বলে অভিযোগ করেছেন ভোক্তভোগী পরিবার। সোমবার দুপুরে কক্সবাজার প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন এমন অভিযোগ করেছেন তারা। মার্কেট দখলে নিতে ইতোমধ্যে একাধিকবার হামলানও সশস্ত্র মহড়া চালিয়েছে বলেও অভিযোগ তাদের। দুর্বৃত্ত হামলার ভয়ে গেল কয়েকমাস ধরে মার্কেটটি খুলতে না পেরে ব্যবসায়ীদের অর্ধশত কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছে মার্কেট মালিকরা।

মার্কেট মালিকদের অভিযোগ পৌরসভার দক্ষিণ বাহারছড়া এলাকার চিহ্নিত ভূমিদস্যু, সরকারি খাস জমি দখলবাজ আব্দুল্লাহ এবং সৈয়দ মোহাম্মদ মুসা অর্ধশতাধিক ভাড়াটে নারীদের ব্যবহার করে তাদের নির্মিত মার্কেটটি দখল করতে বিভিন্নভাবে হয়রানি করে যাচ্ছে। থানা পুলিশের তৎপরতায় মার্কেটটি রক্ষা করতে পারলেও ভূমিদস্যুদের অব্যাহত হুমকিতে ব্যবসায়ী ও মার্কেট মালিকরা নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে বলে দাবি করেছেন তারা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মধ্যম বাহারছড়ার মৃত ঠান্ডা মিয়ার মেয়ে হোসনে আরা। এ সময় তার ভাইবোনর উপস্থিত ছিলেন।

মার্কেট মালিক আব্দু ছবুর জানান, বিএস ১৭৫১ খতিয়ানে ওয়ারিশ সূত্রে পাওয়া জমিতে অনেক বছর ধরে মার্কেট নির্মাণ করে ব্যবসা করছেন তারা। সম্প্রতি এটিকে পর্যটন শিল্প বান্ধব করতে সংস্কার করে ‘টিএম বার্মিজ মার্কেট’ হিসাবে গঠন করা হয়। এসময় মার্কেটটি দখলে নিতে কয়েক দফা হামলার চেষ্টা চালিয়েছে ভূমিদস্যু আব্দুল্লাহ ও মুসা গং। একই সাথে তাদের পরিবার নিয়ে বিভিন্ন সময় চরম মিথ্যাচার করে যাচ্ছে। যা সামাজিকভাবে চরমভাবে সম্মানহানী হচ্ছে। ২২ জানুয়ারি কথিত মানববন্ধন করে পরিবারের ছোট ছেলে এনামের ছবি ব্যবহার করে মিথ্যা বক্তব্য দিয়েছেন। তা নিয়েও পরিবারের পক্ষ থেকে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

তাদের দেয়া তথ্য মতে, ভূমিদস্যুদের পক্ষে জনৈক আব্দুল করিম স্বত্ব দাবি করে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি এমআর মামলা দায়ের করেন (নং-১৭৮৩/২২)। মামলাটি সরজমিন তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দেন সহকারী কমিশনারের পক্ষে তহসিলদার। প্রতিবেদন পাওয়ার পর স্বত্ব না থাকায় বিজ্ঞ আদালত তার মামলাটি খরিজ করে দেন।

হোসনে আরা নামে আরেক মার্কেট মালিক জানান, ভূমিদস্যুদের হাত থেকে রক্ষা পেতে আমরা একটি এমআর মামলা দায়ের করি (নং-১৮৫৫/২২)। মামলাটি এসিল্যান্ড তদন্ত করে প্রতিবেদন দিলে বিজ্ঞ আদালত ভূমিদস্যু মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ ও সৈয়দ মোহাম্মদ মুসা গংদের বিরুদ্ধে বারিত আদেশ প্রদান করেন আদালত। মার্কেটে ব্যবসায়ীরা যেন নিরাপদে ব্যবসা করতে পারে তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে কক্সবাজার মডেল থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জকে নির্দেশনা দেন। আইনী লড়াইয়ে চূড়ান্তভাবে হেরে যাওয়ার পর আরো বেশি ক্ষিপ্ত হয়ে ভূমিদস্যু আব্দুল্লাহ গং মার্কেট দখলের জোরচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, জায়গা-জমির মালিকানা দলিলে প্রমাণের বিষয়। কিন্তু তারা জোর করে দখলে নিতে চান। দখলবাজি তাদের নেশা এবং পেশা। বর্তমানে হিলডাউন সার্কিট হাউস এবং কলাতলী আনবিক শক্তিকমিশন এলাকায় সরকারি জমি অবৈধভাবে দখল করে বহুতল ভবন নির্মাণ করে রেখেছে আব্দুল্লাহ ও মুসারা।

ক্ষতিগ্রস্ত এক ব্যবসায়ী বলেন, মার্কেট খুলতে না পেরে আমাদের অর্ধশত কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। নষ্ট হয়েছে অনেক পণ্যও। আমরা আশা করছি থানা প্রশাসন আদালতের আদেশ বাস্তবায়ন করবেন।

জানতে চাইলে কক্সবাজার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেন, আদালতের নির্দেশনা হাতে পেয়েছি। ইতোমধ্যে বিশৃংখলা সৃষ্টির চেষ্টা চালানো বেশ কয়েকজনকে ঘটনাস্থল হতে আটক করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এখনো সমস্যা সৃষ্টির চেষ্টার অভিযোগ পাচ্ছি। পর্যটন মৌসুমে শহরে কোন ধরণের বিশৃংখলা হতে দেয়া হবে না। সেখানে পুলিশের দৃষ্টি রয়েছে।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

নিবন্ধনের জন্য আবেদিত
Desing & Developed BY MONTAKIM