বৃহস্পতিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৬:৪০ অপরাহ্ন
প্রতিকী ছবি।
দেশে ২০২২ সালে পানিতে ডুবে নয় বছরের কম বয়সী শিশুদের মৃত্যুরহার বেড়েছে। এ সময় পানিতে ডুবে মৃতদের মধ্যে ৮১ শতাংশের বয়স ছিল নয় বছরের কম। আগের বছরের তুলনায় এ হার ৮ শতাংশ বেশি। হতভাগ্য এসব শিশুদের ৬১ শতাংশতাদের চতুর্থ জন্মদিনের আগেই মারা গেছে।
গত ১২ মাসে গণমাধ্যমে প্রকাশিত পানিতে ডুবে ১ হাজার ১৩০টি মৃত্যুর ঘটনা বিশ্লেষণ করে এ চিত্রপাওয়া গেছে। গণমাধ্যমের তথ্য অনুসারে ২০২০ ও ২০২১সালে নয় বছর বয়সীদের পানিতে ডুবে মৃত্যুর হার ছিল যথাক্রমে ৬৫% ও ৭৩%। এ দু’বছরে যথাক্রমে ৮০৭ ও ১ হাজার ৩৪৭টি মৃত্যুর খবর সংবাদমাধ্যমে উঠে আসে।
গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইন কিউবেটরের (জিএইচএআই) সহযোগিতায় গণমাধ্যম উন্নয়ন ও যোগাযোগ বিষয়ক প্রতিষ্ঠান সমষ্টি জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ের গণমাধ্যম এবং নিউজ পোর্টালে প্রকাশিত পানিতে ডুবে মৃত্যুর তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে এ চিত্র পায়।
কোথায় কত মৃত্যু:
প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ী ২০২২ সালে চট্টগ্রাম বিভাগে সর্বোচ্চ ২৮২জন পানিতে ডুবে মারা যায়। এছাড়া রংপুর বিভাগে ১৬০,ঢাকায় ১৪৯জন, বরিশালে ১৩১, রাজশাহীতে ১১০,ময়মনসিংহে ১০৪, খুলনাবিভাগে ১০৩জন ও সিলেট বিভাগে ৯১জন মারা যায়।
গণমাধ্যম প্রতিবেদন অনুসারে চট্টগ্রাম জেলায় গত এক বছরে সবচেয়ে বেশি মানুষ পানিতে ডুবে মারা যায় ৭৩জন। পরবর্তী স্থানগুলোতে রয়েছে পঞ্চগড়, নেত্রকোণা, চাঁদপুর, কক্সবাজার ও পটুয়াখালী জেলা। এসব জেলায় যথাক্রমে ৪৭, ৪৭, ৪৬, ৪১ ও ৩৬জন মারা যায়।
বয়স:
২০২২ সালে পানিতে ডুবে মৃতদের ৯৪শতাংশের বয়স ১৮ বছরের নিচে। এদের মধ্যে চার বছর বা কম বয়সী ৫৫৬ জন, ৫ থেকে ৯ বছর বয়সী ৩৬৩জন, ১০-১৪বছরের ১০২জন এবং ১৫-১৮ বছরের ৪৩জন। ৬৬ জনের বয়স ছিল ১৮ বছরের বেশি।
জেন্ডার:
পানিতে ডুবে নিহতদের মধ্যে ৪১২ জন নারী। এদের মধ্যে কন্যা শিশু ৪০০জন। পুরুষ মারা যায় ৭০৮ জন, যাদের মধ্যে ৬৬৪ জন শিশু। প্রকাশিত সংবাদ থেকে ১০ জনের লৈঙ্গিক পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
দিনের কখন পানিতে ডুবছে:
দিনের প্রথম ভাগে অর্থাৎ সকাল থেকে দুপুরের মধ্যে ৩৫৫ জন এবং দুপুর থেকে সন্ধ্যার আগে ৬৮৬ জন মারা যায়।এছাড়া সন্ধ্যায় ৭০জন মারা যায়। ১৯ জন রাতের বেলায় পানিতে ডোবে।
কোন মাসে বেশি মৃত্যু:
গত ১ বছরের হিসাবে দেখা যায়, সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর ঘটনা ঘটে আগস্ট মাসে। এ মাসে ১৬২জন পানিতে ডুবে মারা যায়। এছাড়া জুন মাসে ১৪৩ জন এবং মে ও সেপ্টেম্বর মাসে ১২৮ জনের মৃত্যুর খবর পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।
কারণ:
মৃতদের মধ্যে ৯৯০ জন কোনো না কোনো ভাবে পানির সংস্পর্শে এসে ডুবে যায়। ১৪০জন মারা যায় নৌযান দুর্ঘটনায়।পরিবারের সদস্যদের যথাযথ নজরদারি না থাকায় সবচেয়ে বেশি সংখ্যক পানিতে ডোবার ঘটনা ঘটে। অধিকাংশ শিশু বড়দের অগোচরে বাড়ি সংলগ্ন পুকুরবা অন্য জলাশয়ে চলে যায় এবং দুর্ঘটনার শিকার হয়।
একাধিক স্বজন হারিয়েছে ৪৯ পরিবার:
এ সময়ে ৪৯টি পরিবারের ৯৮জন সদস্য পানিতে ডুবে মারা যায়। এদের মধ্যে জমজ শিশু ছিলো ১৪ জন। এছাড়া শিশুর সঙ্গে ভাই অথবা বোনসহ ৪২জন, চাচাতো, মামাতো বা খালাতো ভাইবা বোনসহ ৪২জন মারা যায়।
মন্তব্য করুন