বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:২৩ পূর্বাহ্ন

যত শিগগিরই সম্ভব রায় কার্যকর হবে

যত শিগগিরই সম্ভব রায় কার্যকর হবে

অনলাইন বিজ্ঞাপন

আলোকিত কক্সবাজার ডেক্স॥
মানবতা বিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ ও বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ফাঁসির রায় কার্যকরের ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট কোনো সময় উল্লেখ না করে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, যত শিগগিরই সম্ভব আইন অনুযায়ী রায় কার্যকর করা হবে।
বুধবার রাতে তার গুলশানের সরকারি বাসভবনে রায় পরবর্তী প্রতিক্রিয়ায় আইনমন্ত্রী এমন মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, যেহেতু আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে দণ্ডপ্রাপ্তদের জন্য জেলকোড প্রযোজ্য নয়, তাই অপরাধীদের রায় কার্যকরে রিভিউয়ের পূর্ণাঙ্গ রায় পাওয়ার প্রয়োজন হবে না। পূর্ণাঙ্গ আদেশের আগেই রায় কার্যকর সম্ভব।
আইনমন্ত্রী বলেন, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত শীর্ষ দুই মানবতাবিরোধী অপরাধীর রায় কার্যকরের জন্য রিভিউ পিটিশনের পূর্ণাঙ্গ আদেশ দরকার হবে, নাকি অপারেশনাল পার্ট হলেই রায় কার্যকর করা যাবে সে বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আইজি প্রিজনের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
রিভিউয়ের পূর্ণাঙ্গ রায় পাওয়ার পর দণ্ডপ্রাপ্তরা ক্ষমা চাইবেন কি না এবং তারা এমন সিদ্ধান্ত নিতে চাইলে সেক্ষেত্রে সরকার কি করবে? এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, আসামিরা যেভাবে বলবেন আইন সেভাবে চলবে না। আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ আইনে দণ্ডপ্রাপ্তদের জন্য জেলকোড প্রযোজ্য না হলেও সর্বোচ্চ আদালত থেকে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মানবতাবিরোধী অপরাধী সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদকে রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে।
বিশ্বের কোথাও এমন স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হচ্ছে না বা হয়নি এমন দাবি করে আইনমন্ত্রী বলেন, ১৯৭১ সালের যে সব অপরাধ সংঘটিত হয়েছে, ওই সব অপরাধের সর্বোচ্চ পর্যায়ের হুকুমদাতাদের দুই জনের বিরুদ্ধে রায় হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত অত্যন্ত স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় এই বিচার কাজ সম্পন্ন করেছেন। এখন বাকি আইনি নিয়ম পালন করে রায় কার্যকর করা।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে রায় বাস্তবায়নে জেলকোডের বাধ্যবাধকতা না থাকায় যে কোনোভাবেই (ফায়ারিং স্কোয়াড বা ফাঁসি) রায় কার্যকর করতে পারে সরকার। তবে, এর আগে মানবতাবিরোধী অপরাধে সর্বোচ্চ শাস্তি যেভাবে কার্যকর (ফাঁসি) করা হয়েছে তাদের ক্ষেত্রেও সেটি করা হবে।
আইনের ব্যাখ্যা দিয়ে আনিসুল হক বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইন অনুযায়ী জেলকোড ফলো করতে হবে না। কাদের মোল্লার ফাঁসির রায় কার্যকরের সময়ও এ বিষয়টি ফলো করা হয়নি। যদিও জেলকোডের ৯৯১ রুল অনুযায়ী রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাইতে সাতদিন সময় থাকে, কিন্তু এক্ষেত্রে জেলকোড ফলো করা হবে না।
জেলকোডের ৯১১ রুলে বলা আছে, হাইকোর্টের রায় হওয়ার পরে সাতদিনের মধ্যে রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমার আবেদন করার জন্য আসামিকে বলা হবে। আবার পাশাপাশি এটাও বলা আছে, যেটা কাদের মোল্লার রায়ে বলা আছে, জেলকোড উইল নট অ্যাপ্লাই ইন দিস কেসেস।
উল্লেখ্য গত ০১ অক্টোবর মুজাহিদ-সালাউদ্দিন কাদেরের মৃত্যু পরোয়ানা জারি করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। সেদিনই কারাগারে লাল কাপড়ে মোড়ানো মৃত্যু পরোয়ানা ও ফাঁসির চূড়ান্ত রায় পড়ে শোনানো হয় তাদেরকে। আগেরদিন ৩০ সেপ্টেম্বর ওই দু’জনের আপিল খারিজ করে ফাঁসি বহাল রেখে সর্বোচ্চ আদালতের প্রকাশ করা পূর্ণাঙ্গ চূড়ান্ত রায়ের ভিত্তিতে এ মৃত্যু পরোয়ানা জারি করেন বিচারিক আদালত।
গত ১৪ অক্টোবর রিভিউ আবেদন করার পর থেকে মৃত্যু পরোয়ানা স্থগিত ছিল। বুধবার রিভিউ খারিজ হওয়ায় ফের সচল হয়েছে এ পরোয়ানা। এখন রায় কার্যকরের বিষয়টি সম্পূর্ণ সরকারের এখতিয়ারাধীন বলে জানিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল।

বিবার্তা


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

নিবন্ধনের জন্য আবেদিত
Desing & Developed BY MONTAKIM