বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:০৯ অপরাহ্ন

‘বিমান বাহিনীর কার্যক্রম দেশের গণ্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বিস্তৃত-রাষ্ট্রপতি

‘বিমান বাহিনীর কার্যক্রম দেশের গণ্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বিস্তৃত-রাষ্ট্রপতি

অনলাইন বিজ্ঞাপন

আলোকিত কক্সবাজার ডেক্স॥
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, কক্সবাজারে নবনির্মিত বিমান বাহিনীর রাডারটি সমুদ্র অঞ্চল ও সমগ্র মহীসোপান এলাকার বিমান সমূহে সঠিক তথ্য প্রদান করবে। একই সঙ্গে এই রাডার চলমান বিমান সমূহকে নিয়ন্ত্রণেও সক্ষম হবে। বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর কার্যক্রমের পরিধি আজ দেশের গণ্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বিস্তৃত। স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনায় পেশাদারিত্বের পাশাপাশি জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে বিমান বাহিনীর সদস্যদের কর্তব্যনিষ্ঠা ও দক্ষতার জন্য বিশ্ব নেতৃবৃন্দের প্রশংসা পেয়েছে বিমান বাহিনী। আজ বুধবার দুপুরে কক্সবাজারের কলাতলী এলাকায় নবনির্মিত বিমান বাহিনীর কক্সবাজার এয়ার ডিফেন্স রাডার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর এক গৌরবময় ইতিহাস রয়েছে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় এ বাহিনীর সদস্যরা প্রয়োজনীয় যুদ্ধ উপকরণ ছাড়াই শুধুমাত্র একটি এ্যালুয়েট হেলিকপ্টার, একটি ডিসি-৩ ও একটি অটার বিমান নিয়ে যাত্রা শুরু করে। বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর দুঃসাহসিক বৈমানিকেরাই প্রথম বাংলার আকাশসীমায় প্রবেশ করে শত্রুর ওপর সফল আক্রমণ পরিচালনা করে, যা ছিল আমাদের বৈমানিকদের অসাধারণ দক্ষতার নিদর্শন। মহান মুক্তিযুদ্ধে বিমান বাহিনীর সদস্যদের এ সাহসিকতাপূর্ণ অবদান জাতি চিরদিন শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে।
স্বাধীনতার পরপরই জাতির পিতার ঐকান্তিক ইচ্ছা ও প্রচেষ্টাতেই বাংলাদেশি বিমান বাহিনীতে সংযোজিত তৎকালীন অত্যাধুনিক সুপারসনিক যুদ্ধ বিমান ও রাডারের কথা উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীতে সংযোজিত হয়েছে চতুর্থ প্রজন্মের গরএ-২৯ যুদ্ধবিমান। সরকার এই বাহিনীর সাংগঠনিক উন্নয়ন এবং পেশাগত নৈপুণ্য বৃদ্ধির জন্য যুদ্ধবিমান ও প্রয়োজনীয় যুদ্ধ উপকরণ সংযোজনের প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছে। আধুনিকায়নের ধারাবাহিকতায় আজকের এই ণখঈ-৬ র‌্যাডার সংযোজনের মাধ্যমে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী দেশ ও জাতির অগ্রগতি ও নিরাপত্তায় আরও সক্রিয় অবদান রাখতে সক্ষম হবে।
সরকারের সক্রিয় পৃষ্ঠপোষকতায় বর্তমানে শান্তিরক্ষা মিশনে বিমান বাহিনীর সদস্যদের অংশগ্রহণ বিগত বছরগুলোর তুলনায় অনেকাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে বলে রাষ্ট্রপতি উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, বিমান বাহিনী তাদের স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনার পাশাপাশি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দুর্যোগের সময় সরকারের আহ্বানে ত্রাণ-তৎপরতা, জাতীয় নির্বাচন কার্যক্রম, ভিআইপি/ভিভিআইপি মিশন পরিচালনা এবং বিশেষভাবে দুর্গম পার্বত্য অঞ্চলে নিয়োজিত সেনাবাহিনী ও বিজিবি সদস্যদেরকে সার্বিক সহায়তা প্রদানে অনন্য অবদানের প্রশংসা করেন।
আবদুল হামিদ বলেন, যেকোন বাহিনীর সাফল্যের জন্য পেশাগত দক্ষতা অর্জনের বিকল্প নেই। দক্ষতা একদিকে যেমন আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি করে, তেমনি স্বীয় বাহিনীর জন্য বয়ে আনে সুনাম ও মর্যাদা। তাই উন্নত ও সর্বাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে আপনাদের গড়ে উঠতে হবে একজন দক্ষ বৈমানিক, প্রকৌশলী, কন্ট্রোলার ও আদর্শ বিমান সেনা হিসেবে। এজন্য প্রয়োজন উন্নত প্রশিক্ষণ, কঠোর পরিশ্রম ও প্রতিটি ক্ষেত্রে কঠোরভাবে শৃঙ্খলা মেনে চলা। মনে রাখবেন পরিশ্রম ও সততার কোন বিকল্প নেই। সুদৃঢ় মনোবল, কঠোর পরিশ্রম, কর্তব্যনিষ্ঠা, সম্পদের সুষ্ঠ ব্যবহার ও দেশপ্রেমই আপনাদেরকে পেশাগত জীবনে উৎকর্ষের সর্বোচ্চ শিখরে পৌঁছে দিতে পারে। দেশসেবা এবং জনগণের কল্যাণ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য নিঃস্বার্থ ও একনিষ্ঠভাবে কাজ করে যাবেন। আপনাদের কাছে দেশবাসীর এটাই প্রত্যাশা।
এ সময় রাষ্ট্রপতিকে বিমান বাহিনীর পক্ষ থেকে কক্সবাজারে উদ্বোধন হওয়া রাডারটির অপারেশন কার্যক্ষমতা প্রদর্শন করা হয়। এর আগে তিনি বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিশেষ হেলিকপ্টারযোগে চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারে এসে পৌঁছলে বিমান বাহিনীর প্রধান এয়ার মার্শাল আবু এসরার ও কক্সবাজার ঘাঁটির অধিনায়ক এয়ার কমডোর মো. পারভেজ ইসলাম তাঁকে স্বাগত জানান। এ সময় একটি চৌকষ কন্টিনজেন্ট  তাকে গার্ড অব অনার প্রদান করেন। অনুষ্ঠানে সামরিক-বেসামরিক পদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

 


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

নিবন্ধনের জন্য আবেদিত
Desing & Developed BY MONTAKIM