ফাইল ছবি।

ইয়াবা ট্যাবলেট পাচারের দায়ে হাফেজ উল্লাহ (৫০) নামে একজন ইয়াবা ব্যবসায়ীকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। একই সাথে ১ লক্ষ টাকা অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো এক বছর বিনাশ্রম কারাদন্ড দেয়া হয়। একই মামলায় ওসমান গনি নামক এক রোহিঙ্গাকে ১০ বছর সশ্রম কারাদন্ড ও ৪০ হাজার টাকা অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো ৬ মাস বিনাশ্রম কারাদন্ডের রায় দিয়েছেন কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আবদুল্লাহ আল মামুন।

বুধবার (২৫ মে) জণাকীর্ণ আদালতে তিনি এ রায় ঘোষনা করেন বিচারক।

রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবী অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর এডঃ রনজিত দাশ এ তথ্য জানিয়েছেন।

মামলার এজাহার সূত্র মতে, ২০১৯ সালের ১০ অক্টোবর বিকাল ৪ টার সময় টেকনাফ পৌরসভার হিলটপ হোটেলের সামনে রাস্তায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের একটি টিম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এক অভিযান চালিয়ে টেকনাফের সেন্টমার্টিনের কোনার পাড়ার মৃত মোহাম্মদ হোছাইন ও মরিয়ম খাতুনের পুত্র হাফেজ উল্লাহ (৫০) এবং মিয়ানমারের আকিয়াব এর চামতলীর আনু মিয়া ও ফরিদা খাতুনের পুত্র ওসমান গনি (৩৫) নামে এক রোহিঙ্গাকে আটক করে। পরে আটককৃত হাফেজ উল্লাহ’র কাছ থেকে ৬ হাজার পিচ ইয়াবা ট্যাবলেট এবং রোহিঙ্গা ওসমান গনি’র কাছ থেকে ২ হাজার ৮০০ পিচ ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়।

এ ঘটনায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের টেকনাফ অস্থায়ী সার্কেলের উপ পরিদর্শক মোঃ নাছির উদ্দিন বাদী হয়ে ধৃত ইয়াবা ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে টেকনাফ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। যার টেকনাফ থানা মামলা নম্বর : ২৮/২০১৯ ইংরেজি। জিআর মামলা নম্বর : ৮৬৮/২০১৯ ইংরেজি এবং এসটি মামলা নম্বর : ৫৬০/২০২১ ইংরেজি।

মামলাটি বিচারের জন্য অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে প্রেরণ করা হলে বিজ্ঞ বিচারক ২০২১ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর বিচারের জন্য আসামীদের বিরুদ্ধে মামলায় চার্জ গঠন করেন। মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ ৬ জন সাক্ষী আদালতে উপস্থাপন করলে আসামী পক্ষে সাক্ষীদের জেরা শেষে মামলায় আলামত প্রদর্শন, রাসায়নিক পরীক্ষার প্রতিবেদন পর্যালোচনা, আসামীদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ, উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপনসহ সব বিচারিক কার্যক্রম সম্পন্ন করে আসামীদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আবদুল্লাহ আল মামুন ২০১৮ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ৩৬ (১) এর ১০ (গ) ধারায় দোষী সাব্যস্থ করে আসামী হাফেজ উল্লাহকে যাবজ্জীবন এবং একই আইনের (খ) ধারায় আসামী রোহিঙ্গা ওসমান গনিকে ১০ বছরের সাজা প্রদান করেন।

যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রাপ্ত আসামী হাফেজ উল্লাহ গ্রেপ্তার হাওয়ার ১ বছর ১ মাস পর ৫০৬৯/২০২০ নম্বর ফৌজদারী মিচ মামলা মূলে ২০২০ সালের ৪ নভেম্বর কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ আদালত থেকে জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর থেকে পলাতক রয়েছে। অপর আসামী রোহিঙ্গা ওসমান গনি রায় ঘোষণার সময় আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন।

কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ আদালতে ২০১৮ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে রায় দেওয়া এটি প্রথম মামলা।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন-অতিরিক্ত পিপি এডভোকেট রনজিত দাশ।
আসামী পক্ষে ছিলেন এডঃ তাসমিন হুদা সেতু।