শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:২৫ পূর্বাহ্ন

আপনার ওপর কোরবানি ওয়াজিব হয়েছে কি ?

আপনার ওপর কোরবানি ওয়াজিব হয়েছে কি ?

অনলাইন বিজ্ঞাপন

ইসলাম ডেস্ক :

প্রতিটি মুসলমানের জন্য কোরবানি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ইবাদাত। তাই মুসলমানেরা প্রতিবছর ঈদুল আযহার দিন থেকে শুরু করে পরের দুই দিন পর্যন্ত কোরবানি করে থাকেন। কোরবানী মূলত একটি ওয়াজিব ইবাদত। তবে আপনি জানেন কি, আপনার ওপর কোরবানি করা ওয়াজিব হয়েছে কিনা? এ প্রসঙ্গে হাদিস শরীফে বলা হয়েছে, ‘যার কুরবানীর সামর্থ্য রয়েছে কিন্তু কুরবানী করে না সে যেন আমাদের ঈদগাহে না আসে।’-মুস্তাদরাকে হাকেম, হাদীস : ৩৫১৯; আত্তারগীব ওয়াত্তারহীব ২/১৫৫

যেকোনো ইবাদতের পূর্ণতার জন্য দুটি বিষয় জরুরি। ইখলাস তথা একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে পালন করা এবং শরীয়তের নির্দেশনা মোতাবেক মাসায়েল অনুযায়ী সম্পাদন করা।

যাদের ওপর কোরবানি ওয়াজিব :

১. ঈদুল আজহার দিন প্রয়োজনীয় খরচ ব্যতীত সাড়ে সাত তোলা সোনা বা সাড়ে বাহান্ন তোলা রুপা কিংবা সমপরিমাণ সম্পদ যার কাছে থাকবে তার ওপর কোরবানি ওয়াজিব। কোরবানি ওয়াজিব হওয়ার জন্য নেসাব পরিমাণ মাল পূর্ণ এক বছর থাকা জরুরি নয়, কোরবানির শেষ দিন সূর্যাস্তের আগেও যদি কেউ নেসাব পরিমাণের মালিক হয়, তাহলে তার ওপরও কোরবানি ওয়াজিব।

২. জীবিকা নির্বাহের জন্য যে পরিমাণ জমি ও ফসলের দরকার তা থেকে অতিরিক্ত জমি ও ফসলের মূল্য অথবা যেকোনো একটির মূল্য নেসাব পরিমাণ হলেও কোরবানি ওয়াজিব।

৩. একই পরিবারের সব সদস্য পৃথক পৃথকভাবে নেসাবের মালিক হলে সবার ওপর আলাদাভাবে কোরবানি ওয়াজিব।

৪. কোনো উদ্দেশ্যে কোরবানির মানত করলে সে উদ্দেশ্য পূর্ণ হলেও কোরবানি করা ওয়াজিব।

আর নেসাব হলো স্বর্ণের ক্ষেত্রে সাড়ে সাত তোলা তথা ৮৭.৪৫ গ্রাম, রূপার ক্ষেত্রে সাড়ে ৫২ তোলা তথা ৬১২.২৫ গ্রাম।, টাকা-পয়সা ও অন্যান্য বস্তুর ক্ষেত্রে নিসাব হলো এর মূল্য সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপার মূল্যের সমপরিমাণ হওয়া। আর সোনা বা রূপা কিংবা টাকা-পয়সা এগুলোর কোনো একটি যদি পৃথকভাবে নেসাব পরিমাণ না থাকে কিন্তু প্রয়োজন অতিরিক্ত একাধিক বস্তু মিলে সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপার মূল্যের সমপরিমাণ হয়ে যায় তাহলেও তার ওপর কোরবানি করা ওয়াজিব।

মুসাফিরের (সফরে থাকলে) কোরবানি করা ওয়াজিব নয়। কোরবানি ওয়াজিব না হলেও নফল কোরবানি করলে কোরবানির সওয়াব পাওয়া যাবে। কোরবানি শুধু নিজের পক্ষ থেকে ওয়াজিব হয়, সন্তানাদি, মাতা-পিতা ও স্ত্রীর পক্ষ থেকে ওয়াজিব হয় না। তবে তাদের পক্ষ থেকে করলে তা নফল কোরবানি হবে। যার ওপর কোরবানি ওয়াজিব নয় সে কোরবানির নিয়তে পশু কিনলে সেই পশু কোরবানি করা তার ওপর ওয়াজিব হয়ে যায়। কোনো উদ্দেশ্যে কোরবানির মান্নত করলে সেই উদ্দেশ্য পূর্ণ হলে গরিব হোক বা ধনী হোক তার ওপর কোরবানি করা ওয়াজিব হয়ে যায়। যার ওপর কোরবানি ওয়াজিব সে কোরবানির দিনগুলোতে কোরবানি না করলে কোরবানির দিনগুলো চলে যাওয়ার পর একটা বকরির মূল্য সদকা করা ওয়াজিব।

যাদের ওপর কোরবানি ওয়াজিব হয়েছে, তারা কোরবানি করার পর গোস্ত আত্মীয়-স্বজন, পাড়া প্রতিবেশী, গরিব-দুখি ও মিসকিনদের মাঝে সঠিকভাবে বণ্টন করুন। জিলহজ মাসের চাঁদের তৃতীয় দিন ১০, ১১ ও ১২ পর্যন্ত কোরবানি করার বিধান আছে।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

নিবন্ধনের জন্য আবেদিত
Desing & Developed BY MONTAKIM