
উখিয়া সদরের মালভিটা গ্রামের কৃষক মোঃ ইদ্রিস ও ছৈয়দ আলমের নিজের চাষের কোন জমি নেই। তবে বছরের পর পর অন্যের জমি আগাম লাগিয়ত ও বর্গা নিয়ে চাষাবাদ করে থাকেন। ধার দেনা করে সাধ্যমত আমন চাষাবাদ করলেও দূঃশ্চিন্তা কোন শেষ নাই। তাদের ক্ষেতের প্রায় সর্বত্র রোগ বালাই আক্রমন করেছে। কৃষি অফিসের মাঠ কর্মর্তাদের পরামর্শে নানা ধরনের বালাইনাশক মাঠে ছিটিয়ে ও কোন উপকার পাচ্ছে না। এ প্রেক্ষিতে কক্সবাজার কৃষি বিভাগ উখিয়ার কৃষি অফিসে সকল কর্মকর্তা কর্মচারী ছুটি বাতিল করেছে।
সরজমিনে উখিয়ার প্রায় সর্বত্র দেখা গেছে, উদ্বিগ্ন ও হতাশ কৃষকদের আমন ধানের মাঠে ছুটা ছুটি করতে। যে যেভাবে বলছে সেই ভাবে কীটনাশক প্রয়োগ করছে কৃষকরা, যাতে দরিদ্র, প্রান্তিক, এসব অসহায় কৃষকরা তাদের বিনিয়োগকৃত সর্বস্বের কিছুটা হলেও রক্ষা করতে পারে। কিন্তু তাদের ক্ষোভ এমনিতে চাষাবাদে যা পুজি ছিল তার প্রায় আমন চাষাবাদে বিনিয়োগ করেছে। কৃষি অফিসের স্থানীয় মাঠ কর্মকর্তা, কর্মচারী, উপজেলা কৃষি অফিসে যোগাযোগ করে তাদের পরামর্শ অনুযায়ী কীটনাশক ধান ক্ষেতে প্রয়োগের পরও তেমন সুফল আসছে না বলে কৃষকদের অভিযোগ। উখিয়ার প্রায় সর্বত্র আমন মাঠের কোন কোন এলাকায় পোকা এমন ভাবে আক্রমন করেছে, যা বাড়ন্ত আমন ধানগাছের পাতা পোকায় খেয়ে সাদা করে ফেলছে। আবার কোন কোন এলাকায় পোকার আক্রমনে ধান গাছের পাতা হলুদ ও লাল বর্ণ ধারন করে দিনের পর দিন মজে গিয়ে শুকিয়ে ধানগাছ মরে যাচ্ছে। দেখলে মনে হবে যেন কেউ আগুন দিয়ে এসব ধান ক্ষেত পুড়িয়ে দিয়েছেন।
এব্যাপারে স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের অভিযোগ এসব রোগের সঠিক রোগ নির্ণয় করতে পারছে না হয়ত কৃষি অফিসের লোকজন। যদি পারত তাহলে এমন অবস্থা হতো না। তাদের অভিযোগ কৃষি সম্প্রসারন বিভাগের অফিসে গিয়ে কর্মকর্তাদের খোঁজ পাওয়া যায় না। আবার পাওয়া গেলেও তারা মাঠে না গিয়ে কৃষকের কথা শুনে নানা কীটনাশক ওষুধ লিখে দেন। যা ব্যবহার করেও সুফল মিলছে না।
উখিয়ার আমন ক্ষেতের এ অবস্থায় গতকাল বুধবার সকাল ১১ টার দিকে কৃষি বিভাগের কক্সবাজার উপ-পরিচালক আখম শাহরিয়ার ও উদ্ভিদ সংরক্ষণ বিশেষজ্ঞ খোকন চন্দ্র উখিয়া কৃষি অফিসে পরিদর্শনে আসেন। এ সময় স্থানীয় বিভিন্ন এলাকার কৃষকরা তাদের ক্ষতিগ্রস্থ আমন ধানের গাছ নিয়ে উপ-পরিচালককে দেখান এবং কৃষকরা মাঠ কর্মীদের মাঠে প্রয়োজন অনুসারে পায় না বলে অভিযোগ করেন।
বিক্ষুদ্ব কৃষকদের কথা শুনে উপ-পরিচালক উখিয়ার কৃষি কর্মকর্তা সুমন শীল সহ মাঠ কর্মীদের সর্তক করে দিয়ে বলেন, কোন ভাবে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্থ হওয়া সহ্য করা হবে না। তিনি বলেন, কৃষকদের এসব রোগবালাই প্রতিরোধে যেসব কীটনাশক প্রয়োগের পরামর্শ দেওয়া হয় সে গুলো যথাযথ যারা প্রয়োগ করেছে তারা সুফল পেয়েছে। স্থানীয় কীটনাশকের দোকানগুলো থেকে যারা ভেজাল কীটনাশক কিনে ব্যবহার করেছে তারা হয়ত সুফল পাচ্ছে না। তিনি কৃষকদের সঠিক কীটনাশক ব্যবহার করতে স্থানীয় কৃষি অফিস ও মাঠ কর্মীদের সাথে যোগাযোগ করে ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি আরো জানান উখিয়ার আমন চাষাবাদের এদুরাবস্থার কথা বিবেচনা করে এখানকার কৃষি অফিসে কর্মকর্তা কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে |
মন্তব্য করুন