শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১২:২০ অপরাহ্ন
ছবি-কালো মাইক্রোবাসে করে মেয়র মকছুদ মিয়াকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ইনসেট মকছুদ মিয়া।
কক্সবাজারের মহেশখালীতে বীর মুক্তিযোদ্ধা আমজাদ হোসেনকে (৭০) প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যাচেষ্টা মামলার প্রধান আসামী পৌরসভার মেয়র মহেশখালী পৌর আওয়ামী লীগ আহ্বায়ক তালিকাভুক্ত রাজাকার পুত্র মকছুদ মিয়াকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
মঙ্গলবার (২৬ জানুয়ারি) দুপুরে কক্সবাজার চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আলমগীর মোহাম্মদ ফারুকীর আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে বিজ্ঞ আদালত তার আবেদন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
মহেশখালী পৌরসভার মেয়র মকছুদ মিয়া তালিকাভূক্ত রাজাকার মৃত হাসেম সিকদারের ছেলে ও কক্সবাজার পৌর আওয়ামী লীগ আহ্ববায়ক।
বাদীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো: মোস্তফা তথ্যের সত্যতা নিশ্চি করেছেন।
তিনি বলেন, মহেশখালী পৌরসভার মেয়র মকছুদ মিয়া তালিকাভূক্ত রাজাকার পুত্র মৃত হাসেম সিকদারের ছেলে। তার পরিবারের অতীত ইতিহাস সব অন্ধকার। প্রথমে বীর মুক্তিযোদ্ধা আমজাদ হোসেনের চিংড়ি ঘের ডাকাতির ও দখলের চেষ্টা করেন। এ ঘটনায় আদালতে একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়। আদালত অভিযোগটি নিয়মিত মামলা হিসেবে নথিভূক্ত করতে মহেশখালী থানাকে নির্দেশ দিলে থানা মামলাটি নিয়মিত মামলা হিসেবে রুজু করেন। যা জিআর মামলা নং-৩০৫/২১। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মকছুদ মিয়া একটি সংঘবদ্ধ দুষ্কৃতিকারী গেল বছরের ২৪ নভেম্বর রাতে মহেশখালী পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের আলিশান রোডের মোড় এলাকায় মুক্তিযোদ্ধা আমজাদ হোসেনের সন্ত্রাসী হামলা চালান। হামলায় মকছুদ মিয়ার দায়ের কুপে রক্তাক্ত আহত হন তিনি। এ ঘটনায় আমজাদ হোসেন বাদী হয়ে মেয়র মকছুদ মিয়াকে প্রধান আসামী করে ২৫ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা চেষ্টা মামলা দায়ের করেন। যার নং জিআর-৩২৪/২১ইং। এ মামলায় উচ্চ আদালত থেকে ৬ সপ্তাহের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন জামিন নেন মেয়র মকছুদ। বুধবার জামিনের মেয়াদের শেষ দিন থাকায় চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন প্রার্থণা করেন তিনি। আমরা জামিনের বিরোধীতা করার পাশাপাশি আদালতে মকছুদ মিয়ার নেতৃত্বে হামলায় আহত মুক্তিযোদ্ধার স্থির চিত্রও দেখিয়েছি। বিজ্ঞ আদালত উভয় পক্ষের শুনানি শেষে জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। আদালতের এ আদেশে আমরা সন্তুষ্ট। বিজ্ঞ আদালত আইনের ধারা সমুন্বত রেখেছে।
ছবি-মকছুদ মিয়াকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
কক্সবাজার বিচারিক আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা শাহজাহান নুরী বলেন, দুটি পৃথক মামলায় আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন মহেশখালী পৌরসভার মেয়র মকছুদ মিয়া। বিজ্ঞ আদালত একটি মামলায় জামিন দিলেও হত্যা চেষ্টা মামলায় জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন তাকে।
এদিকে দুপুর আড়াইটার দিকে ভিআইপি মর্যদায় ভাড়া করা গাড়িতে করে মকছুদ মিয়াকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এ সময় ছবি তুলতে গিয়ে মকছুদ মিয়ার অনুসারীদের হাতে লাঞ্চিত হয়েছেন সংবাদকর্মীরা।
কক্সবাজার আদালতের পুলিশ পরিদর্শক চন্দন কুমার চক্রবর্তী বলেন, একটি হত্যা চেষ্টা মামলায় মেয়র মকছুদ মিয়াকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক আলমগীর মোহাম্মদ ফারুকী। এরপর থেকে তার অনুসারীরা আদালতের হাজতখানায় ভীড় করতে থাকে। এছাড়াও সড়কের ভঙ্গুর অবস্থার কথা চিন্তা করে আমরা দ্রুত তাকে কারাগারে পাঠিয়ে দিয়েছি।
মকছুদ মিয়ার ভাড়া করা গাড়িতে করে কারাগারে নিয়ে যাওয়া আইনসম্মত কিনা জানতে চাইলে কোন উত্তর দেন নি। তবে সংবাদকর্মীদের নাজেহালের বিষয়টি তিনি অবগত নন বলে জানান।
জানতে চাইলে অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ মোস্তফা জানান, কোন ব্যক্তি অভিযুক্ত হওয়ার পর সাধারণ কায়েদির মতোই কারাগারে নিয়ে যাবে পুলিশ। কিন্তু মকছুদ মিয়ার ক্ষেত্রে যেটি হয়েছে তা আমাদের জন্য অশনিসংকেত। এটি চলতে পারে না।
মন্তব্য করুন