মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ ২০২৫, ০৪:০৫ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক
মহেশখালি মাতারবাড়িতে আধুনিক শিল্প নগরী গড়ার তথা প্রধানমন্ত্রীর তত্বাবধানে পরিচালিত সরকারের নেয়া মহা পরিকল্পনা বহুমুখী ষড়যন্ত্র ও আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় আটকা পড়েছে। ইতিমধ্যে মাতারবাড়িতে ১৪১৪ একর হুকুম দখলকৃত জমিতে ৩৫ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন তাপ ভিত্তিক কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প নিয়ে চলছে নানা ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত। গেল তিন বছরেও ক্ষতিগ্রস্তরা পায়নি ক্ষতিপূরনের টাকা। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা থাকা সত্তে¡ও নানা অজুহাতে টাকা ছাড় দিচ্ছে না জেলা প্রশাসন। শিল্প মন্ত্রনালয়, বাংলাদেশ ইকোনমিক জোন অথরিটি ও জেলা প্রশাসনকে প্রধান সমন্বয় করে ক্ষতিগ্রস্থদের টাকা পৌছে দিতে বলা হলেও জমির মালিক, ক্ষতিগ্রস্থ চিংড়ী চাষী ও লবণ চাষীদের ক্ষতিপূরণের টাকা ছাড় দেয়া হচ্ছে না।
গত আগস্ট মাসে প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিব আবুল কালাম আযাদের নেতৃত্বে মন্ত্রণালয়ের সচিবদের নিয়ে মহেশখালি তথা প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রæত মাতারবাড়ি শিল্পাংঞ্চল পরিদর্শন করেছেন। তারা সরেজমিনে পরিদর্শন এলাকার সামগ্রিক সমস্যা ও সুবিধা অসুবিধা পর্যবেক্ষণ করে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে রিপোর্ট পেশ করেন। তাদের দেয়া রিপোর্টের ভিত্তিতে প্রধানমন্ত্রী দশটি নির্দেশনা দিয়ে মাতারবাড়িকে শিল্প নগরী হিসেবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে সকল বাধা অপসারন করে দ্রæত ক্ষতিগ্রস্থদের পুনর্বাসনের নির্দেশনা দেন।
তালিকাভূক্ত ১১২ জন ক্ষতিগ্রস্থ চিংড়ী ও লবণ চাষীর মধ্যে এ পর্যন্ত মাত্র ২০ জন কে ক্ষতিপূরণের টাকা দেয়া হয়। প্রতারক চক্রের অন্যতম হোতা তালিকাভূক্ত মানব পাচরকারী নারী ও শিশু পাচারকারী, ব্যাংকের চেক জালিয়াত মামলার আসামী পেশাদার মামলাবাজ বহু বির্তকিত জনৈক কাইছারুল ইসলাম ক্ষতিপূরণের টাকা ছাড় দিতে গিয়ে অনিয়ম ও দূর্নীতি হয়েছে বলে মামলা দায়ের করেন তৎকালীন জেলা প্রশাসক সহ ২৮ জনের বিরুদ্ধে। যে কারণে জমির মালিক লবণ ও চিংড়ী চাষীদের ক্ষতিপূরণের টাকা আটকে যায়। ফলে অসংখ্য ক্ষতিগ্রস্থ লোক ক্ষতিপূরনের টাকার পেছনে ছুটতে গিয়ে সর্বশান্ত হয়ে পড়েছে। অথচ প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা ছিল কোন ক্ষতিগ্রস্থ লোক যাতে কোন প্রকার হয়রানী ছাড়া টাকা উত্তোলন করতে পারে সেজন্য যা যা কর দরকার সংশ্লিষ্টদের আন্তরিকতার সাথে দায়িত্ব পালন করতে বলা হয়। সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ডের পরিপন্থী প্রভাবশালী এক কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতা সাবেক প্রতিমন্ত্রীর ঘনিষ্টজন হিসাবে খ্যাত এই প্রতারক কাইছার প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রæত উন্নয়ন কাজ বাঁধাগ্রস্ত করতে ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তের অংশ হিসাবে মাতারবাড়ি শিল্প নগরী গড়ার মহা পরিকল্পনা যাতে আলোর মুখ না দেখে সেই লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছে। তার সকল অপকর্মের মদদদাতা হচ্ছে বিএনপির এই নেতা বলে তার নিয়োজিত আইনজীবি এই প্রতিবেদককে জানিয়েছেন। মাতারবাড়ি মহেশখালি নাগরিক কল্যাণ পরিষদের সভাপতিত রইচ উদ্দিন , সাধারন সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধের অন্যতম সংগঠক অবঃ ফ্লাইট সার্জেন্ট মাহবুব কামাল জানান, এসব আইনী জটিলতা কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প সহ মাতারবাড়িকে শিল্প নগরী করার বিরুদ্ধে যে সব ষড়যন্ত্র চক্রান্ত হচ্ছে তা সম্পূর্ণ পরিকল্পিত। যেখানে গভীর সমুদ্র বন্দর, এলএনটি টার্মিনাল, জেটি ও ছারবার নির্মাতা, দেশী বিদেশী বিনিয়োগের জন্য বিশেষ অর্থনৈতিক জোন, হাইওয়ে, রেলওয়ে লিংক স্থাপন, সড়ক যোগাযোগ নির্মাণ এবং টেকসই ভেড়িবাধ নির্মাণ সহ ভৌত কাঠামো গড়ে তোলার ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর ১০টি নির্দেশনা দেয়া রয়েছে। এ ব্যাপারে পাউবো ও বিদ্যুৎ বিভাগকে প্রয়োজনীয় নিদের্শনা দেয়া হয় গত ২০ আগস্ট। তা সত্বেও কাজের গতি নেই কেন এব্যাপারে জানতে চাইলে প্রত্যাশী সংস্থার দায়িত্বশীল কর্মকর্তার বক্তব্য হচ্ছে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা ও একটি মহল বিশেষের অসহযোগিতাকে দায়ী করেন। উক্ত বিদ্যুৎ প্রকল্পের ৩৫ হাজার কোটি টাকার মধ্যে জাপানের দাতা সংস্থা জাইকা দিচ্ছে ২৮ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকা, সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে খরচ করা হবে ৭ হাজার ৩৩৮ কোটি টাকা।
মন্তব্য করুন