বুধবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৪, ০৬:৫৮ পূর্বাহ্ন

মহেশখালী হাসপাতালে বরাদ্ধকৃত খাদ্য পাচ্ছে না রোগীরা

মহেশখালী হাসপাতালে বরাদ্ধকৃত খাদ্য পাচ্ছে না রোগীরা

অনলাইন বিজ্ঞাপন

মহেশখালী  প্রতিনিধি  
মহেশখালী উপজেলার একমাত্র ৫০ শয্যা বিশিষ্ট সরকারী  হাসপাতালে নিন্মমানের খাবার দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। তা ছাড়া ভর্তি রোগীদের জন্য দেওয়া সরকারি খাবার নিয়ে একটিপক্ষ সিন্ডিকেট করে টেন্ডার ভাগিয়ে নিয়ে বিশাল বানিজ্যের অভিযোগ ও রয়েছে। চাকুরীর নিয়মের বাইরে সিন্ডিকেট করে টেন্ডার ভাগিয়ে নিয়ে রোগীদের নিন্মমানের খাবার সরবরাহ করে সরকারের লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে হাসপাতাল সংশ্লি¬ষ্ট একটি চক্র। এনিয়ে এলাকার সচেতন মহল ও রোগীদের মাঝে ক্ষুব্দ  প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীদের জন্য সরকারি নিয়ম অনুযায়ী প্রতিদিন খাবারের তালিকায় নির্দিষ্ট ওজনের মাছ, মাংস ও নাস্তা সরবরাহের কথা থাকলেও হাসপাতাল সংশ্লি¬¬ষ্ট একটি সিন্ডিকেট রোগীদের প্রাপ্য এই খাবার থেকে বঞ্চিত করে বিশাল অংকের টাকা নিজেরা আত্মসাৎ করছে। গত বছরের মার্চের দিকে মহেশখালী হাসপাতালে ডাকা টেন্ডারের মাধ্যমে হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের মাঝে দিনে ৩ বেলা খাবার বিতরণের দায়িত্ব পান কক্সবাজারের জনৈক আব্দুল কুদ্দুস নামের এক টিকাদার। টেন্ডারের নিয়ম অনুযায়ী প্রতি রোগীর জন্য প্রতিবার খাবারের সময় ৩ দিন ভাতের সাথে একশ’ গ্রাম ওজনের মাছ ও অপর ৩ দিন ১০৫ গ্রাম ওজনের মাংস এবং একদিন ডিম ও সবজি বিতরণের নিয়ম রয়েছে। টেন্ডার সিডিউল মতে সকালে প্রতিরোগীর জন্য সকালে ১শ গ্রাম পাউরুটি (৩পিচ), ১টি সিদ্ধ ডিম, ২টি বাংলা কলা, দুপুরের খাবারে ১৫০ গ্রাম চাউল, ডাল ৫০গ্রাম, সিদ্ধ ডিম ১টি, ও ডাল ৫০গ্রাম এবং রাতের খাবারে চাউল ১৫০ গ্রাম, মাংস ৫৪ গ্রাম ও ডাল ৫০ গ্রামের নিয়ম রয়েছে। বিশেষ দিনগুলোতে উন্নত খাবার পরিবেশনের ও কথা রয়েছে। তবে বাস্তব ক্ষেত্রে এসব নিয়মনীতির তোয়াক্কা করা হচ্ছেনা। বিভিন্ন সময় হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে, দিনের পর দিন পুরুষ ও মহিলা ওয়ার্ডে ভর্তি রোগীদের মাঝে স্থানীয় ভাবে বাজারের সবচেয়ে নিম্ন দামের পাঙ্গাস মাছ দিয়ে খাবার সরবরাহ করছে। হাসপাতালে ভর্তি বড় মহেশখালী এলাকার জনৈক রোগী যুবক (২৫)। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন তাকে সামান্য এক টুকরো পাঙ্গাস মাছ দিয়ে খাবর দেওয়া হয়েছে। একই কথা জানালেন পুরুষ ওয়ার্ডে ভর্তি থাকা বেশ কয়েকজন রোগী। স্থানীয়রা জানান, সম্প্রতি নতুন টি,এইচ, এফ,পি,ও আসার পর থেকে এ ধরনের অবৈধ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে সংশি¬ষ্ট সিন্ডিকেট টি । মাসের পর মাস এভাবে নিম্নমানের খাবার বিতরণ করে লাখ লাখ টাকা আত্মসাতের অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে। সিন্ডিকেট টি স্থানীয় ও শক্তিশালী হওয়ায় এনিয়ে অনেকে অসহায়ত্ব প্রকাশ করেছেন। খাবার বিতরণের টেন্ডার পাওয়া টিকাদার আব্দুল কুদ্দুস জানান, শিডিউলে যেভাবে বলা আছে তিনি সেভাবেই মালামাল সরবরাহ করছেন, তাঁর ভাষায়-কোন অনিয়ম হলে এটা হাসপাতালের লোকজনের ব্যাপার বলে জানান। সরকারী নিয়ম অনুযায়ি হাসপাতালের কোন কর্মচারী পথ্য ও মালামাল সরবরাহের নিয়ম না থাকলেও অন্য জনের নাম ভাঙ্গিয়ে তারা পথ্য ও ষ্টেশনারী সরবরাহ করছে। ফলে পুরো হাসপাতালটি তাদের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে। সকাল ১০টায় ওয়ার্ডের রোগী হিসাব করে ওয়ার্ডে খাদ্য বুঝিয়ে দেয়ার নিয়ম থাকলেও দুপুর ১২টায় খাদ্য এনে রোগী বেশী দেখিয়ে বিল করা হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা. মোহাম্মদ মাহফুজ জানান, হাসপাতাল সংশ্লি¬¬ষ্ট অপর এক মাহফুজ নাকি এই খাদ্য সরবরাহের কাজটি করেছেন । অনিয়মের ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে বর্তমানের বাজারমূল্য বৃদ্ধির কারণে এমনটি হতে পারে বলে মন্তব্য প্রকাশ করেন তিনি । তারা এই ব্যাপারটি অবশ্যই খতিয়ে দেখবেন বলে জানান। বিভিন্ন স্থান থেকে খাবার বিতরণে এমন অনিয়মের সংবাদ আসার বিষটির দু-একদিনের মধ্যে দ্রুত সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হবে।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

নিবন্ধনের জন্য আবেদিত
Desing & Developed BY MONTAKIM