সোমবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ০১:২১ পূর্বাহ্ন
আলোকিত কক্সবাজার ডেক্স
বিদেশে বসে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া গুপ্তহত্যায় নেমেছেন বলে অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গুপ্তহত্যাকারীদের যথাযোগ্য শাস্তি দেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়া রাজনৈতিকভাবে ব্যর্থ হয়ে বিদেশে গেলেন। এখন গুপ্তহত্যায় নেমেছেন। দেশে না পেরে বিদেশে বসে গুপ্তহত্যা শুরু করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গুপ্তহত্যার বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, আমি সাবধান করে দিতে চাই। এই গুপ্তহত্যা যারা করছে তাদের মুরুব্বি কারা, বড় ভাই কারা, লিংক কোথায় সব খুঁজে বের করে শাস্তি দেবই।
সোমবার (০২ নভেম্বর) আওয়ামী লীগ আয়োজিত বিশাল জনসভায় সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। জেল হত্যা দিবস উপলক্ষ্যে দিবসটির এক দিন আগে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এই জনসভার আয়োজন করে আওয়ামী লীগ।
জনসভায় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী সমর্থকদের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান জনসমুদ্রে পরিণত হয়।
এই বিশাল জনসমুদ্রে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের মানুষ শান্তিতে থাকলে একজনের ভালো লাগে না, অশান্তিতে থাকেন, গায়ে জ্বালা ধরে। তিনি হলেন খালেদা জিয়া। ৫ জানুয়ারির নির্বাচন বানচাল করতে এবং আন্দোলনের নামে তিনি মানুষ পুড়িয়ে মেরেছেন। আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মেরেছিলো পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। এরপর আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে জিয়াউর রহমানের স্ত্রী খালেদা জিয়া। তাতেও যখন পারলো না, ব্যর্থ হয়ে এখন তিনি বিদেশে বসে গুপ্তহত্যা শুরু করেছেন। যাকেই ধরা হয়, তারা শিবিরের অথবা বিএনপির লোক। যখনই দেশের মানুষ স্বস্তিতে তখনই এই হত্যাকাণ্ড, দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে এই হত্যাকাণ্ড।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আজ বাংলাদেশকে ধ্বংস করতে গুপ্তহত্যা চালানো হচ্ছে, গুপ্তহত্যা যারা করছে, তাদের কাউকে কাউকে খুঁজে বের করা হয়েছে। বাকিদেরও খুঁজে বের করা হবে। খুনিদের শান্তি দেবই, আমি শুধু বাংলাদেশের মানুষের সহযোগিতা চাই। বাংলাদেশের মানুষ রুখে দাঁড়ালে আর কেউ তাদের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে পারবে না। এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলিষ্ঠ কণ্ঠে বলেন, তারা গুপ্তহত্যা, খুন যাই করুক না কেন, বাংলাদেশের মানুষের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা ব্যাহত করতে পারবে না। বঙ্গবন্ধু এই ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষকে দাবায় রাখতে পারবা না’। আজ বঙ্গবন্ধুর ভাষায়ই বলতে চাই- বাংলাদেশের মানুষকে দাবিয়ে রাখতে পারবে না। তিনি বলেন, কোনো কোনো মহল বলছে এ দেশে আইএস আছে, সন্ত্রাসী আছে। এই সন্ত্রাস তো সৃষ্টি করেছিলেন খালেদা জিয়া।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বানচাল করতেই বিদেশিসহ দেশের মানুষকে হত্যা করা হচ্ছে। জিয়াউর রহমান যুদ্ধাপরাধীদের পুনর্বাসন করেছেন। আমার লাখো শহীদের রক্তে রাঙা পতাকা তাদের (যুদ্ধাপরাধী) হাতে দিয়েছিল জিয়াউর রহমান ও তার স্ত্রী খালেদা জিয়া। যুদ্ধাপরাধী হিসেবে আজ যারা সাজাপ্রাপ্ত তাদের কেবিনেটে বসিয়েছিলেন, পুরস্কৃত করেছিলেন জিয়া, খালেদা জিয়া। কারণ তারা স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না।
তিনি বলেন, ৭৫ এর পর জিয়াউর রহমান দেশে খুনিদের রাজত্ব কায়েম করেছিলেন। ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় এসে দেশে খুনের রাজত্ব কায়েম করে। দেশকে তারা ভিন্ন পথে নিয়ে যেতে চেয়েছিল। খালেদা জিয়া একটা সন্ত্রাসী রাষ্ট্র তৈরি করেছিলেন। জিয়াউর রহমানের পথ ধরে তার স্ত্রীও দেশে খুনের রাজত্ব কায়েম করেছিলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, আজ যারা বাংলাদেশেকে জঙ্গি রাষ্ট্র হিসেবে চিহ্নিত করতে চায় তাদের বলতে চাই এই দেশে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসের স্থান হবে না। বাংলাদেশ হবে দক্ষিণ এশিয়ার শান্তিপূর্ণ দেশ। এই দেশের উন্নয়নের পথে কেউ যদি প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে বাংলাদেশের মানুষ ক্ষমা করবে না। তাদের শাস্তি পেতে হবে। রক্তের বিনিময়ে স্বাধীনতা এসেছি। এ দেশের মানুষ কখনও মাথানত করে না। এই দেশের উন্নয়নের গতিধারা কেউ রুখতে পারবে না। বাংলাদেশকে উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলবো এটাই আজকের দিনের অঙ্গীকার। সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করুন। বাংলাদেশের মানুষের জয় হবে। খুনি, ষড়যন্ত্রকারীদের জয় হবে না।
জনসভায় আরও বক্তব্য রাখেন, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, সভাপতিমন্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, মোহাম্মদ নাসিম, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর কবির নানক, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম ও অপু উকিল প্রমুখ।
মন্তব্য করুন