বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:৪৮ পূর্বাহ্ন

পিতার তর্জনী

পিতার তর্জনী

অনলাইন বিজ্ঞাপন

পিতার তর্জনী
____________

পিতা টুঙ্গিপাড়ায় যে
ছোট্ট ঘরটিতে তোমার জন্ম হয়েছিল ,
তুমি যখন প্রথম চিৎকার করে উঠেছিলে তুমি কি তখন তোমার তর্জনী নাড়িয়ে ছিলে?
নাকি তারও অনেক অনেক পর ,

যখন তোমার শিশুকাল কাটত
এঁকে বেঁকে যাওয়া অসংখ্য ছোট ছোট নদী,খাল বিলে ফুটে থাকা অগনিত
শাপলা শালুক দেখে ,
যার উপর ব্যাঙ
আর সাপের খেলা চলতো সারা বেলা।
পিতা তুমি কি তখন থেকেই ভয়হীন
দুরন্ত সাহসী হয়ে উঠছিলে?

পিতা তুমিতো মাসি পিসির গান
কিংবা স্বপ্নের সোনার কাঠি রুপোর কাঠির
গল্প শুনে ঘুমাতে না।
বরং দিদা দিদিকে তর্জনী উঁচিয়ে শত
প্রশ্ন করতে ।
পিতা তাহলে কি তখন থেকেই
তোমার কৌতুহলী মন আর সেই তর্জনী প্রতিটা ক্ষণ শক্তি সঞ্চার করত ।
হয়ত তাই ।

শিশুকাল পেরুতে না পেরুতে
যখন তুমি মিশনারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে
পড়তে ঠিক তখন থেকেই
যেদিন তুমি বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির মুখ্যমন্ত্রী শেরে বাংলা এ-কে ফজলুল হক স্কুল পরিদর্শনে গেলে ,তোমার তর্জনী উঁচিয়ে স্কুলের ছাদ সংস্কারের
দাবি আদায়ে অনড় ছিলে।

তুমিতো সেই শিশু কাল থেকেই , কিশোর থেকেই অসীম সাহসে ভরা
তর্জনী উঁচিয়ে রূঢ় সত্য কথা
বলতে উচ্চকিত ছিলে ।
তোমাকে কেউ থামাতে পারেনি।

পিতা তখন থেকেই কি তোমার তর্জনী
হয়ে উঠছিল শোষনের‌ বিপক্ষে,
পিতা তুমি যখন ১৯৪২ সালে
এন্ট্রান্স পাস করে
কোলকাতা ইসলামিয়া কলেজে
ভর্তি হলে ঠিক তখন থেকেই
বুঝি তোমার তর্জনী হয়ে উঠে
বিপ্লবীদের প্রতিক,
শোষিত শ্রেনীর প্রতিক
দাবি আদায়ের প্রতিক।

তোমার সেই তর্জনী দেখেই,
হুসেইন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর
তোমাকে কাছে ডেকে রাজনৈতিক
দীক্ষা দেয়া শুরু করে ,
সেই থেকেই তুমি বড় হতে হতে
বাঙ্গালীদের দাবি আদায়ের
জন্য বার বার জেলে যেতে যেতে
একসময় বাঙালির প্রাণের
মানুষ হয়ে গেলে ,
শত চড়াই উৎরাই পেরিয়ে তুমি
১৯৭১ সালের সাতই মার্চ
ঢাকা রেসকোর্সের ময়দানে বজ্রকণ্ঠে তর্জনী উঁচিয়ে ঘোষণা দিয়েছিলে
এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম।
তোমার তর্জনী উঁচিয়ে ঘোষণাই
বাঙ্গালী জাতীকে স্বাধীনতা এনে দিয়েছিল।
এদেশ লাল সবুজের পতাকা পেয়েছিল।

বাবুল আখতার
উন্নয়ন কর্মকর্তা।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

নিবন্ধনের জন্য আবেদিত
Desing & Developed BY MONTAKIM