সোমবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৫, ০১:১৮ পূর্বাহ্ন
কক্সবাজার সদর উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন নিয়ে দেশের ৬৫১ তম পুলিশি থানা উদ্বোধন করা হয়েছে। ১২৬ দশমিক ৩২ বর্গ কিলোমিটার পরিধি নিয়ে এক লাখ ৪৮ হাজার ৫০ জনসংখ্যা নিয়ে নব গঠিত থানার উদ্বোধন করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এমপি। এটি কক্সবাজারের নবম থানা হিসাবে আত্মপ্রকাশ করেছে।
বুধবার (২০ জানুয়ারী) বিকেলে ঈদগাঁওর ইসলামাবাদ তেতুলতলীর ডুলাফকির বাজারস্থ পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ভবনে ফলক উন্মোচনের মাধ্যমে ‘ঈদগাঁও থানা’র যাত্রা শুরু করেন।
এসময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দেশ ও জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব। আমাদের লক্ষ্য যেকোন মূল্যে মাদকের থাবা রোধ করা। কক্সবাজারের নতুন ঈদগাঁও থানা মাদক ও সন্ত্রাস রোধে অগ্রণী ভূমিকা রেখে এতদঞ্চলের নিরাপত্তা জোরদার করবে বলে আশা রাখছি।
কক্সবাজারের স্থানীয় আসনের সাংসদ সাইমুম সরওয়ার কমল বলেন, ভৌগোলিক অবস্থানের দিক দিয়ে বৃহত্তর ঈদগাঁও বাণিজ্যিক এলাকা হিসেবে প্রাচীনকাল থেকে সমাদৃত। দিনদিন এর প্রসার বেড়েছে। ঈদগাঁওর পূর্ব পাশে পাহাড় আর পশ্চিমে উপকূলীয় লবণ মাঠ ও চিংড়ি ঘের। উত্তর-দক্ষিণে কৃষি ফসলের বিস্তৃত ভূমি। বিশাল এ এলাকার আইন শৃংখলা জেলা শহর থেকে সদর থানা কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণ দুরূহ ছিল। অনেক সময় আইনী সহায়তা নিতে স্থানীয়দেরও সদরে যাওয়া নিয়ে ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও এলাকাবাসীর দাবিকে মূল্যায়ন করে প্রশাসনিক গুরুত্ব বিবেচনায় ঈদগাঁও থানার কার্যক্রম চালু করা হয়েছে।
ঈদগাঁও নতুন থানার ওসি আবদুল হালিম জানান, কক্সবাজার সদর উপজেলার জালালাবাদ, ইসলামাবাদ, ঈদগাঁও, ইসলামপুর ও পোকখালী ইউনিয়ন নিয়ে ঈদগাঁও থানার পরিধি নির্ধারণ করা হয়েছে। যার পরিধি ১২৬ দশমিক ৩২ বর্গকিলোমিটার আর লোকসংখ্যা ১ লাখ ৪৮ হাজার।
প্রাথমিক ভাবে একজন ওসি, ৫ এসআই, ৫ এএসআই, ২৪ কনস্টেবল, একজন রাধূনী ও একজন পরিচ্ছন্ন কর্মী দিয়ে কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। বাকী জনবল ক্রমে পূর্ণ করা হবে বলে জানিয়েছেন উর্ধতন মহল।
ওসি হালিম আরে জানান, নতুন থানার আওতায় ১ টি কলেজ, ২৫ টি মাদ্রাসা, ৩৯ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১১ টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ১৬৬ টি মসজিদ, ১৪ টি মন্দির ১২ টি বাজার, ৬৬ টি শিল্প কারখানা, ৬ টি হাসপাতাল ও ক্লিনিক, ৭ টি বাণিজ্য প্রতিষ্টান ১৯ টি সাইক্লোন সেল্টার ৯ টি ব্যাংক বীমা, ১টি লঞ্চ টার্মিনাল, ২টি বাস টির্মিনালসহ আরো নানা প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
ঈদগাঁও থানা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন, কক্সবাজার-২ আসনের সাংসদ আশেক উল্লাহ রফিক, নারী সাংসদ কানিজ ফাতেমা আহমদ, আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি মো. আনোয়ার হোসেন, কউক চেয়ারম্যান লে.কর্নেল (অব.) ফোরকান আহমদ, পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান, জেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এডভোকেট ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী, সদর উপজেলার ইউএনও সুরাইয়া আক্তার সুইটিসহ জনপ্রতিনিধি এবং স্থানীয় নানা পেশার লোকজন উপস্থিত ছিলেন।
সূত্র মতে, ২০১৯ সালের ১৯ অক্টোবর প্রশাসনিক পূণর্বিন্যাস সংক্রান্ত জাতীয় কমিটির (নিকার) এক সভায় নেয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গেজেট প্রকাশ করে ঈদগাঁও থানা গঠন করা হয়। ঈদগাঁও পুলিশি থানা স্থাপনের মাধ্যমে ঈদগাঁও একটি পূর্ণাঙ্গ উপজেলা হিসাবে আত্মপ্রকাশে আরো একধাপ এগিয়ে গেলো।
নবগঠিত ঈদগাঁও থানায় রূপান্তরের মাধ্যমে কক্সবাজার জেলায় পুলিশী থানার সংখ্যা হলো ৯টি। এর মধ্যদিয়ে কক্সবাজার জেলার প্রশাসনিক ইতিহাসে ঈদগাঁওবাসীর নব দিগন্তের উম্মোচন হলো। আর দেশের ৬৫১ তম পুলিশি থানা হিসেবে নিবন্ধিত হলো ঈদগাঁও থানা।
মন্তব্য করুন